গ্রেফতারের বিষয়টি আগে জানতে পেরেছিলেন পাপিয়া

 

বিশেষ প্রতিবেদক, প্রেসবাংলা২৪ডটকম: গ্রেফতারের বিষয়টি আগে জানতে পেরেছিলেন র‌্যাবের হাতে গ্রেফতার হওয়া মহিলা যুবলীগের নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়া। এজন্য তিনি স্বামীসহ দেশত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু তার শেষ রক্ষা হয়নি। বিমানবন্দরেই র‌্যাবের হাতে গ্রেফতার হন।

আওয়ামী লীগের এক কেন্দ্রীয় নেতা পাপিয়াকে এ বিষয়টি সতর্ক সর্ম্পকে সতর্কও করেন। পরে গ্রেফতার এড়াতে পাপিয়া দেশত্যাগের চেষ্টা করেন।

 

রোববার শামীমা নূর পাপিয়ার বাসা থেকে অস্ত্র, মদসহ বিপুল পরিমাণ অবৈধ টাকা উদ্ধার করেছে র‌্যাব।

 

রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় তার বাসায় অভিযান চালিয়ে এসব উদ্ধারের কথা জানান র‌্যাবের লিগ্যাল এন্ড মিডিয়া উইংয়ের সিনিয়র সহকারী পরিচালক এএসপি সুজয় সরকার।

 

তিনি জানান, র‌্যাব-১ এর বিশেষ অভিযানে রাজধানীর ফার্মগেটের পাপিয়ার বাসা থেকে বিদেশি অস্ত্র, ম্যাগজিন, গুলি, বিদেশি মদ ও বিপুল পরিমাণ অবৈধ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।

 

রোববার বিকাল ৪টায় রাজধানীর কারওয়ানবাজার র‍্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত তথ্য জানানো হবে বলেও জানান তিনি।

 

শামীমা নুর পাপিয়ার বিরুদ্ধে অসহায় সুন্দরী ৭ নারীকে নিয়ে অনৈতিক ব্যবসা করার অভিযোগ রয়েছে। হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। রাজধানীর অভিজাত এলাকার শুধু একটি হোটেলেই তার তিন মাসে খরচ ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা।

 

শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হতে দেশ ত্যাগের সময় অবৈধ অর্থসহ ৪ জনকে গ্রেফতার করে র‍্যাব। তাদের মধ্যে অন্যতম এই শামীমা নূর পাপিয়া।

 

র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করে র‍্যাব ১ এর অধিনায়ক শাফিউল্লাহ বুলবুল বলেন, শামীমা নুর পাপিয়া একজন ব্যবসায়ী। এফডিসি সংলগ্ন কার এক্সচেঞ্জ নামক গাড়ির শোরুম আছে তার। তবে এই ব্যবসার আড়ালে তিনি অবৈধ অস্ত্র, মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজিসহ নারীঘটিত অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত।

 

নরসিংদী এলাকার অসহায় সুন্দরী নারীদের আর্থিক দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে তাদের সহযোগিতায় অনৈতিক কর্মকাণ্ড চালাতে তিনি। বছরের অধিকাংশ সময় তিনি রাজধানীর বিভিন্ন বিলাসবহুল হোটেলে অবস্থান করেন। সেখান থেকেই অনৈতিক কাজে নারী সরবরাহ করেন।

 

এই অবৈধ কাজ থেকে পাওয়া টাকা দিয়ে গড়েছেন একাধিক বিলাসবহুল বাড়ি, গাড়ি, ফ্ল্যাটসহ বিপুল পরিমাণ নগদ অর্থ।

 

শাফিউল্লাহ বুলবুল আরও বলেন, গুলশানে অবস্থিত অভিজাত একটি হোটেলে ২১ তলায় তার দুটি রুম ভাড়া নেওয়া আছে। সেখানেই তিনি তার কাজে সহযোগী মেয়েদের রাখেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এবং তার কাছ থেকে পাওয়া রশিদ অনুযায়ী, গত তিন মাসে অভিজাত একটি হোটেলে বার খরচ ও রুম ভাড়া হিসেবে ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা খরচ করেছেন তিনি।

 

দুপুরে জাল টাকা সরবরাহ করে বিদেশ পাড়ি দেওয়ার উদ্দেশ্যে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গেলে র‍্যাব তাদের আটক করে। আটকের সময় তাদের নিকট হতে ৭টি পাসপোর্ট, বাংলাদেশি নগদ ২ লাখ ১২ হাজার টাকা, জাল ২৫ হাজার টাকা, ভারতীয় রুপি ৩১০, শ্রীলংকান মুদ্রা ৪২০, ১১ হাজার ৯০ ইউএস ডলার উদ্ধার করা হয়।

 

এ সময় শামীমা নুর পাপিয়ার দুই ব্যক্তিগত সহযোগী ও তার স্বামীকেও আটক করা হয়।

 

আটককৃত অন্যরা হলেন, স্বামী মফিজুর রহমান ওরফে সুমন, সাব্বির খন্দকার, শেখ তাওবা। তারা তার ব্যক্তিগত বিষয় দেখাশোনা ও সম্পত্তি হিসাব রক্ষণাবেক্ষণ করতেন।

 

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com