সিদ্ধিরগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধাসহ একাধিক ব্যক্তিকে শারীরিক ভাবে লাঞ্চিত, থানায় অভিযোগ

সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি, প্রেসবাংলা২৪ডটকম: নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের ভূমিপল্লী আবাসিক এলাকায় মুক্তিযোদ্ধাসহ একাধিকব্যক্তির উপর হামলার পর উত্তেজনা বিরাজ করছে। এলাকায় প্রভাব বিস্তারের জন্য একাধিক মামলার আসামীসহ কয়েকজন ব্যক্তি পরিকল্পিতভাবে এমন হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে বলে জানায় ভুক্তভোগীরা। উপরন্তু নিজেদের প্রভাব আরো দীর্ঘায়িত করতে তারাই গত কয়েকদিন যাবত বহিরাগত ক্যাডার এনে মহাড়া দেয়ার পাশাপাশি সাধারণ বাসিন্দাদের হুমকি, ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। এ কারণে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে পুরো ভুমি পল্লী এলাকায়।
এ ঘটনায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একাধিক জিডি ও অভিযোগ দেয়া হয়েছে।
এলাকাবাসী জানায়, নাসিক ৪ নং ওয়ার্ডের সিদ্ধিরগঞ্জের চিটাগাংরোডের দক্ষিণ পাশে ভূমি পল্লী এলাকার জিয়াউল হক, এডভোকেট মফিজুল, জাহাঙ্গীর, নূর নবী, দুলাল মিজিসহ তাদের হাতেগোনা কয়েকজন ব্যক্তি ঐ এলাকায় প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা চালিয়ে আসছিলো। সেই থেকে গত কয়েকদিন যাবত ভূমিপল্লী এলাকার একাধিক হামলার ঘটনা ঘটায়। ঐ এলাকায় বিভিন্ন স্বার্থ সংশ্লিষ্ট কারণে ও প্রভাব বিস্তারের জন্য চক্রটি নানান ইস্যু তৈরী করে বহিরাগতদের এনে এলাকায় আতঙ্ক ছড়াচ্ছে।
আব্দুল মাবুদ (মাহমুদ) নামে এক ব্যক্তি অভিযোগ করেন, সম্প্রতি আমি মসজিদের জরুরী একটি মিটিংএ উপস্থিত হলে জিয়াউল হক এবং তার লোকজন মসজিদের ভিতরেই আমাকে মারধর করে এবং হুমকি ধামকি দিতে থাকে। এসময় আরিফ আহমেদ সিকদার নামে আরেকজন বাধা দিলে তার উপরও হামলা করে জিয়াগং। জুলাইয়ের ৫ তারিখের এ ঘটনায় আব্দুল মাবুদ (মাহমুদ) ও আরিফ আহমেদ সিকদার বাদী হয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় দুটি লিখিত অভিযোগ করেন।
এ বিষয়ে ভূমিপল্লী মসজিদ কমিটির সভাপতি, ইসলামী ফাউন্ডেশনের সাবেক পরিচালক ডা. খিজির হায়াৎ খাঁন বলেন, জিয়াউল হক জিয়া মসজিদ কমিটির সদস্য ছিলেন। শৃঙ্খলা পরিপন্থী কাজের জন্য মুসল্লীদের সমন্বিত চাপে তাকে কমিটি থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়। এজন্যই জিয়া, মফিজ গং মসজিদ কমিটি এবং আমাদের খতিবের বিরুদ্ধে অপপ্রচার এবং মিথ্যাচার করে বেড়াচ্ছে।
একই এলাকার প্রকৌশলী হাজী মোঃ জসিম উদ্দিন নামে এক মুক্তিযোদ্ধা জানান, কিছুদিন আগে করোনা উপলক্ষে দুস্থদের মাঝে ত্রাণ দেওয়ার সময় তারা প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করে। এসময় তারা আমাকে জনসম্মুখে অহেতুক শারীরিক ভাবে লাঞ্ছিত ও অপদস্থ করে। এক পর্যায়ে তারা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে অশালীন গালিগালাজও করে তারা। আমার উপর হামলার কারণে আমি থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। শুনেছি তারা বিএনপির রাজনীতির সাথে সম্প্রৃক্ত।
এলাকাবাসী জানায়, এই করোনা কালেও জাহাঙ্গীর আলমের বাড়িতে দিনে এবং কখনো কখনো মধ্যরাত পর্যন্ত বহিরাগতদের মিটিং হয়। এতে আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। ভূমিপল্লীর একাধিক বাসিন্দার অভিযোগ, প্রভাব খাটিয়ে মসজিদের জন্য পূর্ব নির্ধারিত প্লটে মফিজ উকিল যে বহুতল বাড়ি নির্মাণ করছেন তার কোন রাজউক কর্তৃক অনুমোদন নেই। এমনকি তার বাড়িতে সংযোগ দেওয়া গ্যাস সংযোগটি অবৈধ। এছাড়া নূর নবী প্রজেক্টের একজন সাধারণ কর্মচারী (সুপারভাইজার)। কিন্তু তিনি অল্প সময়ে অনেক অর্থ বিত্তের মালিক বনে গেছেন।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কামরুল ফারুক জানান, তাদের বিরুদ্ধে একজন মুক্তিযোদ্ধাসহ অনেকেই লিখিত অভিযোগ করেছেন। এরমধ্যে অভিযুক্ত জিয়াউল হক ভূইয়া ফেনীর ছাগলনাইয়া থানার তিনটি মামলার এজহারভুক্ত আসামী বলেও আমি জানতে পেরেছি। তদন্ত সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মুক্তিযোদ্ধাসহ হামলার ঘটনা স্বীকার করে এডভোকেট মফিজুল ইসলাম বলেন, হামলাকারীরা আমার অনুসারী না। এ পৃথিবীতে কেউই কারো লোক না। তার ভবনের রাজউকের প্লান ও গ্যাস সংযোগ বৈধ বলে তিনি উল্লেখ করেন।