সোনারগাঁয়ে মাসব্যাপী লোকজ উৎসব শুরু
সোনারগাঁ প্রতিনিধি, প্রেসবাংলা২৪ডটকম: আবহমান গ্রাম বাংলার বিলুপ্ত প্রায় লোক ও কারুশিল্পের সংগ্রহ, সংরক্ষন, প্রদর্শন, বিপনন ও পুনরুজ্জীবনের লক্ষ্যে মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) বিকেলে সোনারগাঁয়ের বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনে শুরু হয়েছে মাসব্যাপী লোক কারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসব ২০২০।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি।
বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের পরিচালক ড. আহমেদ উল্লাহর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, আওয়ামীলীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসিম কুমার উকিল এমপি, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য স্থানীয় সাংসদ লিয়াকত হোসেন খোকা, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আবু হেনা মোস্তফা কামাল এনডিসি, নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোঃ জসিম উদ্দিন, পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম পিপিএম , উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রকিবুর রহমান খাঁন, উপজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এডভোকেট সামসুল ইসলাম ভুইয়া, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান কালাম ও সোনারগাভ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার ওসমান গনি প্রমূখ।
প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পৃষ্ঠপোষকতায় শিল্পচার্য জয়নুল আববেদিন এ প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলে ছিলেন। এ প্রতিষ্ঠানকে আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে সরকার কাজ শুরু করেছেন। সোনারগাঁ অঞ্চলে এক সময় বিখ্যাত মসলিন কাপড় তৈরী হত। মসলিন তৈরীর জন্য সোনারগাঁ ছিল উপযুক্ত স্থান। বর্তমানে মসলিনের হাত ধরে সোনারগাঁয়ে জামদানী তৈরী হচ্ছে। যা দেশে বিদেশে সুখ্যাতি অর্জন করেছে। সোনারগাঁকে আন্তর্জাতিক কারুশিল্প শহর হিসেবে ঘোষনা করা হয়েছে। বর্তমান সরকার সংস্কৃতি বান্ধব সরকার। জননেত্রী শেখ হাসিনা সংস্কৃতির উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছেন। ইতিমধ্যে ১৬৪ কোটি টাকা ব্যয়ে শিল্পাচার্যের জম্মভূমি ময়মনসিংহে শিল্পাচার্যের সংগ্রহ শালার উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহন করা হয়েছে। পাশাপাশি সোনারগাঁ জাদুঘরেও একাধিক উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহন করা হয়েছে। আমরা চাই ময়মনসিংহের সাথে সোনারগাঁয়ের যোগ সুত্র ঘটাতে। বর্তমানে সংস্কৃতির উন্নয়নে যা যা করা দরকার সরকার তাই করবে।
ফাউন্ডেশন সূূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশের পল্লী অঞ্চল থেকে ৬৪ জন দক্ষ কারুশিল্পী মেলায় তাদের শিল্পকর্ম প্রদর্শন বিপনন ও তৈরি করার সুযোগ পাবেন। এর মধ্যে নওগাঁ ও মাগুরার শোলা শিল্প, রাজশাহীর শখের হাড়ি, চট্টগ্রামের তালরপাখা ও নকিশ পাখা, রংপুরের শত রঞ্জি, সোনারগাঁয়ের হাতি ঘোড়া পুতুল ও কাঠের কারু শিল্প, নকিশকাঁথা, বেত ও বাঁশের কারুশিল্প, সিলেট ও মুন্সিগঞ্জের শীতল পাটি, কুমিল্লার তামা-কাঁসা পিতলের কারুশিল্প, রাঙামাটি ও বান্দরবান জেলার ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর কারুপণ্য, কিশোরগঞ্জের টেরা কোটা শিল্প, সোনারগাঁওয়ের পাটের কারু শিল্প, নাটোরের শোলার মুখোস শিল্প, মুন্সিগঞ্জের পট চিত্র, ঢাকার কাগজের হস্ত শিল্প।
এবছর উৎসবে মোট ১৫৪টি স্টল থাকছে।এছাড়াও লোকজ উৎসবের লোকজ মঞ্চে প্রতিদিন লোক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে আয়োজন থাকবে। এবারের মেলার শতবর্ষে বঙ্গবন্ধু লোকজ উৎসব পালন করা হবে। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টাা পর্যন্ত উৎসব খোলা থাকবে। আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারী শেষ হবে এ লোকজ উৎসব।