বাঙ্গালী কখনো ক্ষমা করবেনা ইতিহাসের জঘন্যতম নরঘাতকদের : সাজনু
নিজস্ব প্রতিবেদক, প্রেসবাংলা২৪.কম: ১৫ই আগষ্ট জাতীয় শোক দিবসে বঙ্গবন্ধুকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবলীগের সভাপতি শাহাদাত হোসেন ভূঁইয়া সাজনু বলেন, মসজিদ থেকে আজানের ধ্বনি ভেসে আসছে। প্রত্যেক মুসলমানকে আহ্বান জানাচ্ছে ….. সে আহ্বান উপেক্ষা করে ঘাতকেরা এগিয়ে এল ইতিহাসের জঘন্যতম হত্যাকান্ড ঘটানোর জন্য। হিংস্র উঠল ওদের কালো হাতের অস্ত্র। ঘাতকের দল হত্যা করল স্বাধীনতার প্রাণ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। এই নরপিশাচেরা হত্যা করল আমার মাতা বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবকে। হত্যা করল মুক্তিযোদ্ধা, ছাত্রনেতা শেখ কামালকে, শেখ জামালকে, তাদের নবপরিণীতা বধূ সুলতানা কামালকে ও রোজী জামালকে। তাদের হাতের মেহেদির রং বুকের তাজা রক্তে মিশে একাকার হয়ে গেল। খুনিরা হত্যা করল বঙ্গবন্ধুর একমাত্র ভ্রাতা শেখ আবু নাসেরকে। সামরিক বাহিনীর ব্রিগেডিয়ার কর্নেল জামিলকে, যিনি নিরাপত্তাদানের জন্য ছুটে এসেছিলেন। হত্যা করল কর্তব্যরত পুলিশ অফিসার ও কর্মকর্তাদের। আর সর্বশেষে হত্যা করল শেখ রাসেলকে, যার বয়স ছিল মাত্র ১০ বছর। বারবার রাসেল কাঁদছিল ‘মার কাছে যাব’ বলে। তাকে বাবা ও ভাইদের লাশ কাটিয়ে মায়ের লাশের পাশে এনে হত্যা করল ওরা। ওদের ভাষায়, রাসেলকে মার্সি মার্ডার (দয়া করে হত্যা) করা হয়েছে। বাংলার ইতিহাসে একটি জঘন্যতম হত্যাকান্ড ঘঠিত হয় এই ১৫ই আগষ্ট। বাঙ্গালী কখনো ক্ষমা করবেনা ইতিহাসের জঘন্যতম নরঘাতকদের।
তিনি আরো বলেন, বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবি নিয়ে গড়ে ওঠা আন্দোলনে অংশ নেয়ার মাধ্যমেই শেখ মুজিবের রাজনৈতিক তৎপরতার সূচনা হয়। ১৯৪৮ থেকে ১৯৫২-এর মহান ভাষা আন্দোলন, ১৯৫৮-এর সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন, ১৯৬২-এর শিক্ষা আন্দোলন ও ১৯৬৬-এর ঐতিহাসিক ছয় দফাভিত্তিক আন্দোলনের মাধ্যমে তিনি হয়ে ওঠেন বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা। ইতিহাস বার বার প্রমাণ করেছে ‘মুজিব বাংলার, বাংলা মুজিবের।’ বাংলার বিখ্যাত কবি অন্নদাশঙ্কর রায় যথার্থই বলেছেন, ‘যতদিন রবে পদ্মা মেঘনা গৌরি যমুনা বহমান, ততদিন রবে কীর্তি তোমার শেখ মুজিবুর রহমান।’
সাজনু বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের মূল নেতা বা নায়ক হচ্ছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বাঙালি জাতির শত বছরের ইতিহাসের গৌরবজনক ঘটনা হচ্ছে ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধ। ৩০ লাখ মানুষের রক্ত, দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমহানি এবং সীমাহীন আত্মত্যাগের বিনিময়ে একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর এই স্বাধীনতার বিজয় অর্জিত হয়। ২৩ বছরের আন্দোলন সংগ্রাম এবং একাত্তরের নয় মাস সশস্ত্র যুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করেই বিজয় ছিনিয়ে এনেছে বীর বাঙালি। বাংলার অনেক নেতাই হয়তো বাঙালি জাতির শৃঙ্খল মোচনের স্বপ্ন দেখেছেন। কিন্তু সেই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপান্তরিত করেছেন বাঙালির হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ সন্তান, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, ইতিহাসের মহানায়ক, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বাঙালি জাতি যতদিন বেঁচে থাকবে ততদিন বঙ্গবন্ধুর নাম শ্রদ্ধাভরে উচ্চারিত হবে।
শোক দিবসে নারায়নগঞ্জ মহানগর যুবলীগের আয়োজনে শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে কাঙ্গালীভোজ, কোরআন তেলোয়াত ও দোয়ার মাধ্যমে কর্মসূচি পালন করা হয়।