ক্রসফায়ার না দিতে সম্রাটের আকুঁতি
প্রতিবেদক, প্রেসবাংলা২৪ডটকম: গ্রেপ্তার আতংকে থাকা ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট আশংকা করছিলেন যে তাকে ক্রসফায়ারে দেওয়া হবে। সম্রাটের ঘনিষ্ঠরা জানান, ক্রসফায়ারের আশংকা থেকেই সম্রাট আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার কাছে আত্মসমর্পণ করা থেকে নিজেকে বিরত রেখেছিলেন। এ নিয়ে তিনি দফায় দফায় দেন দরবারও করেছিলেন তিনি।
তবে রোববার ভোর ৫টার দিকে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের আলকরা ইউনিয়নের কুঞ্জশ্রীপুর গ্রাম থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তার সহযোগী আরমানকেও গ্রেপ্তার করে র্যাব।
এদিকে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের যে এলাকা থেকে সম্রাটকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে সেই কুঞ্জশ্রীপুর গ্রামটি সীমান্তের কাছাকাছি। ধারণা করা হচ্ছে, সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়ে যেতে চেয়েছিলেন তিনি।
সূত্র জানায়, গ্রেপ্তার হওয়ার পরও ক্রসফায়ার আতঙ্কে ছিলেন তিনি। সম্রাটের অনুরোধ ছিল একটাই তাকে যেন ক্রসফায়ারে দেওয়া না হয়। ক্যাসিনো বাণিজ্যসহ বিভিন্ন অপকর্ম সম্পর্কে সরকারকে সব ধরণের সহযোগিতা করারও আশ্বাস দেন তিনি।
কুঞ্জশ্রীপুর গ্রামের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, গভীর রাতে ওই এলাকায় একটি বাড়ি র্যাব ঘিরে রাখে। পরে সম্রাটকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়।
আলকরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গণমাধ্যমকে বলেছেন, ঘটনার সময় তিনি এলাকায় ছিলেন না। তবে স্থানীয়রা তাকে ফোন করে ঘটনা সম্পর্কে বলেছেন।
প্রসঙ্গত, আলোচিত যুবলীগ নেতা ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট ঢাকার জুয়াড়িদের কাছে ‘ক্যাসিনো সম্রাট’ হিসেবে পরিচিত। রাজধানীর বেশ কয়েকটি ক্লাবে অবৈধ ক্যাসিনো সম্রাটের ইশারাতেই পরিচালিত হতো। রাতের পর রাত তার শেল্টারেই রাজধানীতে জুয়ার আসর বসতো।
তবে রাজধানীতে ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু হলে লাপাত্তা হয়ে যান যুবলীগের ঢাকা দক্ষিণের এই সভাপতি। সে সময় তাকে না পেলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গ্রেপ্তার করে তার ডান হাত হিসেবে পরিচিত রাজধানীর ইয়াংমেনস ক্লাবের মালিক ও যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে।
এর আগে সম্রাটকে গ্রেপ্তার নিয়ে সৃষ্টি হয় ধোঁয়াশা। তিনি কোথায় ছিলেন তার কোনো সূত্র পাচ্ছিল না আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ক্যাসিনো ব্যবসায় জড়িত ব্যক্তিদের একের পর এক গ্রেপ্তারের সময় তাকে দুই একবার তার কাকরাইলের কার্যালয়ে দেখা গেলেও খালেদ মাহমুদের গ্রেপ্তারের পর আড়ালে চলে যান এই যুবলীগ নেতা।
এর আগে সম্রাটকে গ্রেপ্তারের গুঞ্জন ওঠার পর বিষয়টি নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছিলেন, ‘অপেক্ষা করুন, যা ঘটবে দেখবেন। আপনারা অনেক কিছু বলছেন, আমরা যেটি বলছি ‘সম্রাট’ হোক আর যেই হোক, অপরাধ করলে তাকে আমরা আইনের আওতায় আনব। ‘আমি এটি এখনও বলছি- সম্রাট বলে কথা নয়; যে কেউ আইনের আওতায় আসবে। আপনারা সময় হলেই দেখবেন।’
এদিকে ক্যাসিনোকাণ্ডে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার হয়েছেন খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া, যুবলীগ নেতা জিকে শামীম, কৃষক লীগের নেতা শফিকুল আলম ও মোহামেডান ক্লাবের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক লোকমান হোসেন ভূঁইয়া। জানা গেছে, রিমান্ডে নেওয়া হলে জিজ্ঞাসাবাদে তারা সবাই সম্রাটের নাম উল্লেখ করেছিলেন।