ডিএনডিবাসীর পানিতে বাস, মুক্ত হবে কি এই কারাবাস!

আব্দুল্লাহ আল ইমরান, প্রেসবাংলা: আর কতদিন গেলে মুক্তি মিলবে ডিএনডিবাসীর, জানা নেই এই পানিবন্দি মানুষের। দেশ যেখানে এগিয়ে যাচ্ছে দুর্বার গতিতে সেখানে ডিএনডি বাসী আছে পানিতে তলিয়ে। এই ভোগান্তির শেষ কবে হবে ভুক্তভোগীরা জানতে চায় স্থানীয় সংসদ সদস্যের কাছে। বার বার প্রতিশ্রুতি দিয়ে সরকার এর কোন সমাধান করতে পারেনি। বর্তমান সরকারের যেখানে বড় বড় সাফল্য সেখানে ফতুল্লার ডিএনডি বাধের জলাবদ্ধাতা নিরসনে সরকার ব্যার্থ।
বিগত কয়েকদিনের ভারি বৃষ্টির কারণে জলাবদ্ধতা এখন জটিল আকার ধারণ করেছে। এই অসহনীয় দুর্ভোগ ও ভোগান্তি থেকে রক্ষা না পেয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধির উপর এলাকাবাসী মনে দেখা দিয়েছে চরম ক্ষোভ। ডিএনডির জলাবদ্ধতার স্থায়ী নিরসনে প্রায় ১৩০০ কোটি টাকার মেগা প্রকল্প চলমান রয়েছে। এ প্রকল্প আদৈ কি সমাধান হবে বা হলেও কতদিন? এমন প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন বাসিন্দারা। অনেকের মতে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের নজরদারির অভাবেই ভোগান্তিতে পড়েছেন ডিএনডিবাসী।
স্থানীয়রা জানান, আমরা এখন পানির মধ্যে কারাবাসে আছি ! মানুষ অপরাধ করলে কারাগারে বন্দি থাকে, কিন্তু আমাদের কি অপরাধ? কি কারনে আমাদের প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে এভাবে কারাগারে থাকতে হয়! জানিনা সরকার আমাদের এই কারাবাস থেকে কবে মুক্তি দেবে! আমরা মুক্তি চাই আমাদের এমপি মহোদয়ের কাছে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে।
ডিএনডি এলাকার বাড়িঘর ও রাস্তাাঘাট ডুবে থাকায় পয়নিস্কাশনের পানি মিশে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে। যে কারনে ঠান্ডা, জ¦র, ডায়রিয়া, চর্মরোগ, আমাশয়সহ পানিবাহিত রোগ ছড়িয়ে পড়ছে। শিমরাইলে অবস্থিত পাম্প হাউজের পুরোনো ৪টি পাম্পের মধ্যে ৩টি পাম্প দিয়ে পানি নিষ্কাশন করা হচ্ছে। এর একটি পাম্প দীর্ঘদিন ধরে নষ্ট থাকলে মেরামতের কোন উদ্যোগ নেই।
ডিএনডি প্রকল্পের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ডিএনডি প্রকল্পের আওতাধীন ডিএনডির নিজস্ব জায়গায় অবৈধভাবে গড়ে ওঠা ৩০/৪০টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে যা উচ্ছেদ করার ক্ষেত্রে ব্যাপক আইনি জটিলতা রয়েছে। পাশাপাশি তিতাস, ডিপিডিসিসহ বিভিন্ন সরকারি সংস্থার ভূগর্ভস্থ পাইপলাইনগুলোও সরানো হয়নি, এতে আমরা অনেক স্থানেই অবকাঠামোর কাজ করতে পারছি না।
তিনি আরো বলেন, পানি নিষ্কাশনের সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা হলো নিষ্কাশনের শাখা খালগুলো সংস্কার করার পর আবার ময়লা আবর্জনা ফেলে ভরে ফেলা। অনেক স্থানে আমরা খাল পুনরুদ্ধার করেছি, নতুন খাল খনন করেছি। কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই সেগুলো আবার ময়লা দিয়ে স্থানীয় লোকজন ভরে ফেলেন।
অন্য একটি সূত্র থেকে যানা যায়, অর্থ সংকটের কারনে ধীরে এগোচ্ছে ডিএনডির এই মেগা প্রকল্পটি। ২০২০-২০২১ অর্থবছরে এ প্রকল্প বাবদ ৩৫০ কোটি ৬১ লাখ টাকা ব্যয়ের কার্যক্রম পরিকল্পনা করা হলেও ৬০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এতে প্রকল্পের কর্মপরিকল্পনা থাকলেও অর্থ সংকটে অধিকাংশ চলমান কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে।
এলাকাবাসীরা জানান, শামীম ওসমান চাইলেই এই সমস্যা সমাধান করতে পারেন, কারণ তিনি একজন সরকার দলীয় হেভিওয়েট সংসদ সদস্য। ইতিমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও এই এলাকার জলাবদ্ধতার সমাধান চেয়েছেন স্থানীয় সাংসদ শামীম ওসমানের কাছে।
শামীম ওসমান তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েও নারায়ণগঞ্জের সবচেয়ে জনদূর্ভোগ (ডিএনডি বাঁধ) এলাকার সমস্যা সমাধানে ব্যার্থ হয়েছেন। তারপরও এলাকাবাসী মনে করেন তার হাত ধরেই এই সমস্যার সমাধান হবে, মুক্ত হবে এই কারাবাস।