কারা নির্যাতিত নেতাকর্মীদের সংবর্ধনা দিলো মহানগর বিএনপি

প্রেসবাংলা ২৪. কম: নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির ইতিহাসে প্রথমবারের মতো সরকার বিরোধী আন্দোলন সংগ্রাম পালন করতে গিয়ে হামলা- মামলা, গ্ৰেপ্তার ও কারা নির্যাতিত মহানগর বিএনপির অঙ্গসংগঠনের দেড় শতাধিক নেতাকর্মীদেরকে সংবর্ধনা দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি।

মঙ্গলবার ( ৫ মার্চ ) বিকেলে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয়ে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খানের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু’র সঞ্চালনায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির (ঢাকা বিভাগ) সাংগঠনিক সম্পাদক এড. আবদুস সালাম আজাদ, প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির (ঢাকা বিভাগ) সহ- সাংগঠনিক সম্পাদক বেনজীর আহমেদ টিটু।

অনুষ্ঠানের শুরুতে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত, চেয়ারপার্সন গৃহবন্দী বেগম খালেদা জিয়ার আশু রোগমুক্তি ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সু- স্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু এবং বিএনপির চলমান আন্দোলনে মৃত্যুবরণকৃত আত্মার মাগফেরাত ও কারাবন্দি সকল নেতাকর্মীদের মুক্তি চেয়ে দোয়া পরিচালনা করেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান।

এসময়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আওতাধীন বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, শ্রমিকদলসহ কারা নির্যাতিত দেড় শতাধিক নেতাকর্মীদের ফুলের তোড়া ও মালা দিয়ে সংবর্ধনা দেন মহানগর বিএনপি’র নেতৃবৃন্দরা।

আর দলের জন্য আন্দোলন সংগ্রাম করতে গিয়ে কারা নির্যাতিত হয়ে সংবর্ধনা পেয়ে উৎসাহিত নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা।

এ সময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির (ঢাকা বিভাগ) সাংগঠনিক সম্পাদক এড. আবদুস সালাম আজাদ বলেন, যদি গণতান্ত্রিক ভাবে যদি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হয় তাহলে বাংলাদেশে শেখ হাসিনার কোনো কতৃত্ব থাকবে না। আমাদের সকল নেতাকর্মীদেরকে তারা কারাবন্দি করে রেখেছিল। তারপরও আমরা ১০ জন ২০ জন ৩০ জন নেতাকর্মী নিয়ে মশাল মিছিল, বিক্ষোভ মিছিল ও অবরোধের মতো কর্মসূচি পালন করেছিলাম‌। এর থেকে কিন্তু বেশি লোকজন নিয়ে আমরা মিছিল করতে পারিনি। আমরা যে করতে পারিনি! তারপরেও কি শেখ হাসিনা একটি ভালো নির্বাচনে দেশে করতে পেরেছে।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনা নির্বাচন ভালো করতে পারিনি কারণ এদেশের মানুষ বুঝেছে যে বিএনপি নেতাকর্মীদেরকে কারাবন্দি করে শেখ হাসিনা পুরো দেশকে কারারুদ্ধ করে রেখেছে। বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে হত্যা করে হত্যা করা হয়েছে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েমের জন্য শেখ হাসিনা ৭ তারিখের যে নির্বাচন দিয়েছে আমাদের নেতা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জননেতা তারেক রহমান বলেছেন আমরা এ নির্বাচনে কোনো সংঘাত বা অগ্নিসংযোগের মধ্য দিয়ে আমরা এই স্বৈরাচারী সরকারের ভোট বানচাল করে কোনো ঝামেলায় পড়তে চাই না। আমরা শুধুমাত্র দেশের জনগণকে ভোট বর্জনের আহ্বান জানিয়ে ভোট কেন্দ্রে না যাওয়ার জন্য বলেছি। সেইদিন কিন্তু ভোট কেন্দ্রে ৯৫% মানুষ যাই নাই এতে প্রমান হয়েছে শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশের মানুষ চায় না। আপনারা সবাই কারাগারে ছিলেন আর আমরা ক্ষুদ্র সংখ্যা নেতাকর্মীরা মানুষকে বুঝিয়েছি ভোট কেন্দ্রে যাবেন না। তারা দেশের গণতান্ত্রিক অধিকার, দেশের প্রতি অগাধ বিশ্বাস রেখে দেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য ভোট বর্জন করেছিলেন।

তিনি আরও বলেন, আজকে প্রমান হয়েছে একদিকে আমাদের নেতা তারেক রহমান অন্যদিকে শেখ হাসিনা। দেশের ৯৫ পার্সেন্ট লোক ভোটকেন্দ্রে যায়নি অথচ শেখ হাসিনা নির্বাচনের আগেও বলেছেন দেশের ৭০ পার্সেন্ট লোক তাদেরকে ক্ষমতায় দেখতে চায় এখানেই বিএনপির সার্থকতা এখানেই হলো তারেক রহমানের রাজনীতি। এদেশে ৯৫ পার্সেন্ট লোকজন তারেক রহমান কে ভালবাসেন। আজকে আপনারা যারা কারা নির্যাতিত হয়েছেন আপনাদেরকে সম্বর্ধনা দিতে পেরে আমরা নিজেদেরকে ধন্য মনে করছি। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন জননেতা তারা রহমানের পক্ষ থেকে আপনাদের জানাচ্ছি সংগ্রামী সালাম।

সভাপতি বক্তব্য নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জননেতা তারেক রহমান আমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন মহানগর বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের কারা নির্যাতিত সকল নেতাকর্মীদেরকে সংবর্ধনা দেয়ার জন্য। তেমনি ভাবে তিনি সারা বাংলাদেশেই নেতাকর্মীদেরকে সংবর্ধনা দেয়ার জন্য তিনি নির্দেশ দিয়েছেন। আজকে আপনাদেরকে সংবর্ধনা জানানোর জন্য কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ এখানে ছুটে এসেছেন।

উপজেলা নির্বাচন প্রসঙ্গে সাখাওয়াত বলেন, গত মার্চের ২ তারিখে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আমাদের একটি সভা হয়েছে।

সেখানে উপজেলার নির্বাচনে যাওয়ার বিষয়ে আমাদের সাথে মতামত হয়েছে। সকলের মতামতের ভিত্তিতে উপজেলা নির্বাচনেও বিএনপি না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সবাই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যারা এই নির্বাচন অংশগ্রহণ করবে এবং যারা সমর্থন করবেন তাদেরকেও দল থেকে বহিষ্কার করা হবে।আমাদেরকে এই সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। আজকের অনুষ্ঠান থেকে আমি সকল নেতাকর্মীদেরকে বলে দিতে চাই যেহেতু আমরা জাতীয় নির্বাচন অংশগ্রহণ করিনি সুতরাং উপজেলা নির্বাচনে যাওয়ার প্রশ্নে আসে না।

তিনি বলেন, আজকে যে সকল নেতাকর্মীদেরকে সংবর্ধনা দেওয়া হচ্ছে তারা হচ্ছে বীর। তাদেরকে আমি বীর হিসেবেই সম্বোধন করছি। তারা দলের জন্য এবং এই দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠা ও একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আন্দোলন করেছে। তার জন্যই তারা দীর্ঘদিন হামলা মামলা ও নির্যাতনসহ গ্রেপ্তার হয়ে বহু নির্যাতন সহ্য করেছে। এবং জেলখানার অমানুষিক নির্যাতনের পরে আজকে তারা কারামুক্ত হয়ে আমাদের মাঝে ফিরে এসেছে। আমি মানুষ মহানগর বিএনপির পক্ষ থেকে ও বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জননেতা তারেক রহমানের পক্ষ থেকে আমি আপনাদেরকে বীর হিসাবে সম্বোধন করছি।

তিনি আরও বলেন, নারায়ণগঞ্জে অনেক মামলা হয়েছে অনেকে গ্রেফতার হয়েছেন অনেকে আবার গ্রেপ্তার হননি। অনেকেই এখনো যাবেন নিতে পারেননি আমার কাছে সকল ডকুমেন্ট আছে। আমি মনে করি আমরা সবাই বীর। নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, শ্রমিকদল, মহিলাদলসহ সকল অঙ্গ সংগঠন আমরা একটি গাছ। আমরা সবাই এই গাছের শাখা প্রশাখা। আমাদের নেতা তারেক রহমান। যে যাই বলুক আমরা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জননেতা তারেক রহমানের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ আছি।আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ আছি এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। এদেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে যাব ইনশাল্লাহ।

নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু বলেন, আমিসহ নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি যুবদল ছাত্রদল ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদেরকে দীর্ঘদিন এই ফ্যাসিবাদি শেখ হাসিনার কারাগারে নির্যাতিত হওয়ার কারনে আজকে আমাদেরকে সংবর্ধনা দেয়া হচ্ছে তার রাব্বুল আলামিনের দরবারে শুকরিয়া আদায় করছি। পাশাপাশি আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি আমাদের প্রাণপ্রিয় নেতা আমার রাজনৈতিক অভিভাবক যিনি সেই ৮ হাজার মাইল দূর থেকেও আমাদেরকে সুসংগঠিত ঐক্যবদ্ধ করে রেখেছেন এবং আমাদেরকে সংবর্ধনা দেওয়ার জন্য আমার অভিভাবক তারেক রহমানের প্রতি। কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি জিয়া পরিবারের প্রতি।

তিনি আরও বলেন, আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি আমার এই দুই নেতা এড. আব্দুস সালাম আজাদ ও বেনজীর আহমেদ টিটুর প্রতি। আজকে তারা আমাদেরকে সম্বর্ধনা জানানোর জন্য ঢাকা থেকে ছুটে এসেছেন। আপনারা আমাদেরকে সম্বর্ধনা করে যা করেছেন আমরা বলে দিতে চাই আমরা যেভাবে রাজপথ থেকে গ্রেফতার হয়েছি ঠিক তেমনি ভাবে আগামী দিনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আমার নেতা তারেক রহমান নির্দেশে রাজপথে বুকের তাজা রক্ত দিয়েও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করবো এবং বিএনপির সরকার প্রতিষ্ঠা করেই আমরা ঘরে ফিরবো ইনশাল্লাহ।,

নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খানের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু’র সঞ্চালনায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির (ঢাকা বিভাগ) সাংগঠনিক সম্পাদক এড. আবদুস সালাম আজাদ, প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির (ঢাকা বিভাগ) সহ- সাংগঠনিক সম্পাদক বেনজীর আহমেদ টিটু।
এসময়ে আরও উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এড. সরকার হুমায়ূন কবির, মনির হোসেন খান, সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক হাজী নুরু উদ্দিন, আহ্বায়ক কমিটির সদস্য এড. রফিক আহমেদ, ডা. মজিবুর রহমান, মাসুদ রানা, এড. এইচএম আনোয়ার প্রধান, বরকত উল্লাহ, রাশিদা জামাল, হাবিবুর রহমান মিঠু, বন্দর উপজেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক হারুন উর রশীদ লিটন,বন্দর থানা বিএনপি’র সভাপতি শাহেনশাহ আহম্মেদ, সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক রানা, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব মমিনুর রহমান বাবু, মহানগর শ্রমিকদলের সদস্য সচিব ফারুক হোসেন, বিএনপি নেতা শেখ সেলিম আহমেদ, আলমগীর হোসেন চঞ্চল, আবুল হোসেন রিপন, মহি উদ্দিন শিশির, নাজমুল হক, নজরুল ইসলাম সরদার, জাবেদ হোসেন, আনোয়ার হোসেন, সাইফুল ইসলাম বাবু, শিপলু, মোহসীন মিয়া, পলাশ প্রধান, হযরত আলী, মো. মাসুদ, শাহ্ জালাল, আরিফ, লুৎফর রহমান মন্টু, শওকত আলী লিটন, সাইফুল ইসলাম বাবু, ইকবাল হোসেন, মুছাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি তারা মিয়া, সাধারণ সম্পাদক শাহিন আহমেদ,ধামগড় ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জাহিদ খন্দকার, মদনপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মামুন ভূঁইয়া প্রমুখ।

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com