মে মাসে না’গঞ্জে মারাত্মক রূপ নিবে করোনা!
প্রতিবেদক, প্রেসবাংলা২৪ডটকম: নারায়ণগঞ্জে করোনা পরিস্থিতি আগামী মাসে ভয়াবহ রুপ ধারণ করতে পারে। ইতিমধ্যে নারায়ণগঞ্জের করোনা পরিস্থিতি ঢাকার পরে দ্বিতীয় সংক্রামিত এলাকা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। আইডিসিআর এর তথ্যমতে একদিনেই নারায়ণগঞ্জে ১৫০ জন আক্রান্ত হয়েছে। জেলায় মোট করোনা রোগীর সংখ্যা গতকাল ছিল ৮৪৯ জন।
ইতিমধ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে চিকিৎসক থেকে শুরু করে নাস ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। এর মধ্যে ৬ জন ডাক্তার ও ৮ জন নার্স ছিলেন । আমলাপাড়া মাত্র ১০ দিনের ব্যবধানে করোনায় তিনজন মারা গেছেন। ফতুল্লায় একই বাড়িতে ১৭ জন করোনায় আক্রান্ত। সোনারগাঁ থানায়ও দিন দিন করোনা আক্রান্তের সংখ্যা হুহু করে বাড়ছে।
পরিস্থিতি দিন দিন অবনতির দিকে গেলেও মানুষের মধ্যে লগডাউনের বিধি নিষেধ মানার কোন প্রবণতা বা লক্ষণ নেই। হাটে বাজারে লোক সমাগম দিন দিন বেড়েই চলছে। সীমিত আকারে পোশাক কারখানা খুলে দেয়ার একদিনের মধ্যেই নারায়ণগঞ্জে করোনা আক্রান্ত বেড়ে দ্বিগুন হয়ে যাওয়ার বিষয়টিও ভয়াবহতার একটি লক্ষণ মনে হচ্ছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে মে মাসে করোনা পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ রূপ নিবে।
২৯ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য মোতাবেক জেলায় নমুনা সংগ্রহ হয়েছে ২৬০৭ জনের। এর মধ্যে গত চব্বিশ ঘন্টায় নতুন করে ১৩২ জন সহ সদর উপজেলায় মোট ১৪১৫ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এপর্যন্ত পরীক্ষার যে কয়টি রেজাল্ট আসছে, তাতে সদর উপজেলায় ২৫২জনের শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত করা হয়েছে। নারায়ণগঞ্জের অন্যান্য উপজেলায় মোট নমুনা সংগ্রহের সংখ্যা- আড়াইহাজার উপজেলায় ১৮৪ জন, বন্দর উপজেলায় ১৬৬ জন, সোনারগাঁও উপজেলায় ১১৯ জন এবং রূপগঞ্জ উপজেলা ৯৯জন।
এছাড়াও, এনসিসি এবং বন্দর এনসিসি এলাকায় ৬২৪ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। সদর উপজেলার বাসিন্দাদের মধ্যে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ২২২জন এবং সম্পন্ন করেছেন ২১৩জন। বর্তমানে রয়েছেন ১০জন। সদরে এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ১০ জনের। সুস্থ হয়েছেন ৮ জন।”
নগরীর খানপুরে ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালকে করোনা রোগীদের সেবায় চালু করা হয়েছে এবং প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে দ্রুত এখানে করোনা পরিক্ষার ল্যাব চালু হতে যাচ্ছে।
করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় নারায়ণগঞ্জ স্বাস্থ্য বিভাগ জেলার হাসপাতালগুলিতে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহন করেছে। শহরের প্রধান দু’টি হাসপাতালের একটিকে করোনা হাসপাতাল ঘোষনা দেয়া হয়েছে। অন্যটিতে নিয়মিত চিকিৎসা কার্যক্রম চলছে।
নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে চলছে নিয়মিত চিকিৎসা কার্যক্রম। এ ছাড়া বাড়ি বাড়ি গিয়ে চলছে করোনার স্যাম্পল কালেকশনের কাজ। শহরের গ্রীণল্যাজ ব্যাংকের মোড়ে অবস্থিত নতুন কোর্ট ভবনে অবস্থিত কোয়ারেন্টাইন সেন্টারটি আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে।
করেনার প্রথম অবস্থায় কোয়ারেন্টাইনের কাজ ছিল। এখন চলছে আইসোলেশনের কাজ। তাই জেলাজুড়ে আইসোলেশন ওয়ার্ড চালু করা হয়েছে। খানপুর হাসপাতালটি করোনা হাসপাতাল হিসেবে কাজ করছে। এখানে ২৪ ঘন্টা জরুরী বিভাগে করোনা রোগীকে সেবা দেয়া হচ্ছে।
সিভিল সার্জন ডাঃ মোহাম্মদ ইমতিয়াজ বলেন, নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা হাসপাতালে এক সপ্তাহের মধ্যে ভেন্টিলেটর সহ ১০ টি আইসিইউ বেড ও পিসিআর ল্যাব চালু করা হবে। আজ রূপগঞ্জে আমাদের মাননীয় বস্ত্রমন্ত্রী মহোদয় একটি ল্যাব চালু করবেন। বাড়ি বাড়ি গিয়ে স্বাস্থ্য বিভাগের লোকজন করোনার স্যাম্পল কালেকশন করছেন। জেলায় করোনা চিকিৎসায় বিভিন্ন হাসপাতালে ১০০ আইসোলেশন বেড রাখা হয়েছে। এরমধ্যে খানপুর হাসপাতালে ৪০টি বেড, সাজেদা হাসপাতালে ৪০ বেড ও উপজেলার হাসপাতাল গুলিতে ২০ বেড। ইতিমধ্যেই ৮০ জন করেনা রোগী ভর্তি আছেন।
মে মাসে না’গঞ্জের করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিতে পারে!