জিসা কান্ড: ভয়ানক নির্যাতনের বর্ণনা দিলেন খলিল মাঝি

নিজেস্ব প্রতিবেদক, প্রেসবাংলা২৪.কম: কোন কারণ না জানিয়েই ৮ আগস্ট থানায় তুলে আনা হয় নৌকার মাঝিকে। দাঁড় করানো হয় অপরিচিত দু’ যুবকের সামনে। এরপর এসআই শামীম জিজ্ঞাসা করলেন; ‘তুই ওদের চিনিস?’ উত্তরে ‘না’ বলতেই শুরু করলেন মারধর। এক পর্যায়ে হাত-পা বেঁধে উল্টো করে ঝুলিয়ে দিলেন, মিথ্যা স্বীকারোক্তি দেওয়ার জন্য বারবার মুখে গামছা বেঁধে পানি ঢেলে করতে থাকলেন নির্যাতন। স্বীকারোক্তি না পেলে ক্রসফায়ারে মেরে ফেলার হুমকিও দিয়েছেন।
জামিনে মুক্ত হয়ে সাংবাদিকদের কাছে এমনটাই বলছিলেন ‘ধর্ষণ-হত্যার দায়’ স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেওয়া নৌকার মাঝি খলিলুর রহমান।
তার দাবি, ‘টানা ৩ দিন থানার লকআপে আটকে রেখে এভাবে নিযার্তন করে শেখানো স্বীকারোক্তি দিতে বাধ্য করা হয়েছে। বর্তমানে থানায় পুলিশের নির্যাতনের কারণে শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।’
স্ত্রী-সন্তান নিয়ে খলিল বন্দর উপজেলার একরামপুর এলাকায় ধনু মিয়ার বাড়িতে ভাড়া বাসায় থাকেন। শীতলক্ষ্যা নদীর নারায়ণগঞ্জ শহরের ৫নং ঘাটে নৌকার মাঝি ছিলেন।
গত ৪ জুলাই এক কিশোরী নারায়ণগঞ্জ শহরের বাসা থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হয়। সদর থানায় মামলা করে তার পরিবার। পুলিশ খলিল, আব্দুল্লাহ্ ও রকিব নামে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে। পরে তারা আদালতে জবানবন্দি দেন। সেখানে তারা ‘অপহরণ, ধর্ষণ ও হত্যা করে লাশ শীতলক্ষ্যা নদীতে ভাসিয়ে দেওয়ার’ দায় স্বীকার করেন। ওই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন এসআই শামীম আল মামুন।
এদিকে ঘটনার ৫১ দিন পর ২৩ অগাস্ট ওই কিশোরী ফিরে আসে। আদালতের নির্দেশে সে এখন পরিবারের জিম্মায় আছে। ফিরে আসার পর কিশোরী আদালতে বলেছে, ইকবাল নামের এক যুবককে বিয়ে করে বন্দর এলাকার এক ভাড়া বাড়িতে সংসার পেতেছিল সে।
এদিকে, আলোচিত এ ঘটনায় এসআই শামীমকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়েরের সুপারিশ করেছে পুলিশের তদন্ত কমিটি।