না’গঞ্জ জায়গা ভালো এখানকার মানুষ অত্যন্ত ভালো: রিজভী

না’গঞ্জ জায়গা ভালো এখানকার মানুষ অত্যন্ত ভালো: রিজভী

স্টাফ রিপোর্টার, প্রেসবাংলা২৪.কম: নারায়ণগঞ্জ জায়গা ভালো এখানকার মানুষ অত্যন্ত ভালো মন্তব্য করে বিএনপির, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এড. রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেছেন, আমি এখানে (নারায়ণগঞ্জ) আসার সময় অনেকে আমাকে বলেছিল জায়গাটা খুব ভালো না। আমি বলেছি, নারায়ণগঞ্জ জায়গা ভালো এখানকার মানুষ অত্যন্ত ভালো। আমি যখন নারায়ণগঞ্জে আসি তখন মানুষ আমাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। আপনারা সকলেই অতিথি পরায়ণ তবে দুষ্ট চক্র সব জেলায় থাকে। এরা মানুষের পেট কেটে ইট ঢুকিয়ে হত্যা করে। মেধাবী ছাত্র তানভীর মুহাম্মদ ত্বকীকে হত্যা করা হয়েছে। ওরা মনে করেছে শাওনকে হত্যা করলে আমরা ভয় পাবো।

শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে চাষাড়া কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

এ সময় রিজভী আরও বলেন, ছোট বেলায় দেখেছি এক ধরনের ধান হয়। পানি যত বাড়ে ধান তত বাড়ে। নারায়ণগঞ্জের বিএনপি নেতাকর্মীরাও ঠিক তেমনই। আমাদের কাছে অস্ত্র নেই, আছে হাত ও কণ্ঠস্বর। আমাদের দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে শাওনকে হত্যা করা হলো। দুদিন আগে মুন্সিগঞ্জে আরেক শাওন মারা গেল একদিন মৃত্যুর সাথে লড়াই করে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গাদের জন্য কাঁদে। ছবিতে কান্নার জন্য চোখে নায়িকারা গ্লিসারিন দেয়। প্রধানমন্ত্রীও ভ্যানিটি ব্যাগে গ্লিসারিন রাখেন। শাওনের জন্য আপনার চোখের পানি পড়ে না। তাই বিএনপি এর প্রতিবাদ করছে। এটা তো জনগণের জন্য। আপনি শাওনদের গুলি করে হত্যা করেন আর জাতিসংঘে গিয়ে রোহিঙ্গাদের জন্য চোখের পানি ঢালেন। আপনারা এতটাই নির্লজ্জ। আপনারা ক্ষমতায় টিকে থাকতে বন্দুকের ব্যবহার করছেন। কিন্তু সেই বন্দুকের নল যে ঘুরে যেতে পারে তা ভাবছেন না।

নারায়ণগঞ্জের যুবদল নেতা শাওন প্রধান হত্যা, মুন্সীগঞ্জ ও ভোলা পুলিশের গুলিতে নেতাকর্মীদের হত্যা ও আহত করা এবং জ্বালানি তেল, পরিবহন ভাড়াসহ সব দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির ও লোডশেডিংয়ের প্রতিবাদে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির এ বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

তথ্যমন্ত্রীর প্রতি প্রশ্ন রেখে রিজভী বলেন, তিনি বলেছেন শাওনের চাচা আওয়ামী লীগ করে। প্রধানমন্ত্রীর আত্মীয়রা তো মুসলিম লীগ করতেন। এখন তিনিও কি মুসলিম লীগ করেন?

রিজভী বলেন,  শাওন বীর। সে মিছিলের সামনে থেকে মৃত্যুবরণ করেছে। সরকারের মন্ত্রীরা আগুন নিয়ে খেলছেন। আগুন নিয়ে খেলবেন না। নয়ত এর পরিণতি সুখকর হবে না।

এ সময় শেখ হাসিনার আয়নাঘর আছে উল্লেখ করে রিজভী আহমেদ বলেন, সেখানে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়। আয়নাঘর আজ এক ভয়ের নাম। এই আয়নাঘরের দেয়ালে এক ছেলে লিখে রেখেছে আমার মাকে বলুন তার ছেলে বেঁচে আছে। আজ গণমাধ্যম বেশি লিখতে পারে না। তারা নানা রকমের কালা কানুনের মাধ্যমে দড়ি ঝুলিয়ে রেখেছে।শেখ হাসিনা যদি বলে ডানদিক দিয়ে আসবো বুঝবেন বাম দিক দিয়ে আসবে। প্রধানমন্ত্রী বলেছে গণভবনে গেলে তিনি চা খাওয়াবেন। তার পরেরদিন ভোলায় দুজনকে হত্যা করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হচ্ছেন উল্টো কথার মা। তিনি যা বলেন তার উল্টোটাই বিশ্বাস করতে হবে। তিনি বলেছিলেন, এরশাদের অধীনে নির্বাচনে যাবেন না। এর চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে তারা নির্বাচনে গেছেন।

পুলিশ কর্মকর্তাদের প্রতি প্রশ্ন রেখে রিজভী বলেন, নারায়ণগঞ্জে চায়নিজ রাইফেল দিয়ে কে গুলি করেছে সবাই দেখেছে। সেখানে পুলিশের একজন কর্মকর্তাকে গুলি করতে দেখা গেছে। পুলিশ বলল এটা নাকি অভ্যন্তরীণ কোন্দল। তাহলে ওই কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করলেন কেন?

রিজভী বলেন, জনগণের কোনো ম্যান্ডেট নেই; কোনো ভোট নেই। তারা এত অপরাধ করেছে এগুলোর জন্য জনগণের আদালতে তাদের বিচার হবে। শাওনের হত্যার বিচার এই নারায়ণগঞ্জের মাটিতেই হবে। আমরা পৃথিবীতে দেখেছি অপরাধী অপরাধ করার পর কোনো না কোনো দিন ধরা পড়েই।

তিনি আরও বলেন, আমাদের নেত্রীকে মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে। আজ দেশনায়ক লন্ডনে। তার ওপরেও নানা মিথ্যা মামলায় সাজা দিচ্ছে। তবুও তার নেতৃত্বে আজ জাতীয়তাবাদী দল সমৃদ্ধ। আপনারা ভেবেছেন মামলা দিলে বিএনপি ঘরছাড়া হয়ে যাবে। বিএনপি এদেশের দেশপ্রেমিক মানুষের প্রতিনিধি। আপনারা এটিকে দমন করতে পারবেন না।

নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত  আহবায়ক মনিরুল ইসলাম রবির সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব অধ্যাপক মামুন মাহমুদের সঞ্চালনায় বিক্ষোভ সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ, সদস্য আজহারুল ইসলাম মান্নান, মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপু, কেন্দ্রীয় তাঁতী দলের সদস্য সচিব মজিবুর রহমান।

এছাড়াও আরও উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান, সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক আব্দুল হাই রাজু, মাহফুজুর রহমান হুমায়ুন, জাহিদ হাসান রোজেল, মাশুকুল ইসলাম রাজিব, ফতুল্লা থানা বিএনপির সদস্য সচিব শহিদুল ইসলাম টিটু, জেলা যুবদলের সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনি, জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি মন্টু মেম্বার, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আনোয়ার সাদাত সায়েম, সাধারণ সম্পাদক মাহবুব রহমার, জেলা মহিলা দলের সভানেত্রী রহিমা শরীফ মায়া প্রমুখ।

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com