নদী পরিচ্ছন্নতার জন্য আলোচনা করেছি : উপদেষ্ঠা সাখাওয়াত

প্রেসবাংলা ২৪. কম: নৌ-পরিবহন ও শ্রম-কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, ভারত যদি বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করতে চায় তাহলে তারা ভালো থাকতে পারবে না, বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষ চুপ করে বসে থাকবে না।

মঙ্গলবার (২ নভেম্বর) নারায়ণগঞ্জের বন্দরে বিআইডব্লিউটিএ মাল্টিপারপাস জেটি পরিদর্শন শেষে একথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, এখানে ব্যাবসা বানিজ্যের মধ্যে মূল ছিল পাটের ব্যবসা৷ এটাকে প্রাচ্যের ড্যান্ডি বলা হত। এখন তো এখানে অনেক ধরনের ব্যবসা হচ্ছে। এখানে ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের প্রোজেক্টে নতুন একটা টার্মিনাল হচ্ছে। এখানে বাধা দেয়া হলে কোন কাজ হবে না। ওয়ার্ল্ড ব্যাংক নিজেরা কাজ করার আগে সমীক্ষা করে দেখে।

এখান থেকে কেউ উৎখাত হবে না। গরীবদের সম্পর্কে আমরা সচেতন। তাই তাদের এত হৈ চৈ করার দরকার ছিল না। এগুলো বলে লাভ নেই। উন্নয়ন হবে পাশাপাশি পরিবেশের দিকেও লক্ষ্য রাখা হবে। আমরা বুড়িগঙ্গা নদী পরিচ্ছন্নতার জন্যেও আলোচনা করেছি।

তিনি আরো বলেন, আমি যদি পারি নিজে পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের ডেকে নিয়ে আসবো৷ শীতলক্ষ্যা নদীর পানি দূষণ হচ্ছে এটা আমাদেরও চিন্তার বিষয়। এখানে পানি ময়লা, মাছ হচ্ছে না। এগুলো তো চলতে পারে না।

ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, ভারতের কিছু মিডিয়া ও পলিটিক্যাল পার্টি ভোট পাওয়ার জন্য এটা করছে। বাংলাদেশ যদি অস্থিতিশীল হয় তাহলে তারাও ভাল থাকতে পারবেন না। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের যে সম্পর্ক সেটা ভারত সরকার সমতার ভিত্তিতে এগিয়ে যাবে।

তিনি আরো বলেন,শীতলক্ষ্যা নদী সহ দেশের সকল নদী দূষণ রোধে পরিবেশ মন্ত্রনালয়কে ও নৌ মন্ত্রনালয় সব ধরনের সহযোগিতা করবে। নদী রক্ষা কমিশনের মাধ্যমে নদী দখল রোধে অচিরেই কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান কমডোর আরিফ আহমেদ মোস্তফা, পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার,বিআইডব্লিউটিএ’র পরিচালক আরিফ উদ্দিন উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

 

এ সময়ে ন্যায্য দাবি ও প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে সেড দ্রুত নির্মাণ করার দাবিতে নগরীর ৩নং মাছঘাট মৎস্য আড়ৎদার ব্যাবসায়ী সমবায় সমিতি লি: (রেজি নং-২১৫) নৌ-মন্ত্রনালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ড.এম সাখাওয়াত হোসেনের কাছে বিভিন্ন প্রস্তাবনা তুলে ধরেন।

মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) দুপুরে নগরীর ৩নং মাছঘাট এলাকায় এ দাবি জানান তারা।

এ সময় ৩নং মাছঘাট মৎস আড়ৎদার ব্যাবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি ফয়সাল আহমেদ নৌ-মন্ত্রনালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ড.এম সাখাওয়াত হোসেনের কাছে প্রস্তাবনা তুলে ধরে বলেন, আপনারা জানেন এই ঘাটে বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে একটি সেড তৈরী করে দেয়ার কথা। কিন্তুু এখনো আমাদের কোন পূর্নবাস না করে তারা আজও আমাদেরকে জানাতে পারনি কবে নাগাত আমাদের কাজটা হবে। আমাদের পুরানো দাবি গুলো আমরা আজকে মাননীয় উপদেষ্টার নিকট জানালাম। নারায়ণগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী এতো বড় একটা মৎস্য ঘাট এখানে কয়েক হাজার লোক কর্মসংস্থানের মধ্য দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। অন্তত তাদের কথা চিন্তা করে আমাদের পূর্নবাসন করা জরুরী বলে মনে করি। মাননীয় উপদেষ্টার নিকট আমাদের দাবিগুলো তুলে ধরায় তিনি আমাদের সেড তৈরীর বিষয়ে সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন।

আমাদের দাবি সমুহ গুলো হলো- আমাদের আড়ৎদারদের বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে সেড
নির্মাণ করে দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু এখনও বাস্তবায়নের কোন দৃশ্যমান কাজ বা অগ্রগতি দেখা যায়নি। তাই সকল কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষন করিতেছি যে, দ্রুত আমাদের সেডটি তৈরী করে দেওয়ার জন্য বিনয়ের সহিত অনুরোধ করিতেছি।

আমাদের এই মাছ ঘাটের আড়ৎটি দুইশত বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহী। নারায়ণগঞ্জ জেলার সবচাইতে বড় একটিই মাছের আড়ৎ। এই আড়তে বিশ হাজার লোক কর্মরত আছে এবং এর সাথে প্রায় আরও ত্রিশ হাজার লোকের কর্মসংস্থান সাথে জড়িত আছে। এই আড়তে প্রতিদিন প্রায় তিন থেকে চার কোটি টাকার মাছ বিক্রয় হয় এবং এই আড়তে সারা বাংলাদেশ থেকে বিক্রির জন্য মাছ আসে, এমনকি ইন্ডিয়া ও মায়ানমার থেকেও বিক্রির জন্য মাছ আসে। এই আড়ৎ থেকে নারায়ণগঞ্জবাসী ও আশে পাশের জেলার সকল মানুষের আমিষের চাহিদা পূরন করা হয়। বিআইডব্লিউটিএ এই মাছ ঘাট ইজারা দিয়ে প্রতি বছর ভ্যাট, ট্যাক্স সহ বিশাল অংকের টাকা সরকারি কোষাগারে জমা হয়ে থাকে। এই আড়ৎটি কোন কারনে বিলীন হয়ে গেলে পঞ্চাশ হাজার লোকের কর্মসংস্থান নষ্ট হবে ও নারায়ণগঞ্জবাসী মাছ থেকে আমিষের চাহিদা পূরণ হবে না। ইতিপূর্বে বিশ্ব ব্যাংকের কাজটি শুরু করার সময় তাহারা আমাদের আসস্থ করে প্রকল্পের কাজের
সাথে সাথে সেডটি নির্মান করে দিবে। কিন্তু সেডের কোন কাজ শুরুই করে নাই । এত বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হওয়া স্বত্বেও অতি দুঃখের সহিত জানাইতেছি যে, অদ্য রোজ পর্যন্ত আমাদের ব্যবসায়ীদের রোদে শুকাতে হয় ও বৃষ্টিতে ভিজতে হয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, ৩নং মাছঘাট মৎস আড়ৎদার ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি ফয়সাল আহাম্মেদ, সহ-সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম, সাধারন সম্পাদক মো: হোসেন সনি, সহ- সাধারন সম্পাদক হাবিবুর রহমান, ৩নং মাছঘাট মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান সুমন, ইদ্রিসুর রহমান ইদ্রিস, ৩নং মাছ ঘাট পাইকা সমিতির সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন, শুক্কুর মিয়া সহ প্রমুথ।

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com