কিংবদন্তী ফুটবলার মোনেম মুন্নার মৃত্যুবাষির্কী আজ

 

ক্রীড়া প্রতিবেদক, প্রেসবাংলা২৪ডটকম: নারায়ণগঞ্জের বন্দরের কৃতি সন্তান সাবেক কিংবদন্তী ফুটবলার মোনেম মুন্নার ১৫তম মৃত্যুবাষির্কী আজ বুধবার। এই উপলক্ষে মোনেম মুন্না স্মৃতি সংসদ এর উদ্যোগে নেয়া হয়েছে নানা কর্মসূচি।

 

বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সকাল বন্দর বাজারে অবস্থিত মোনেম মুন্না স্মৃতি সংসদের উদ্যোগে মুন্নার সমাধিতে পুস্পস্তবক অর্পণ করা হয়েছে।

 

মোনেম মুন্না, বাংলাদেশের ফুটবল ইতিহাসে উজ্জ্বল এক তারকার নাম। ১৯৬৮ সালের ৯ জুন নারায়ণগঞ্জে তার জন্ম। ছোটবেলা থেকে ফুটবলের প্রতি ছিল তার ভীষণ ঝোঁক। খেলতেনও বেশ ভাল। এই উপমহাদেশের জনপ্রিয় ফুটবল আইকনে পরিণত হয়েছিলেন নারায়ণগঞ্জের এই কৃতি সন্তান।
১৪ বছর বয়সে মুন্না বাংলাদেশের জাতীয় দলের বিরুদ্ধে এক প্রীতি ম্যাচে নারায়ণগঞ্জের জেলা দলের হয়ে মুন্না নজরকাড়া নৈপুণ্য প্রদর্শন করেন।তার খেলা দেখে জাতীয় দলের সিনিয়র ফুটবলাররা মুগ্ধ হয়ে যান।

 

১৯৮০-৮১ সালে পাইনিয়ার ডিভিশনে গুলশান ক্লাবের হয়ে নাম লেখান, আর এর মধ্য দিয়ে প্রতিযোগিতামূল ফুটবলে মুন্নার অভিষেক ঘটে। পরের বছর যোগ দেন দ্বিতীয় বিভাগের দল শান্তিনগর। ১৯৮৩ সালে দ্বিতীয় বিভাগের দল মুক্তিযোদ্ধাতে যোগ দেন। ঐ বছর মুক্তিযোদ্ধা সংসদ দ্বিতীয় বিভাগ চ্যাম্পিয়নহয়ে প্রথম বিভাগে উঠে আসে। ১৯৮৬ সালে এক মৌসুমের জন্য যোগ দেন ব্রাদার্স ইউনিয়নে। সে সময়ে ব্রাদার্সের হয়ে তার দুরন্ত পারফরম্যান্সের জন্য নজরেপড়েন আবাহনীর কর্মকর্তাদের। ফলে ১৯৮৭ সালে যোগ দেন ঢাকার ফুটবল ক্লাবের অন্যতম এক পরাশক্তি আবাহনী ক্রীড়া চক্রে।

 

আবাহনীর হয়ে বাংলাদেশের ফুটবল লীগে দাপটের সাথে খেলতে খেলতে মুন্না নাম লেখান ভারতের অন্যতম খ্যাতিমান ফুটবল ক্লাব ইস্টবেঙ্গলে । ১৯৯১ ও১৯৯৩ এই দুই মৌসুম এই দলের হয়ে খেলেছেন। এই সময়ে দলকে লীগ শিরোপা ও ফেডারেশন কাপ জেতাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন মুন্না। সক্ষম হন ইস্টবেঙ্গল সমর্থক এবং ফুটবলপ্রিয় বাঙালিদের মন জয় করে নিতে। তাই ইস্ট বেঙ্গল ক্লাবের ‌হল অব ফেম-এ মোনেম মুন্নাকে জায়গা দিতে দুবার চিন্তা করতে হয়নি ক্লাবটিকে।

 

বাংলাদেশের ফুটবল ইতিহাসে সেরা ডিফেন্ডারদের একজন বলে গণ্য করা হয় তাকে। তার হাত ধরে ফুটবলের আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশ পেয়েছিল একাধিক সাফল্য।

 

১৯৯৯ সালে তিনি কিডনী রোগে আক্রান্ত হন। ২০০০ সালে কিডনী প্রতিস্থাপনের পর কিছুদিন বেঁচে ছিলেন। ২০০৫ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি গুরুতর অসুস্থ হয়ে ঢাকার একটি হাসপাতালে মাত্র ৩৯ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন।

 

নারায়ণগঞ্জের এই ফুটবলারের কীর্তি এই দেশবাসী ও পুরো উপমহাদেশের নিকট আজীবন উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com