মামলা না নেয়ায় কাফনের কাপড় গায়ে ধর্ষিতার পরিবারের প্রতিবাদ
রুপগঞ্জ প্রতিনিধি, প্রেসবাংলা২৪ডটকম: রূপগঞ্জে শিক্ষার্থী ধর্ষণের ঘটনায় ৫ দিন পেরিয়ে গেলেও মামলা নেয়নি পুলিশ। ভোলাব তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ সাইফুল ইসলাম ধর্ষকের পরিবারের কাছ থেকে দেড় লাখ টাকা উৎকোচ নিয়ে ধর্ষণে আলামত নষ্ট করার জন্য মামলা নেই নিচ্ছি বলে টালবাহানা করছেন বলে অভিযোগ রেন ধর্ষিতার পরিবার। এদিকে ধর্ষক ইব্রাহিম মিয়া ও তার পরিবারের লোকজনের হামলা থেকে বাচঁতে রূপগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে কাফনের কাপড় পড়ে বিচার চাইলেন ধর্ষিতার পরিবার।
শুক্রবার দুপুরে উপজেলার রূপগঞ্জ প্রেসক্লাব কার্যালয়ের সামনে ধর্ষিতার ও ধর্ষিতার পরিবারেরর লোকজন কাফনের কাপড় পড়ে শুয়ে থেকে বিচার করেন।
এ সময় তারা জানান, ধর্ষনের অভিযুক্ত ইব্রাহিম ও তার পরিবারের হুমকি ধামকির কারণে ধর্ষিতা ও তারা ঘর ছাড়া । তাদের বাড়ি উপজেলার কাঞ্চন পৌরসভার দক্ষিণ কেরাব এলাকা।
গত ২০ এপ্রিল ধর্ষিতা শিক্ষার্থী বাদী হয়েরূপগঞ্জ থানায় একই এলাকার কবির হোসেনের ছেলে ইব্রাহিম মিয়ার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করেন। ভোলাব তদন্ত কেন্দ্রর ইনচার্জ ইন্সপেক্টর সাইফুল ইসলাম অভিযুক্ত ইব্রাহিম ও তার বাবা কবির হোসেনের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়েছেন তাই তাদের মামলা নেয়নি বলে অভিযোগ করেন ধর্ষিতার পরিবার। তাছাড়া বিচারের দাবীতে দ্বারে দ্বারে ঘুরার কারনে ধর্ষিতার পরিবারেরকে বাড়ি ছাদার হুমকি ধামকি দিচ্ছে।পরে শুক্রবার সকালে রূপগঞ্জ প্রেসক্লাব কার্যালয়ের সামনে ধর্ষিতার ও ধর্ষিতার পরিবার কাফনের কাপড় পরে ধর্ষণের বিচার ও নিরাপত্তা চেয়ে কাফনের কাপড় জড়িয়ে শুয়ে থাকেন। বিচার না পেলে তারা প্রেসক্লাব ছাড়বেন না বলে ঘোষণা দেন।
এদিকে ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী স্থানীয় একটি মাদ্রাসার অষ্টম শ্রেণিতে লেখাপাড়া করেন। গত দেড় বছর আগে উপজেলার দক্ষিণ কেরাব এলাকার কবির হোসেনের ছেলে ইব্রাহিম মিয়া বিভিন্ন ধরনের প্রলোভন দেখিয়ে ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। গত ১ বছর ধরে ইব্রাহিম মিয়া বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে শারিরিক সম্পর্ক গড়ে তুলে। সম্প্রতি শিক্ষার্থী তাকে বিয়ের দাবী করলে ইব্রাহিম মিয়া বিভিন্ন টালবাহানা শুরু করেন। পরে ওই শিক্ষার্থী ইব্রাহিম মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দিলে সে তাকে বিভিন্নভাবে হুমকি ধামকি প্রদান করতে থাকে। পরে ১৯ এপ্রিল রাতে ইব্রাহিম মিয়া শিক্ষার্থীকে তার বাড়ির পাশে দেখা করতে বলেন। ওই শিক্ষার্থী কথা মতো বাড়ির পাশে নির্জন স্থানে দেখা করতে গেলে ইব্রাহিম মিয়া তাকে জোর পূর্বক ধর্ষণ করে ফেলে রেখে চলে যায়। ওইদিন রাতে ধর্ষিতার পরিবারের লোকজন বিষয়টি ধর্ষক ইব্রাহিম ও তার বাবা কবির হোসেন ও মা লিপি বেগমকে বিষয়টি জানালে তারা ধর্ষিতার পরিবারকে হুমকি ধামকি দিয়ে তাড়িয়ে দেন।
ধর্ষিতার চাচা জানান, রূপগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচীর পর বাড়িতে যাওয়ার সময় তাদেরকে আর কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা। ধর্ষিতার চাচা এমন শঙ্কা করছেন ধর্ষনকারীর পিতা কবির হোসেনের সন্ত্রাসী বাহিনীর লোকজন তাদের হত্যা করার উদ্দ্যেশ্যে অপহরন করে নিয়ে গেছে। এ বিষয়ে ভোলাব তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ ইন্সপেক্টর সাইফুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি প্রেম সংক্রান্ত পারিবারিক বিরোধ বিষয়ে জানিয়েছিলো। পরে থানার ওসির সিদ্ধান্তে তদন্ত চলছিলো। ফলে মামলা নিতে দেরী হয়েছে।
তবে রূপগঞ্জ ওসি মাহমুদুল হাসানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এ ঘটনায় আজ মামলা হয়েছে। জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।