করোনা চিকিৎসায় প্রস্তুত হচ্ছে প্রো-অ্যাক্টিভ মেডিকেল কলেজ !

প্রতিবেদক, প্রেসবাংলা২৪ডটকম: করোনায় আক্রান্তের দিক দিয়ে ঢাকার পরই নারায়ণগঞ্জ। বলা হয় নারায়ণগঞ্জ বাংলাদেশের হুয়ানাইন । এখানে প্রতিদিনই বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। সর্বশেষ আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৪ শতাধিক। সরকারি হিসাব মতে এখানে করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৩০ জনের। করোনার ছোবল থেকে রক্ষা পাচ্ছে না সিভিল সার্জন, চিকিৎসক, পুলিশ, সাংবাদিক, ম্যাজিস্ট্রেট কেউই। আর এই জেলায় এখন পর্যন্ত করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য শয্যা আছে মাত্র ৮০টি। কিন্তু প্রতিদিন যেভাবে রোগী বাড়ছে, শিগগির আরও হাসপাতাল বা চিকিৎসার জন্য শয্যা না বাড়ালে বিপাকে পড়তে হবে।
ঠিক এই সময় স্বস্তির খবর মিললো নারায়ণগঞ্জের করোনা রোগীদের জন্য। এ অবস্থায় আরও দুটি বেসরকারি হাসপাতালকে করোনা চিকিৎসার জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকার প্রো-অ্যাক্টিভ মেডিকেল কলেজ হসপিটাল ও বন্দরের মদনপুরের আল বারাকা নামে বেসরকারি দু’টি হাসপাতালকে করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। এ বিষয়ে স্বাস্থ্য বিভাগে চিঠিও দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য বিভাগের ছাড়পত্র পেলে হাসপাতাল দুটিতে করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু হবে।
এই জেলায় আক্রান্ত রোগীর তুলনায় চিকিৎসা সুবিধা খুবই সীমিত। শহরের খানপুর এলাকায় নারায়ণগঞ্জ ৩শ’ শয্যা হাসপাতালে করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য ৫০টি শয্যা প্রস্তুতের কাজ এখনও চলছে। ৪০টি আইসোলেশন শয্যা প্রস্তুত হলেও ১০টি আইসিইউ শয্যার কাজ শেষ করতে আরও কিছুদিন সময় লাগবে বলে জানান হাসপাতালটির আবাসিক চিকিৎসক ডা. সামসুদ্দোহা সঞ্চয়। করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য স্বাস্থ্য বিভাগের অনুমোদনপ্রাপ্ত সিদ্ধিরগঞ্জের সাজেদা ফাউন্ডেশনের বেসরকারি হাসপাতালটিতে করোনা চিকিৎসার জন্য চারটি আইসিইউসহ ৩০ শয্যার আইসোলেশন ইউনিট রয়েছে।
তবে নারায়ণগঞ্জের পরিস্থিতি বিবেচনা করে দ্রুত আইসোলেশন সেন্টার ও হাসপাতালের শয্যা বাড়ানোর প্রয়োজন বলে মনে করেন জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইমতিয়াজ। তিনি বলেন, ‘আক্রান্ত রোগীর তুলনায় হাসপাতালে শয্যা সংখ্যা কম। আমরা চেষ্টা করছি হাসপাতাল বাড়ানোর জন্য। প্রো-অ্যাক্টিভ হাসপাতালটি নিয়ে স্বাস্থ্য বিভাগে কথা হয়েছে। তারা এ বিষয়ে ছাড়পত্র দিলে সেখানে চিকিৎসা সেবা শুরু হবে। তারপরেও প্রয়োজন হলে আল-বারাকা হাসপাতালটি ব্যবহার করা যাবে।’
এ বিষয়ে প্রো-অ্যাক্টিভ মেডিকেল কলেজ এন্ড হসপিটালের পরিচালক মোঃ ফকরুল ইসলাম প্রেসবাংলাকে বলেন, ‘স্বাস্থ্য বিভাগ ও ডিসি সহেব আমাদেরকে জানিয়েছেন করোনা চিকিৎসায় তিন মাসের জন্য তারা হাসপাতালটি নিতে চাচ্ছেন। তবে এবিষয়ে এখনো চুড়ান্ত কোন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় নি । আগামী বুধবার আমরা এ বিষয়ে মিটিংয়ে বসব । তারপর আমরা চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাতে পারবো আশা করি।’
এ বিষয়ে জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক জসিম উদ্দিন, ‘দুটি হাসপাতালে করোনা চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। আরও দুটি হাসপাতাল সাইনবোর্ড এলাকার প্রো-অ্যাক্টিভ মেডিকেল কলেজ হসপিটাল ও মদনপুরে আল বারাকা হাসপাতালের বিষয়ে কথা হচ্ছে। ওই দুটি হাসপাতাল হলে আইসোলেশনে আরও প্রায় ৩০০ রোগী ভর্তি করা যাবে।’
উল্লেখ্য ২০ এপ্রিল সকালে নারায়ণগঞ্জ স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য সূত্রে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জে করোনায় মোট আক্রান্ত সংখ্যা দাড়িয়েছে ৪১১জন, মৃতের সংখ্যা ৩০ এবং সুস্থ্য হয়েছে ১৬ জন।