কুড়িগ্রামে দেড় লাখ মানুষ পানিবন্দি

কুড়িগ্রামে দেড় লাখ মানুষ পানিবন্দি

 

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি, প্রেসবাংলা২৪ডটকম: কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি ঘটছে। প্রতি ঘণ্টায় পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। শনিবার সন্ধ্যা ছয়টায় ধরলা নদীর পানি বিপদসীমার ৫১  সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপুত্র নদের চিলমারী পয়েন্টে বিপদসীমার ৪৬ সেন্টিমিটার, নুনখাওয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ৩১ সেন্টিমিটার এবং ধরলা নদীর পানি বিপদসীমার ৫১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। সেখানে ১২ ঘণ্টার ব্যবধানে রোববার (২৭ জুন) সকাল ৬টায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চিলমারী পয়েন্টে ১৮ সেন্টিমিটার বেড়ে ৬৪ সেন্টিমিটার এবং নুনখাওয়া পয়েন্টে ১৯ সেন্টিমিটার বেড়ে ৫০ সেন্টিমিটার এবং ধরলা নদীর পানি ১০ সেন্টিমিটার বেড়ে ৬২ সেন্টিমিটার  বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া দুধকুমার, গংগাধর, সংকোষসহ তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।

 

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম জানায়, ধরলা নদীর পানি স্থিতিশীল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে তবে আগামী তিনদিন ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে। এসময় জেলায় এক সপ্তাহ স্থায়ী একটি বন্যা হবে।

 

এদিকে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় জেলার ৪২টি ইউনিয়নে পানি প্রবেশ করেছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে দেড় লক্ষাধিক মানুষ। তলিয়ে গেছে ১ হাজার ৬৯২ হেক্টর জমির আউশ, পাট, ভুট্টা, কাউন, চিনা ও শাকসবজির ক্ষেত। এছাড়া ও নদী ভাঙনে ভিটেমাটি হারিয়েছে প্রায় ২ শতাধিক পরিবার।

 

সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের চরযাত্রাপুর এলাকার অধিকাংশ বাড়িতে বন্যার পানি প্রবেশ করছে। করোনার কারণে এমনিতেই কাজকর্ম নেই, তার উপর বন্যার আঘাতে বিপর্যস্ত হয়ে পরেছে বানভাসিরা। এই গ্রামের আবুল হোসেন ও মোজাম্মেল হক জানান, চরের আবাদ সব নষ্ট হয়ে গেছে। বাড়ির চারপাশে যারা সবজি লাগিয়েছেন সেগুলো এখন পানিতে তলিয়ে গেছে।

 

নাগেশ্বরী উপজেলার বল্লভেরখাষ, কচাকাটা, কেদার নারায়নপুর, বামনডাঙ্গা, কালিগঞ্জ, নুনখাওয়া ইউনিয়নের সব চরাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বাড়িঘরে পানি উঠায় এখানকার মানুষ উঁচু স্থান ও স্কুলে আশ্রয় নিয়েছে।

 

এদিকে প্রচণ্ড নদী ভাঙনের মুখে পরেছে উলিপুর উপজেলার হাতিয়া, থেতরাই, বুড়াবুড়ি, বেগমগঞ্জ এলাকার মানুষ। ভাঙছে রৌমারীর কর্ত্তিমারী, চিলমারীর নয়ারহাট, কুড়িগ্রাম সদরের মোগলবাসা ও সারডোব এলাকায়। গত এক সপ্তাহের ভাঙনে বিভিন্ন উপজেলা মিলিয়ে প্রায় ২ শতাধিক বাড়িঘর নদীগর্ভে গেছে।

 

কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানান, ভাঙন কবলিতদের সরিয়ে আনতে কাজ করছে উপজেলা প্রশাসন। এছাড়াও শুক্রবার ভাঙন কবলিত উপজেলাগুলোতে ৩০২ মেট্রিক টন চাল ও ৩৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে।

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com