‘বুড়িগঙ্গায় লঞ্চ ডুবির ঘটনায় বিআইডব্লিউটিএ’র চরম অব্যবস্থাপনাই দায়ী’

নগর প্রতিনিধি, প্রেসবাংলা২৪ডটকম: নারায়ণগঞ্জ লঞ্চ ঘাটে ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন, নারায়ণগঞ্জ মহানগর এর উদ্যোগে- বিআইডব্লিউটিএ এর অব্যবস্থাপনায় লঞ্চ ডুবিতে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং নিহতদের পরিবারকে যথাযথ ক্ষতি পূরণের দাবীতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
রোজ বুধবার (১জুলাই) বেলা ১১: ৩০ টায় নারায়ণগঞ্জ লঞ্চঘাটে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ মহানগরের সভাপতি এম. শফিকুল ইসলাম এর সভাপতিত্বে ও মুহাম্মাদ মেহেদী হাসান এর সঞ্চালনায় মানববন্ধনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- ইশা ছাত্র আন্দোলন কেন্দ্রীয় কমিটির মজলিশে শূরার অন্যতম সদস্য মুহাম্মাদ ইমদাদুল হক ও প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, নারায়ণগঞ্জ মহানগরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মুহাম্মাদ নূর হুসাইন।
প্রধান অতিথি বলেন, করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে দেশে যখন শোকাবহ অবস্থা বিরাজমান, এমতাবস্থায় প্রায় অর্ধশতাধিক পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এলো বুড়িগঙ্গার লঞ্চ ডুবির ঘটনায়। প্রায়শই দেখা যায় নদীতে একাধিক লঞ্চ প্রতিযোগিতামূলক ভাবে পাল্লা দিয়ে চলে। এসব ঘটনায় বিআইডাব্লিউটিএ নিয়মিত সুষ্ঠু তদারকি না থাকায় অসতর্ক হয়ে এমন মর্মান্তিক দুর্ঘটনার জন্ম দিল।
তিনি আরও বলেন- গত ১৪ বছরে নৌ চলাচলে যে অনিরাপত্তা দেখা গিয়েছে তা ভাষায় ব্যক্ত করার মতো না। আমরা দেখেছি গত ১৪ বছরে ৫৩৫ টি নৌ দুর্ঘটনা হয়েছে। যাতে ৬ হাজার ৫ শত জনের মতো মানুষ মারা গিয়াছে। দুর্ঘটনা ঘটার পর ৬৮৩ টি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে, তবে কোন কমিটিই জাতিকে আলোর মুখ দেখাতে পারেনি। প্রতিবারই দুর্ঘটনার পর তথাকথিত তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। যার অস্তিত্ব আর খুঁজে পাওয়া যায় না। আমরা এ দুর্ঘটনার জন্য বিআইডব্লিউটিএ এর চরম অব্যবস্থাপনাকেই দায়ী মনে করছি এবং বিআইডব্লিউটিএ এর চেয়ারম্যানের পদত্যাগ দাবী করছি। এবং সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত কারণ উদঘাটন করে দোষীদের বিচারের আওতায় আনার দাবী জানাচ্ছি এবং যাদের পরিবারের সদস্য হারিয়েছে তাদেরকে পর্যাপ্ত পরিমাণ ক্ষতি পূরণ দেয়ার দাবী জানাচ্ছি।
সভাপতি তার বক্তেব্যে বলেন- মুন্সিগঞ্জ- ঢাকা রুটে চলাচল করা মর্নি বার্ড-২ লঞ্চটি সকাল ৮ টায় প্রায় ৭০ জনের মত যাত্রী নিয়ে মুন্সিগঞ্জ থেকে ছেড়ে আসে। সকাল ৯ টার দিকে ঢাকার শ্যামবাজার এলাকায় চাঁদপুর রুটের ময়ূর-২ নামক বিশাল দ্বৈত্যাকার লঞ্চটি ছোট মর্নি বার্ড-২ লঞ্চটিকে পিছন থেকে ধাক্কা দিলে লঞ্চটি কিছুটা ঘুরে গিয়ে ময়ুর-২ এর সামনের তলানিতে পৃষ্ঠ হয়ে তলিয়ে যায়। যা ছোট লঞ্চটির গায়ের উপরে উঠিয়ে দিয়েছিল। কিছু স্থানীয় মাঝিদের সাহায্যে কিছু মানুষ সাঁতরে তীরে উঠতে পারলেও মহিলা ও শিশুদের মধ্য থেকে কেউ বাঁচতে পারেনি। যার কারণে গতকাল বিকাল পর্যন্ত ৩৪ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মহাবিপদ আচ করতে পারা লঞ্চের যাত্রীরা গগন বিদারী আত্মচিৎকারে ফেটে পরে। বাঁচার আশায় আত্ম চিৎকারে বুড়িগঙ্গার দুই পাড় প্রকম্ভিত হয়। সিসি টিভি ফুটেজ দেখে মনে হচ্ছে এটি নিছক কোন দুর্ঘটনা নয়, বরং পরিকল্পিত হত্যাকান্ড। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও দফতরের ব্যর্থতার ফসল।
তিনি আরও বলেন- নারায়ণগঞ্জেও লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে চলাচল করার পরেও দেখার কেউ নেই। আমাদের নারায়ণগঞ্জে দুর্ঘটনা ঘটলে যাতে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে সেই প্রস্তুতি নেয়ার এবং মনিটরিং করার জোর দাবী জানাচ্ছি।
মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন- ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নারায়ণগঞ্জ মহানগরের ছাত্র ও যুব বিষয়ক সম্পাদক মুহাম্মাদ ওমর ফারুক, ইশা ছাত্র আন্দোলন, নারায়ণগঞ্জ মহানগরের সহ-সভাপতি আহমাদ কবির, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক শেখ মুহাম্মাদ ইকবাল হুসাইন, অর্থ সম্পাদক মুহাম্মাদ শরীফ হোসাইন, দফতর সম্পাদক এইচ.এম শাহীন আদনান, কলেজ সম্পাদক মুহাম্মাদ সোহেল হোসাইন, স্কুল সম্পাদক এম.এম জাহিদুল ইসলাম, ছাত্র কল্যাণ সম্পাদক মুহাম্মাদ মিজানুর রহমান, সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক মুহাম্মাদ তারেক হাসান, সদস্য মুহাম্মাদ ইফতি আলম সহ প্রমূখ।