সিটি কর্পোরেশনের লেক প্রকল্প: কাশীপুরে ঝুঁকিতে শতাধিক বাড়ি ও সড়ক!
ফতুল্লা প্রতিনিধি, প্রেসবাংলা২৪ডটকম: নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মণ্ডলপাড়া থেকে কাশীপুর পর্যন্ত লেক প্রকল্পের কারণে ঝুঁকিতে পড়েছে কয়েক শ’ বাড়িঘর। চলমান প্রকল্পেই শুধু কাশীপুর অংশেই কয়েক শ’ বাড়ি ঝুঁকির মুখে রয়েছে। ইতোমধ্যে কয়েকটি বাড়ির কিছু অংশও চলে গিয়েছে খাদে। কয়েকটি বাড়ির দেয়ালে ফাটল ধরেছে।
শুধু তাই নয়, এ প্রকল্পের কারণে জলাবদ্ধতাও সৃষ্টি হচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। তাদের মতে, প্রকল্পের কারণে মূল সড়কের পাশের সবগুলো শাখা ড্রেণের মুখে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ফলে ড্রেণের পানি সরতে পারছে না। গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে ড্রেণ উপচে আশপাশ এলাকায় তীব্র জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়।
সরেজমিন কাশীপুর বাংলাবাজার এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, সিটি কর্পোরেশনের লেক প্রকল্পের কারণে হাজী উজির আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশে সড়কটি খুব নাজুক অবস্থায় রয়েছে। প্রকল্পের কারণে ভেতর থেকে কাটা হয়েছে সড়কটি। উপরের অংশ কোনমতে ঝুলে রয়েছে। সড়কের উপর দিয়ে একজনের বেশি চলাচল করা মুসকিল।
এলাকার একজন প্রবীণ লোক জানান, এ সড়কটি দিয়ে স্কুলের শত শত শিক্ষার্থী চলাচল করে। এখন স্কুল বন্ধ থাকায় সড়কটির উপর কোন চাপ নেই। যদি স্কুল খুলে দেবার পরেও এই অবস্থা থাকে তবে যে কোন সময় বড় ধরণের দূর্ঘটনার শঙ্কা রয়েছে।
তিনি আরও জানান, প্রকল্পের কারণে এ এলাকার কয়েক শ’ শাখা ড্রেণের মুখে বন্ধ করে রাখা হয়েছে। এসব ড্রেণের পানি খালে এসে পড়ত। কিন্তু পানি সরতে না পারায় তা উপচে এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি করছে। বৃষ্টি হলে এ দূর্ভোগ আরও বাড়ে।
কাশীপুর ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য আইয়ুব আলী জানান, বাবুরাইলে শেষ মাথা থেকে কাশীপুর ইউনিয়নের শুরু। প্রকল্পের জন্য প্রায় অর্ধকিলোমিটার সড়কে কেটে ফেলেছে সিটি কর্পোরেশন। শুধু সড়ক নয়, পাশের ড্রেণও ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া অনেকগুলো ভবন বেশ ঝুঁকির মুখে পড়েছে।
ইউপি সদস্যের দাবি, সিটি কর্পোরেশনের এ প্রকল্পের কারণে সড়ক ও ড্রেণের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সিটি কর্পোরেশন যেন নিজ দায়িত্বে এসব করে দেয়। এছাড়াও বাড়িঘরগুলোরও যেন ক্ষতিপূরণ দেয়া উচিত সিটি কর্পোরেশনের। প্রকল্পের ধীরগতির কারণে ইউনিয়ন পরিষদ এলাকায় দিন দিন ক্ষতির পরিমাণ বাড়ছে। সিটি কর্পোরেশনের উচিত দ্রুত প্রকল্পটি শেষ করা।
এ বিষয়ে প্রকল্প কর্মকর্তা সিটি কর্পোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী আজগর হোসেন বলেন, করোনার কারণে প্রকল্পের সময় বাড়বে। এছাড়াও বর্ষা মৌসুম শুরু হয়ে গেছে। কোথাও কোথাও খাল এখনও দখলমুক্ত হয়নি। সবমিলিয়ে নির্ধারিত সময়ে প্রকল্প শেষ হবে না-এটাই স্বাভাবিক। তবে আগামী শীত মৌসুমটি আমরা পুরোপুরো কাজে লাগানোর চেষ্টা করবো।
কাশীপুর এলাকায় সড়কগুলো ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তা মেরামত করা দেয়া হবে কী-না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন- তা করে দেয়া হবে। এবং যদি কারো ভবনে ফাটল ধরে তারা আমাদের সাথে যোগাযোগ করলে তা-ও বিবেচনা করা হবে।