সনদ নেই তবু তিনি ‘ডাঃ’
সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি, প্রেসবাংলা২৪ডটকম: ডাক্তারি কোন সনদ নেই তার। তারপরও নামের শুরুতে লিখেন ‘ডাঃ’। প্রকাশ্যে নিজেকে এমবিবিএস ডাক্তার পরিচয় দিয়ে সাধারণ মানুষের সাথে নির্বিঘ্নে চিকিৎসাকিৎসা সেবার নামে প্রতারণা করে যাচ্ছেন তিনি। তবে তার চেম্বারের সাইনবোর্ডে তার নামের শুরুতে ‘ডাঃ’ এবং নামের শেষে পদবী বা যোগ্যতা হিসাবে কেমিষ্ট এন্ড ড্রাগিষ্ট লিখা রয়েছে। যদিও তার চেম্বারে কোন ডায়াগনস্টিক সেন্টার বা রোগ নির্ণয়ের কোন প্রতিষ্ঠান নয়। এই ভূয়া ডাক্তারের নাম ফিরোজ আলম।
তার ভুল চিকিৎসায় অনেক রোগী ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন বলে অনেক অভিযোগ রয়েছে। ফিরোজ আলমের ভুল চিকিৎসায় এক গর্ভবতী নারীরও মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এর আগে প্রশাসনের হাতে ধরাও পড়েছিলেন এই ভুয়া ডাক্তার ফিরোজ আলম। তারপরও থেমে নেই চিকিৎসা সেবার নামে সাধারণ মানুষের সাথে তার এই প্রতারণামূলক ব্যবসা। যথারীতি তার চেম্বারের সাইনবোর্ডে তার ফিরোজ আলম নামের শুরুতে লেখা রয়েছে ‘ডাঃ’। তার ভিজিটিং কার্ডসহ অন্যান্য কাগপত্রেও তিনি নিজেকে ‘ডাঃ’ হিসাবে পরিচিয় দিয়ে থাকেন। ডাঃ পরিচয় দিয়ে অসুস্থ্য রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিয়ে ইতোমধ্যে তিনি সিদ্ধিরগঞ্জের ধনুহাজী রোড এলাকায় তিনতলা বিল্ডিংয়ের বাড়ি তৈরী করেছেন। চলনে বলনে তার রয়েছে ধনীদের ছাপ।
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে নাসিক ১নং ওয়ার্ড কার্যালয় সংলগ্ন রাস্তার পাশেই অবস্থিত এমবিবিএস পরিচয়ধারী ডাক্তার ফিরোজ আলম রোগী দেখার চেম্বার ও ঔষধ বিক্রির ফার্মেসী। রিমা মেডিকেল হল নামে ঐ প্রতিষ্ঠানে প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এখানে বসেই রোগী দেখেন তিনি। রোগী প্রতি ভিজিট নেন ১’শ টাকা থেকে ৩’শ টাকা। কখনো কখনো এর অধিকও নিয়ে থাকেন তিনি। একই সাথে ফিরোজ আলম রোগীদেরকে তার নিজস্ব ফার্মেসী থেকেই ঔষধ কিনতে বাধ্য করেন তিনি। এভাবে সে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে বিপুল পরিমান অর্থ উপার্জন করে চলেছে। তার এই ব্যবসা দীর্ঘদিনের। ভুক্তভোগী অনেকের অভিযোগ, ভূয়া ডাক্তার ফিরোজের চিকিৎসা নিয়ে রোগীরা শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। তাছাড়া এক গর্ভবতী নারীর মৃত্যুও হয়েছে তার চিকিৎসায়। তাছাড়া ডাক্তার হিসেবে রোগীদের সাথে সৌজন্যমূলক ভালো ব্যবহারও করে না ফিরোজ।
তবে ভূক্তভোগীদের আশা, খুব শীঘ্রই এই ভূয়া পরিচয় প্রদানকারী ডাক্তার প্রশাসনের হাতে আবারও ধরা পড়বে। কেননা, প্রায় বছর খানেক সময় ধরে এসব ভূয়া ডাক্তারদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করছে র্যাব-১১। অভিযানে শুধুমাত্র সিদ্ধিরগঞ্জ থেকেই প্রায় দশজনের মত ভূয়া ডাক্তারকে আইনের আওতায় এনেছে র্যাব।
৮-৯ মাস পূর্বে তার বিরুদ্ধে ভুল চিকিৎসায় এক ব্যক্তি মারা যাওয়ার অভিযোগ রয়েছে বলে জানিয়েছেন এলকাবাসী। পরবর্তীতে রোগীর স্বজনদের কে ২ লাখ টাকা দিয়ে ঘটনাটি ধামাচাপা দেয় বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
র্যাব-১১ এর মেজর তালুকদার নাজমুছ সাকিব জানায়, মানুষের সরলতাকে পুঁজি করে কিছু কিছু অসাধু ব্যক্তি নিজেদের ডাক্তার পরিচয় দিয়ে রোগীদের সাথে প্রতারণা করে আসছে। তাদের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
এসব অভিযোগ প্রসঙ্গে ফিরোজ আলম বলেন, আমরা যখন ট্রেনিং নিয়েছি, তখন ওই প্রতিষ্ঠান বলেছে আমরা ডা: লিখতে পারবো। কিন্তু এখন এই আইন নেই। তবে অনেকে লিখছে, তাই আমি লিখছি। আমার এসব সাইনবোর্ড ও কাগজপত্র আগের ছাপানো।
তবে তিনি পুলিশের হাতে ধরা পড়া বা তার চেম্বারে রোগী মারা যাবার বিষয়টি অস্বীকার করেন।