বক্তাবলীর নিখোঁজ ব্যবসায়ীর লাশ বন্দর থেকে উদ্ধার

বন্দর প্রতিনিধি, প্রেসবাংলা২৪.কম: নিখোঁজের ৩৪ দিন পর ফতুল্লার বক্তাবলী থেকে নিখোঁজ ব্যবসায়ি জাকির মিয়া (৫২)’র অর্ধ গলিত লাশ বন্দর উপজেলার কলাগাছিয়া এলাকা থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। সে ফতুল্লার বক্তাবলী ইউনিয়নের চর বক্তাবলী গ্রামের রশিদ মিয়ার ছেলে। বৃহস্পতিবার বিকেলে নিহতের স্ত্রী লাশ সনাক্ত করেন।
এরআগে ১৬ সেপ্টেম্বর দুপুর সাড়ে ৩টায় বাসা থেকে বের হয়ে জাকির মিয়া নিখোঁজ হয়েছেন দাবী করে তার স্ত্রী মোর্শেদা বেগম (৪৬) ফতুল্লা মডেল থানায় ১৯ সেপ্টেম্বর একটি জিডি দায়ের করেন।
গত ১৬ সেপ্টেম্বর বিকেল ৩টায় তার নিজ বাড়ী ফতুল্লা থানার চরবক্তাবলী এলাকা থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হয়। অনেক স্থানে খোঁখুজি করে আমার স্বামীর কোন হদিস না পেয়ে এ ব্যাপারে আমি গত ১৯ সেপ্টেম্বর ফতুল্লা মডেল থানায় একটি নিখোঁজ জিডি এন্ট্রি করি। যার জিডি নং- ১৩৬৫। এর ধারাবাহিকতায় গত বুধবার (১৯ অক্টোবর) বিকেলে বন্দর উপজেলার কলাগাছিয়া ইউনিয়নের বাগপাড়া ব্রীজের সাসনে স্থানীয় এলাকাবাসী কচুরিপানার মধ্যে আটকাপড়া অবস্থায় অজ্ঞাত নামা লাশ দেখতে পেয়ে কলাগাছিয়া নৌ-ফাঁড়ী পুলিশকে সংবাদ দেয়। পরে সংবাদ পেয়ে কলাগাছিয়া নৌ-ফাঁড়ী উপ-পরিদর্শক মেহেদী জামানসহ সঙ্গীয় র্ফোস দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে বিকেল ৬টায় হাত পা বাঁধা অবস্থায় অজ্ঞাত নামা লাশ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করে। পরে লাশ উদ্ধারের বিষয়টি নিখোঁজের স্ত্রী জানতে পরে উল্লেখিত পুলিশের সাথে যোগাযোগ করে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে এসে তার স্বামী’র লাশ হিসেবে শনাক্ত করে।
নিহত জাকির মিয়ার মেয়ের জামাই জাকির হোসেনের দাবী তার শ্বশুর জাকির মিয়াকে হত্যা করা হয়েছে। মারধর করার অভিযোগে বক্তাবলী ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড সদস্য রশিদ মেম্বারের বিরুদ্ধে তার শ্বশুর ফতুল্লা মডেল থানায় একটি জিডি করেন। এই জিডি উঠিয়ে নেয়ার জন্য বাসা থেকে তার শ্বশুর জাকিরকে পুলিশ দিয়ে পূর্বগোপালনগর এলাকায় রশিদ মেম্বার তার অফিসে ডেকে নেয়। এরপর থেকে তার শ্বশুর নিখোঁজ। তবে নিখোঁজ জিডিতে তার শ্বাশুড়ি দাবী করেছেন বাসা থেকে বের হয়ে জাকির হোসেন নিখোঁজ রয়েছেন।
এ বিষয়ে ইউপি সদস্য রশিদ মেম্বার বলেন, জাকির মিয়াকে স্থানীয় আওলাদ নামে এক লোক কোন বিষয় নিয়ে মারধর করেছে। সেই বিষয় আমি জানি না অথচ আমার বিষয়ে অভিযোগ করিয়েছে। এজন্য জাকির মিয়াকে তার মেয়ের জামাই জাকির হোসেন আমার অফিসে নিয়ে আসেন। এসময় অভিযোগের তদন্তকারী অফিসার এএসআই জাহিদ হাসান জুয়েল, এসআই মোস্তফা, এসআই সাইফুল উপস্থিত ছিলেন। তাদের সামনেই জাকির মিয়াকে আমি জিজ্ঞেস করি ভাই আপনার সঙ্গে আমার কোন বিরোধ নেই এবং চেনা জানাও নেই। তাহলে আমার বিরুদ্ধে কেনো অভিযোগ করলেন। তখন জাকির মিয়া তার ভুল স্বীকার করে বলছেন আগামীকাল অভিযোগ উঠিয়ে নিয়ে নতুন করে অভিযোগ করবেন। এরপর জাকির মিয়া তার মেয়ের জামাই জাকির হোসেনের সঙ্গে চলে যায়। এখন আমাকে হত্যাকারী বলা হচ্ছে। এ বিষয়ে তদন্ত চাই কারা জাকির মিয়াকে হত্যা করেছে।
নিহতের স্ত্রী মোর্শেদা বেগম জানান, জামা, প্যান্ট ও পকেটে টুপি এবং গুলের ডিব্বা দেখে জাকিরের লাশ সনাক্ত করা হয়েছে। পুলিশ আমাদের কথার সত্যতা পেয়ে লাশ বুঝিয়ে দিয়েছে। বিকেলেই স্থানীয় কবরস্থানে লাশ দাফন করা হয়েছে। আমি আমার স্বামীর হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও শাস্তি চাই।
বক্তাবলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ফতুল্লা থানা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এম শওকত আলী বলেন, তদন্ত করে হত্যাকারীকে খুজে বের করার দাবী জানাই। তবে কেউ যেন অহেতুক হয়রানীর শিকার না হয় সেজন্য প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ রইল।
ফতুল্লা মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ রিজাউল হক বলেন, বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তদন্ত চলছে। আশা করি হত্যাকারীকে দ্রæত সনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।