জেলা পরিষদে পূণরায় সদস্য হওয়ার পথে জাহাঙ্গীর
স্টাফ রিপোর্টার প্রেসবাংলা২৪.কম: আর মাত্র কয়েকঘন্টা পর নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদ নির্বাচন। প্রচার প্রচারনা শেষ করেছেন প্রার্থীরা। ভোটারদের উপর ভরসা রাখছেন তারা। সাধারণ ও সংরক্ষিত সদস্য পদে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। এবার একাধিক আসনে হেভিওয়েট প্রার্থী রয়েছে। এর মধ্যে আলোচিত ২ নং ওয়ার্ড। এই আসন থেকে লড়াই করছেন প্রভাবশালী দুই সংসদ সদস্যের অনুগত দুই প্রার্থী। একজন নারায়ণগঞ্জ ৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের অনুগত ফতুল্লা থানা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক জেলা পরিষদ সদস্য জাহাঙ্গীর হোসেন ও আরেক জন জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানের অনুগত ধামগড় ইউনিয়ন পরিষদের পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী মাসুম আহমেদ।
সুত্রের খবর নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অনুসারিদের স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান। তবে এখন পর্যন্ত তিনি নির্বাচন প্রসঙ্গে পরোক্ষভাবে নিরব ভূমিকাই পালন করে যাচ্ছেন।
নির্বাচনের একদিন আগে তার চূড়ান্ত বার্তা জাহাঙ্গীর হোসেনের পক্ষেই বলে জানা গেছে। চূড়ান্ত নির্দেশনা দেয়ার পাশাপাশি সংসদ সদস্য ভোটের দিন পর্যন্ত সকলকেই মাঠে থেকে কাজ করে যেতে বলেছেন।
শামীম ওসমানের অনুসারীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের নির্বাচনের ব্যাপারে তার চূড়ান্তনির্দেশনা তার অনুগতদের জানিয়ে দিয়েছেন। সংসদ সদস্য শামীম ওসামনের অবস্থান পরিস্কার হওয়ায় অনুসারিরাও সেদিকেই ঝুঁকছেন।
সূত্র বলছে, আগামী ১৭ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের নির্বাচন। জেলা পরিষদের এবারের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় এখানে আরও আগেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে গেছেন। তবে এখনও লড়াই চলছে সদস্য পদ নিয়ে। যদিও সদস্য পদের মধ্যেও অনেকগুলো বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় নির্বাচিত হয়ে গেছে। তারপরেও এখনও জমজমাট লড়াই চলছে কয়েকটি সদস্যপদ নিয়ে।
সুত্র জানায়, নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের নির্বাচনে ২নং ওয়ার্ড থেকে সাধারণ সদস্য পদে মনোনয়ন জমা দেয়া ৬ জন লড়াইয়ে ছিলেন। তারা হলেন ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য জাহাঙ্গীর হোসেন, ধামগড়ের সাবেক চেয়ারম্যান মাছুম আহম্মেদ, ফতুল্লার আওয়ামী লীগ নেতা ও জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য মোস্তফা হোসেন চৌধুরী, আমির উল্লাহ রতন, মোবারক হোসেন, রাসেল শিকদার।
এরই মধ্যে গত ২৭ সেপ্টেম্বর কুতুবপুরে একজন মেম্বারের বাড়িতে বৈঠকে বসেন আওয়ামী লীগ নেতারা। উপস্থিত ছিলেন কাশিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম সাইফুল্লাহ বাদল, বক্তাবলীর চেয়ারম্যান ও ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম শওকত আলী, কুতুবপুর ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুল আলম সেন্টু, ফতুল্লা ইউপি চেয়ারম্যান খন্দকার লুৎফর রহমান স্বপন, এনায়েতনগর ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আসাদুজ্জামান, মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক শাহ নিজাম প্রমুখ।
বৈঠকের বিষয়ে গণমাধ্যমে শওকত আলী জানান, আমাদের এমপি সাহেব বলছেন একজন প্রার্থী হলে ভালো হয়। পরে সকলে বসে জাহাঙ্গীর আলমকে সমর্থন দিয়েছেন। এদিন বৈঠকে ফতুল্লার আওয়ামী লীগ নেতা ও জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য মোস্তফা হোসেন চৌধুরী, আমির উল্লাহ রতন, মোবারক হোসেন নিজেদের ভোট থেকে সরিয়ে নিয়ে জাহাঙ্গীরের পক্ষে কাজ করার অঙ্গীকার করেছেন।
কিন্তু এখনও জাহাঙ্গীরের বিপরীতে নির্বাচনী মাঠে রয়ে গেছেন মাসুম আহমেদ। যার প্রতি সমর্থন রয়েছে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানের।
ফলে সামগ্রিক পরিস্থিতিতে জেলা পরিষদ নির্বাচনে ২নং ওয়ার্ডে প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা বক্তাবলীর জাহাঙ্গীর হোসেন কার্যত ভোটের মাঠে শক্তিশালী অবস্থানে আছেনবলে মনে করছেন শামীম ওসমানের অনুসারীরা। তাদের মতে, ভোটের ময়দানে এমপি সেলিম ওসমানের সমর্থন পাওয়া সাবেক চেয়ারম্যান মাসুম আহমেদের বিরুদ্ধে রয়েছে ব্যাপক অভিযোগ। এছাড়া জাতীয় পার্টির প্রার্থী নির্বাচিক হলে আওয়াশীলীগের ইমেজ ক্ষুন্ন হবে। তাই জেলা পরিষদ নির্বাচনেও মাসুম আহমেদের ইউনিয়ন পরিষদের ভাগ্য বরন করতে হবে মনে করছেন আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা।
১৭ অক্টোবর সোমবার নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদ নির্বাচন- ২০২২ এর ভোট গ্রহণ ইভিএমে অনুষ্ঠিত হবে। ভোট চলবে সকাল ৯ টা হতে বেলা ২ টা পর্যন্ত ।