গণপিটুনি দিয়ে হত্যার ঘটনা বেড়েছে, বেশিরভাগ নিরীহ

 

প্রেসবাংলা২৪ডটকম: দেশে হঠাৎ করে গণপিটুনির ঘটনা বেড়েছে। গত চার দিনেই বিভিন্ন স্থানে সাতজনকে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) হিসাব বলছে, এ বছরের প্রথম ছয় মাসে (জানুয়ারি থেকে জুন) সারা দেশে ৩৬ জন গণপিটুনিতে মারা গেছেন।

গণপিটুনির শিকার ব্যক্তিদের পরিচয় পর্যালোচনায় দেখা যাচ্ছে, প্রায় সব ক্ষেত্রেই নারী, মানসিক রোগী, প্রতিবন্ধী, বৃদ্ধাসহ নিরীহ মানুষ গণপিটুনির শিকার হচ্ছেন। এর মধ্যে রাজধানীর বাড্ডায় ‘ছেলেধরা’ সন্দেহে গত শনিবার গণপিটুনির শিকার হয়ে জীবন দিতে হলো তাসলিমা বেগমকে। তাঁর এমন মৃত্যু মানুষকে নাড়া দিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন অনেকে। এই ঘটনার রেশ না কাটতেই ওই দিন রাতে সাভারের অজ্ঞাত আরেক নারী গণপিটুনিতে নিহত হন। আর গতকাল রোববার নওগাঁর মান্দায় পুকুরে মাছ ধরা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে ছেলেধরার গুজব রটিয়ে ছয়জনকে গণপিটুনি দেওয়া হয়।

মানবাধিকার নিয়ে কাজ করেন এমন ব্যক্তিরা বলছেন, নানা কারণে মানুষ অসহিষ্ণু হয়ে পড়েছে। আবার অপরাধীদের বিচারও ঠিকঠাক হচ্ছে না। মূলত এ কারণেই এমন ঘটনা ঘটছে, যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

 

আসকের হিসাবে এ বছরের প্রথম ছয় মাসে ৩৬ জন এবং গত চার দিনে ৭ জন মিলিয়ে ৪৩ জন গণপিটুনিতে নিহত হয়েছেন।

 

সম্প্রতি গণপিটুনির ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ সদর দপ্তর গত শনিবার সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বলেছে, ‘পদ্মা সেতু নির্মাণে মানুষের মাথা লাগবে’ বলে গুজব ছড়ানোকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থানে ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনিতে মর্মান্তিকভাবে কয়েকজনের প্রাণহানি ঘটেছে। গুজব ছড়িয়ে ও গণপিটুনি দিয়ে হত্যার ঘটনা ফৌজদারি অপরাধ। দ্রুতই জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে। কাউকে ছেলেধরা সন্দেহ হলে গণপিটুনি না দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে ওই বিজ্ঞপ্তিতে।

গণপিটুনির শিকার কারা
১৮ জুলাই নেত্রকোনায় ব্যাগে করে এক শিশুর ছিন্ন মাথা নিয়ে দৌড়ে পালানোর সময় এক যুবককে (২৮) পিটিয়ে হত্যা করেছে ক্ষুব্ধ জনতা। এরপর শনিবার বিভিন্ন স্থানে পাঁচজনকে গণপিটুনি দিয়ে হত্যার খবর পাওয়া যায়। ওই দিন রাতে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনিতে অজ্ঞাত একজন (বয়স আনুমানিক ৫৫) নিহত হয়েছেন। উপজেলার রহিমপুর ইউনিয়নের দেওড়াছড়া চা–বাগান এলাকার কয়েকজন চা–শ্রমিকের ভাষ্য, গুজবের ওপর ভিত্তি করে উত্তেজিত কিছু লোক ওই ব্যক্তিকে পিটুনি দেন। অবশ্য পুলিশ নিহত ব্যক্তির পরিচয় নিশ্চিত হতে পারেনি।

শনিবার নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে গণপিটুনিতে নিহত সিরাজ নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। সিদ্ধিরগঞ্জের ওসি শাহীন পারভেজ জানান, সিরাজ বোবা ও বধির ছিলেন। তিনি ছেলেধরা নন। নারায়ণগঞ্জে আরেক ঘটনায় ফুল বিক্রেতাকে ছেলেধরা সন্দেহ করে গণপিটুনি দিয়ে আহত করে ।

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com