অপর ছেলে উদ্ধার: বাবা ও সৎ মায়ের নির্যাতনে ছেলের মৃত্যুর অভিযোগ

 

ফতুল্লা প্রতিনিধি, প্রেসবাংলা২৪ডটকম: ফতুল্লায় বাবা ও সৎমায়ের বিরুদ্ধে হেমায়েত হোসেন সুমন (৩৫) নামের এক যুবককে আটকে রেখে নির্যাতনের মাধ্যমে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। শুধু সুমন নয়, আটকে রেখে নির্যাতন করা হতো অপর ছেলে সাফায়েত হোসেন রাজুকেও। বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) রাতে ফতুল্লার দক্ষিণ রসুলপুর এলাকায় হাবিবুল্লাহ ক্যাশিয়ারের বাড়ি থেকে সুমনের লাশ উদ্ধার করেছে। এসময় অপর ছেলে রাজুকেও বন্দি অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।

তবে নিহতের পিতা হাবিবুল্লাহর দাবি-সুমন ও রাজু মানসিক রোগী। ঘরে বন্দি রেখে তাদের চিকিৎসা করানো হচ্ছিল। কিন্তু রাজুর দাবি-নোয়াখালীর রামনগর কেএমসি হাই স্কুলে ৮ম শ্রেণিতে পড়ার সময় তার মা মোহসেনা বেগম মারা যান। এরপর তাকে ফতুল্লায় নিয়ে আসা হয়। এর কিছুদিন পর ছোট খালা কোহিনুর বেগমকে তার বাবা বিয়ে করেন। কোহিনুর বেগমও কিছুদিন পর মারা যান। এরপর আরেকজনকে বিয়ে করেন তারা বাবা। এ বিয়েবিচ্ছেদ হওয়ায় এক বছর আগে হনুফা বেগম নামে আরেকজনকে বিয়ে করেন হাবিবুল্লাহ। এ বিয়ের পর থেকে দুই ভাইয়ের ওপর নির্যাতন শুরু হয়। এক বছর ধরে একটি কক্ষে তাদের তালাবদ্ধ করে রাখা হয়। কখনো খাবার দেয়া হতো, আবার কখনো দেয়া হতো না। প্রায় লাঠি দিয়ে তার বাবা ও সৎ মা তাদের মারধর করত।

 

রাজু আরও জানান, কয়েকদিন আগে রাতে সুমনকে অনেক মারধর করা হয়। এরপর সে সারা রাত কান্নাকাটি করে। তখন রাজুও অনেক চিৎকার করেছেন। আশপাশের লোকজনকে ডাকাডাকি করেছেন। কিন্তু তার বাবা ও সৎ মায়ের ভয়ে কেউ এগিয়ে আসেননি। রাজু ও তার ভাই পাগল না। তার বাবা যে সম্পত্তি ও জমি তার বলে দাবি করে সে জমির অর্ধেক মালিক তার মা মোহসেনা বেগম। এ জমি আত্মসাৎ করার জন্য তাদের পাগল আখ্যা দিয়ে ঘরে আটকে রেখে নির্যাতন করা হতো। সুমন নির্যাতনে মারা গেছেন।

 

 

 

ছেলের অভিযোগ অস্বীকার করে হাবিবুল্লাহ বলেন, তার পাঁচ ছেলে। দুজন মানসিক রোগী। তাদের অনেক চিকিৎসা করেছেন। বড় ছেলে অসুস্থ হয়ে মারা গেছে। দক্ষিণ রসুলপুরের বাড়িতে পরিবার নিয়ে হাবিবুল্লাহ বসবাস করেন। কাজী নজরুল কলেজে তিনি ক্যাশিয়ার পদে চাকরি করেছেন। সম্প্রতি তিনি অবসরে গিয়েছেন।

 

 

ফতুল্লা মডেল থানার এসআই ফজলুল হক জানান, লাশের শরীরে পচন ধরেছে। আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহরের জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। আরেকজনকে জীবিত উদ্ধার করে স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে তার বাবা হাবিবুল্লাহর কাছে রাখা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com