আজকের মুক্তিযোদ্ধাদের স্যালুট: শহীদুল ইসলাম খাঁ

শহীদুল ইসলাম খাঁ, প্রেসবাংলা২৪ডটকম: “করোনা” শেষ হয়ে যাবে৷ ভন্ড প্রতারক মুখোশধারী কিছু জোচ্চরদের হাতে, এক সময় ইতিহাস লেখা হবে৷ শয়তান কে ফেরশতা আর ফেরেশতাকে শয়তান বানানোর, অর্ধ সত্য অর্ধ মিথ্যা কাহিনীতে ভরা ইতিহাস দেখে, একসময় নির্ধারিত হবে, কে নায়ক কে খলনায়ক৷ গৃহবন্দী, গর্তপ্রবাসী বুদ্ধিজীবী ইতিহাসবেত্তারা সময় মত বেড়িয়ে আসবে আর তাদের বীরত্বের কাহিনি, বীরদর্পে প্রচার করে বেড়াবে৷ অথচ নির্লোভী দেশপ্রেমিক, “করোনা” যোদ্ধারা যারা নিজেদের জীবন বিপন্ন করে মাঠে কাজ করছেন,তারা পড়ে যাবে ইতিহাসের আড়ালে৷ সরকার দলীয় লোক গুলো হোম কোরাইন্টানে, সুবিধাবাদীগুলোকে কদাচিৎ দেখা যায় ত্রান বিতরণে ৷ দলকানা সারমেয় গুলো ফেসবুকে, প্রচার মাধ্যমে নেতাদের গুণকীর্তনে ব্যাস্ত সময় পার করছেন একদল ভদ্রবেশী মুখোশধারী শিক্ষিত শ্রেনী নিজের জীবনের মায়ায়, আগে থেকেই বাজারের সব পন্য মজুদ করে ঘরে বসে গালি দিচ্ছে, অশিক্ষিত বাঙ্গালীর জাত শালারা৷ এদের দিয়ে কিচ্ছু হবেনা! আহ! চাটুকার শ্রেনী তাদের পোস্টে কমেন্ট এর বন্যা বইয়ে দিচ্ছে “সহমত ভাই” “সহমত ভাই” আসলে দেশের “করোনা” ভাইরাস পরিস্থিতি দিয়ে আমি মুক্তিযুদ্ধের ছায়া খুজে পাই৷
আমরা যারা যুদ্ধের সময় জম্ম নেইনি বলে আফসোস করি, এজন্য যে যুদ্ধে যোগদান করার সুযোগ পাইনি তাদের সেই দুঃখ গোচানোর সুবর্ন সুযোগ এটা৷। এটা দিয়েই আমরা তুলনা করতে পারি, সত্যিকারের দেশপ্রেমিক গুলো কারা। এখন এটা স্পষ্ট, আসলেই যুদ্ধ লাগলে কারা নিজের জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করতো আর কারা রাজাকারের খাতায় নাম লেখাতো৷ ফেসবুকে বড় বড় বুলি আওড়ানো শ্রেনী গুলি হচ্ছে, ভারতে পালানো সুবিধাবাদী শ্রেনী। দায়িত্ব থেকে পলায়ন কারী অফিসার-ডাক্তার, ত্রানচোর, শ্রমিকের বেতন মেরে খাওয়া মালিক,অসাধু ব্যবসায়ী, কালোবাজারী-মজুতদার গুলো হচ্ছে এই সময়ের শত্রুবাহীনি। অতি উৎসাহী জনতা যেগুলো হাসপাতাল তৈরিতে বাধা দিচ্ছে, লাশ দাফনে বাধা দিচ্ছে, অকারণে রাস্তায় ঘোরাফেরা করে পুরো সমাজকে বিপদজনক করে রেখেছে এগুলো হচ্ছে রাজাকার শ্রেনী।
শিক্ষিত, অর্ধ শিক্ষিত, বাউন্ডুলে, অকুতোভয় যুবক শ্রেনী যারা নিজের জীবন বাজি রেখে মাঠে কাজ করছেন সেই সকল নির্ভিক সাংবাদিক, সৎ জনপ্রতিনিধি, ডাক্তার, নার্স, পুলিশ, সেনাবাহিনী আর স্বেচ্ছাসেবীরাই প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা ৷ ৭১ সালেও আমরা দেখেছি এই শ্রেনীর লোকগুলোই যুদ্ধে অসীম সাহসিকতার স্বাক্ষর রেখেছিলেন ৷ “করোনা” আক্রান্ত জন্ম ধাত্রী মা জননীকে বনে ফেলে যাওয়ার ঘটনা আমরা দেখেছি, ছেলের লাশ ভয়ে রাস্তায় ফেলে যেতেও আমরা দেখেছি। খাবারের জন্য দরিদ্র মানু্ষগুলোর হাহাকারও আমরা দেখেছি। উপরোক্ত মুক্তিযুদ্ধারা না থাকলে, একটা লোকও চিকিৎসা পেত না, লাশ গুলো শিয়াল কুকুরে খেতো, দাফন হতোনা ৷ অনাহের মারা যেত আরো কয়েক লাখ লোক।
আমাদের এই সময়ের মুক্তিযোদ্ধারা, নিজের জীবনের তোয়াক্কা না করে চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন, লোকদের ঘরে রাখার আপ্রান চেষ্টা করে চলেছেন, দাফনের ব্যবস্থা করছেন, জীবানুনাশক ছিটাচ্ছেন, অসহায় পরিবারের ঘরে ঘরে খাবার পৌছে দিচ্ছেন৷ যদিও তার নিজের জীবনের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা নেই, নেই ঘরে খাবারের নিশ্চয়তা৷ এরাই আমাদের প্রকৃত দেশপ্রেমিক মুক্তিযোদ্ধা। যাদের মাঠের লোক গুলোর জন্য, সত্যিকারের মন কাদেঁ(মায়া কান্না না) কিন্তু পরিস্থিতির কারনে গৃহ বন্দি তবু মাঠের কর্মীদের কাজ গুলোকে সমর্থন ও সহযোগিতা দিয়ে উৎসাহ দিয়ে চলছেন, গরীব মানুষের সাহায্যে হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন তারাও মুক্তিযোদ্ধা। “করোনা” শেষ হয়ে যাবে৷ এক সময় ইতিহাস লেখা হবে, ভন্ড প্রতারক মুখোশধারী কিছু জোচ্চরদের হাতে৷ শয়তান কে ফেরশতা আর ফেরেশতাকে শয়তান বানানোর, অর্ধ সত্য অর্ধ মিথ্যা কাহিনীতে ভরা ইতিহাস দেখে নির্ধারিত হবে, কে নায়ক কে খলনায়ক।
স্বাধীনতা যুদ্ধের মতই আজকের অকুতোভয় মুক্তিযোদ্ধারা পড়ে যাবে ইতিহাসের আড়ালে৷ এক সময় তাদের রাজাকার বলেও গালি দেওয়া হবে৷। আর সব পদক খেতাব পুরস্কার প্রনোদনা লুট করে নিবে মিথ্যাবাদী ভন্ড প্রতারকেরা। আজকে যারা মুক্তিযোদ্ধা তাদের কপালে জুটবে অনাহারী পরিবার-সন্তানের করুন আর্তনাদ! তবু সেই সকল সত্যিকারের দেশপ্রেমিক মুক্তিযোদ্ধাদের আমার স্যালুট ৷
শহীদুল ইসলাম খাঁ
চীফ এডমিন
“আলোকিত কাশীপুর”