করোনা উপসর্গ নিয়ে না’গঞ্জের গিটারিস্ট হিরুর মৃত্যু

 

নগর প্রতিনিধি, প্রেসবাংলা২৪ডটকম: নারায়ণগঞ্জের দেওভোগ এলাকায় করোনার লক্ষণ নিয়ে মারা গেছেন শহরের জনপ্রিয় গিটারিস্ট খাইরুল আলম হিরু (৩০)। তিনি গত ২৬ মার্চ থেকে জ্বর, ঠান্ডা, গলা ব্যাথা ও শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যায় ভুগছিলেন ।

 

সোমবার (৬ এপ্রিল) দিবাগত রাত দেড়টায় তিনি দেওভোগ চেয়ারম্যান বাড়ি (কৃষ্ণচূড়া মোড়) এলাকায় মারা যান।

 

হিরুর বড় ভাই আবু নাঈমের অভিযোগ, গত ২৬ মার্চ থেকে হিরু অসুস্থ ছিলেন। এর মধ্যে নারায়ণগঞ্জের মেডিনোভা, ঢাকা মেডিকেলসহ বেশ কজন চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা নিলেও তারা কেউ করোনাভাইরাসের পরীক্ষার পরামর্শ দেয়নি। নিজে থেকে আইইডিসিআর এর হটলাইনে প্রায় দুদিন চেষ্টা করেও করোনা টেস্টের ব্যবস্থা করতে পারেনি তার পরিবার। সোমবার রাতে হিরুর অবস্থা সঙ্কটাপন্ন হলে পরিবারের লোকজন তাকে এ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে যেতে চায়। তবে, তাতে বাধা দেয় এলাকাবাসী। `প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া এলাকা থেকে এ্যাম্বুলেন্স বের হতে দেয়া যাবে না` অজুহাতে প্রায় ১ ঘন্টা এ্যাম্বুলেন্স আটকে রাখে তারা। কখনো ফতুল্লা থানা পুলিশ আবার কখনো সদর থানা পুলিশের অনুমতি নিতে নিতেই এ্যাম্বুলেন্সে মৃত্যু হয় হিরুর।

 

আবু নাঈম বলেন, মৃত্যুর পর প্রায় ৯ ঘন্টা হলো, আমার ভাইয়ের লাশ বাড়ির সামনে মেঝেতে পরে আছে। কেউ দাফনের জন্য আসেনি। দাফনের জন্য স্থানীয় কাউন্সিলরকে জানানো হলে তিনিও ফোন কেটে দেন। ডিআইটি মসজিদ দাফন কমিটির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা জানিয়ে দেন, করোনাভাইরাসের লক্ষণ নিয়ে মারা যাওয়া কাউকে তারা দাফন করে না। এলাকাবাসী বা প্রশাসন নিজেরাও কিছু করছে না, আমাদেরও কিছু করতে দিচ্ছে না। বাড়িতে তিনজন নারী ও একটি শিশু ছাড়া কেউ নেই। এ অবস্থায় কী করব, কোথায় যাবো?

 

এদিকে খবর পেয়ে সকাল ১০টার দিকে ঘটনাস্থলে যান সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র আফরোজা হাসান বিভা, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মোস্তফা আলী শেখ ও ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ। তাদের উপস্থিতিতে লাশ স্বজনদের কাছে দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে পরিবার ও বাড়ির সকলকে আপাতত হোম কোয়ান্টাইনে থাকতে বলা হয়েছে। মৃতের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করে নিহতদের স্বজনদের জানিয়ে দেয়া হয়।

 

 

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com