বিয়ের আশ্বাসে ঘর ভেঙে কূল হারাল আলীনূর (ভিডিওসহ)

 

 

রূপগঞ্জ প্রতিনিধি, প্রেসবাংলা২৪ডটকম: বিয়ের আশ্বাস দিয়ে পরকীয়া, অতঃপর ঘটনা ফাঁস হবার পর ঘর ভাঙল আলীনূরের। কিন্তু যার আশ্বাসে পরকীয়ায় রাজি হয়েছিলেন সে-ও এখন চিনছে না। ফলে দু’কূল হারিয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন আলীনূর বেগম। পরকিয়া প্রেমিক মতিন রূপগঞ্জ স্বাস্থ্য সহকারী হওয়ায় প্রশাসনের সহযোগিতাও পাচ্ছেন না ওই নারী।

ঘটনার বিবরনে দক্ষিনবাগ এলাকার মৃত রাইজদ্দিনের মেয়ে আলীনুর বেগম (৩৫) জানান, ২০ বছর পূর্বে মুশুরী এলাকার নানা মৃত আবেদ আলীর বাড়িতে থেকে লেখাপড়ার সুবাদে পরিচয় হয় একই এলাকার আব্দুল আওয়ালের ছেলে আব্দুল মতিনের সঙ্গে। মতিনের কাছে আলীনুর বেগম প্রাইভেট পড়ানোর সময় দু’জনের মাঝে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তবে মতিন সে সময় বেকার থাকা ও বিএনপির রাজনীতিতে ছাত্রদলের সঙ্গে জড়িত থাকায় পরিবার থেকে তাদের সম্পর্ক মেনে নেয়নি। পরে ১৭ বছর পূর্বে আলীনুর বেগমকে মুশুরী এলাকার সিরাজউদ্দিনের সঙ্গে বিয়ে দেয় তার পরিবার। এতদিনে সিরাজউদ্দিন ও আলীনুর বেগমের সংসারে জন্ম হয় দু’ছেলে সন্তানের। তাদের দু’জনের মধ্যে বড় ছেলে এইচএসসি এবং ছোট ছেলে বর্তমানে একটি কিন্ডারগার্টেনে ৫ম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত। এদিকে ছাত্রদল নেতা হিসেবে সে সময়ের বস্ত্রমন্ত্রী আব্দুল মতিন চৌধূরীর সুপারিশে রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অধীনে স্বাস্থ্য সহকারী মাঠকর্মী হিসেবে চাকুরী পায় আলীনুর বেগমের প্রেমিক মতিন মিয়া। পরে তার স্বামী সিরাজের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে তোলে মতিন মিয়া। এ সুযোগে আলীনুরের বাসায় অবাধ যাতায়াত শুরু হয় মতিনের। পুরনো প্রেমিকের সঙ্গে শুরু হয় নতুন করে পরিকয়া প্রেমের। প্রেমের ফাঁদে ও বিয়ের প্রলোভনে গড়ে তোলে শারীরিক সম্পর্ক। এসব বিষয় নিয়ে সিরাজ ও আলীনুরের সংসারে অশান্তি দেখা দেয়। সে সময় প্রবাসে চলে যায় আলীনুর বেগম। ৩ বছর পর দেশে ফিরে কিছুদিন সিরাজের সংসার করলেও পুনরায় মতিনের সঙ্গে চলে পুরনো সম্পর্ক। তাছাড়া বানিয়াদিতে আলীনুর বেগমের মামার একটি নির্জন বাড়িতে নিয়মিত যাতায়াত ও শারীরিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে উভয়ের মাঝে। শুধু তাই নয়, সুযোগ পেলেই তার সন্তানদের নানা বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়ে কক্সবাজার, বাংলার তাজমহলসহ বিভিন্নস্থানে মতিনের সঙ্গে রাত্রিযাপন করতো। এসব বিষয় জানতে পেরে গত ৩ জানুয়ারী ২০১৮ আলীনুরকে ডিভোর্স দেয় তার স্বামী সিরাজ। তারপরও থেমে থাকেনি মতিন ও আলীনুর বেগমের প্রেম। তারা গোঁপনে চালিয়ে যেতে থাকে শারীরিক সম্পর্ক। তবে বিয়ে করার দাবি করলেই ঘুরে বসে মতিন।

 

একইভাবে শারীরিক সম্পর্ক করার সময় গত ৯ জানুয়ারী বিকালে বানিয়াদির ওই নির্জন ঘরে মতিন ও আলীনুর বেগমকে এলাকাবাসী দেখে ফেলে। পরে তারা উভয়কে আটক করে বিয়ের প্রমাণ চাইলে তা দিতে ব্যর্থ হয়। এ সময় মতিন বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে জাঙ্গীর এলাকার কাজী সাইদুরের কাছে নিয়ে যায় আলীনুর বেগমকে। কিন্তু মতিন প্রতারণা করে ভোটার আইডি কার্ড নেয়ার কথা বলে পালিয়ে যায়। পরে যোগাযোগ বন্ধ করে দিলে ক্ষিপ্ত হয়ে যায় আলীনুর বেগম। এতোদিন সম্মানের ভয়ে মুখ না খুললেও বিষয়টি খুলে জানান স্থানীয় ইউপি সদস্য রমজান আলী মন্ডলকে। এছাড়াও উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাক্তার সাঈদ আল মামুনের কাছে বিচার চান আলীনুর বেগম। এদিকে বিষয়টি ধামাচাপা দিতে স্থানীয় শালিস মফিজুল নানা টালবাহানা করছে বলে রয়েছে অভিযোগ। এ ঘটনায় দ্বারে দ্বারে বিচার চেয়ে সুরাহা না পাওয়ায় হতাশা প্রকাশ করে আলীনুর বেগম।

তিনি বলেন, আমাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে, প্রেমের সম্পর্ক করে শারীরিক সম্পর্ক করেছে। আমার সাজানো সংসার ভেঙ্গেছে। এখন কি কারনে আমাকে গ্রহণ করবে না সে? তাই প্রয়োজনে আদালতের দারস্থ হবো।

 

 

এসব অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে আব্দুল মতিন বলেন, আমি বিএনপির সমর্থক হওয়ার কারনে একটি মহল আলীনুর বেগমকে দিয়ে আমাকে ফাঁদে ফেলতে চেষ্টা করছে। তবে আলীনুর বেগমের সঙ্গে প্রেম বা সুসম্পর্ক ছিলো স্বীকার করলেও শারীরিক সম্পর্কের বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি।

 

এ বিষয়ে রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাক্তার সাইদ আল মামুন বলেন, কারো ব্যক্তিগত বিষয়ে কিছু করার নেই। তবে কোন অপরাধ করে থাকলে তার উপযুক্ত বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

 

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com