পুলিশ জনগণের সেবার জন্য, মামলা দেওয়ার জন্য না : এসপি জায়েদুল আলম
নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি, প্রেসবাংলা২৪ডটকম : সদ্য দায়িত্ব গ্রহণ করে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার সংবাদ সম্মেলনে বলেন, নারায়ণগঞ্জ অনেক বড়। এখানে অনেক ভালো কাজ হয় কিন্তু ভাল কাজ তো কখনো বলা হয় না। খারাপটাই বেশি আসে। যেখানে ভাল কাজ হয় সেখানে খারাপ কাজ বেশিই হয়। আমি বুকে হাত দিয়ে বলতে পারি আমি মিথ্যা মামলা মোটেও সহ্য করবো না। কাউকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসায় দেওয়ার জন্য পুলিশ না, কাউকে মামলা দেওয়ার জন্য পুলিশ না, কারো জমি দখল করার জন্য পুলিশ না। পুলিশ জনগণের সেবার জন্য।
রোববার (২৯ ডিসেম্বর) বিকেলে পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে গণমাধ্যমকর্মীদের সাথে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন এসপি জায়েদুল আলম।
সাংবাদিক উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, তথ্য দিলে একটু জাস্টিফাই করে দিবেন। মিথ্যা তথ্য দিবেন না। মুন্সীগঞ্জে কিছু সাংবাদিক ছিল যারা বললে আমি জাস্টিফাই করতাম না কারণ তারা যা বলতো তা ১০০ পার্সেন্ট সত্য হতো। কিছু সাংবাদিক ছিল যারা সব সময় সত্য বলতো। সাড়ে তিন বছরের চাকরি জীবনে কখনো তাদের মিথ্যা বলতে দেখিনি। তারা আমার খুব আপন হয়ে গিয়েছিলেন। আপনারাও এরকম আপন হয়ে যাবেন।
নবাগত এসপি বলেন, নারায়ণগঞ্জের নেগেটিভ নিয়ে আপনারা যা বলেছেন আমার কাছে তা নেগেটিভ মনে হয় না। নারায়ণগঞ্জ অনেক বড়। এখানে অনেক ভালো কাজ হয় কিন্তু ভাল কাজ তো কখনো বলা হয় না। খারাপটাই বেশি আসে। যেখানে ভাল কাজ হয় সেখানে খারাপ কাজ বেশিই হয়। আমি বুকে হাত দিয়ে বলতে পারি আমি মিথ্যা মামলা মোটেও সহ্য করবো না। কাউকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসায় দেওয়ার জন্য পুলিশ না, কাউকে মামলা দেওয়ার জন্য পুলিশ না, কারো জমি দখল করার জন্য পুলিশ না। পুলিশ জনগণের সেবার জন্য। ২০১৬ সালে সর্বপ্রথম আমি পুলিশের ডোপ টেস্ট চালু করেছি, ১০০ টাকায় পুলিশের চাকরি চালু করছিলাম।
গণমাধ্যমকর্মীদের সহযোগিতা কামনা করে জায়েদুল আলম বলেন, আমার ৫ ভাই মুক্তিযুদ্ধ করেছেন। আমার বড় ভাই শহীদ বীর বিক্রম। আমার খালাতো ভাই ও ফুফাতো ভাই তারাও বীর মুক্তিযোদ্ধা। কোন চেতনা, নীতি ও নৈতিকতা না থাকলে কোন কাজ করা সম্ভব না। আমি সমাজের সর্বস্তরের সাথে কথা বলবো। আমি প্রথমে মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে কথা বলেছি তারপর আমি ভেবেছি সবার আগে আপনাদের সাথে কথা বলা দরকার। কারণ আপনাদের কাছ থেকে আমি যে তথ্য পাবো তা আমি অন্য কারো কাছ থেকে পাবো না। আপনারাই বলতে পারবেন নারায়ণগঞ্জের প্রকৃত সমস্যা ও প্রকৃত সম্ভাবনাগুলো। আপনারাই পারবেন আমাকে সহায়তা করতে। আমি আপনাদের সহযোদ্ধা করতে চাই।
তিনি আরও বলেন, আমি সাংবাদিক ভাইদের এক চাই। যদি তাদের মধ্যে বিভেদ হয়ে যায় তাহলে সমাজে আর কিছু থাকবে না। সব জায়গায় ভাগ চলে না। যেকোন ব্যাপারে বা যেকোন দাবি আদায়ে আমি দেখেছি আপনারা সব সময় সত্যের পাশে থাকেন আমার কাছে সেটা ভালো লেগেছে।
জেলা পুলিশের উর্ধ্বতন এই কর্মকর্তা বলেন, আমার ১৬ বছরের চাকরি জীবনে আমি শতভাগ নিরপেক্ষতার সাথে কাজ করেছি। কাজের বেলায় আমি কারো কথা শুনি না। আমি যেটা বুঝবো সেটাই করবো। আমি সব সময় বলি আমাকে রাখেন আর না রাখেন, চাকরি থেকে বিদায় করে দেন কিন্তু আমি কারো কথা শুনি না। কোন তদবির করতে পারবেন না। আমার কাছে তদবির করছে কিন্তু কাজ হইছে একজনও বলতে পারবে না।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) পদোন্নতিপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) পদোন্নতিপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার মোঃ আব্দুল্লাহ আল-মামুন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) সুবাস চন্দ্র সাহা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক-সার্কেল) মেহেদী ইমরান সিদ্দিকী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (খ-সার্কেল) খোরশেদ আলমসহ জেলা পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।
সাংবাদিকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি রুমন রেজা, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু সাউদ মাসুদ, নারায়ণগঞ্জ সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুস সালাম, সাধারণ সম্পাদক আফজাল হোসেন পনটী, ইনকিলাবের স্টাফ রিপোর্টার হাফিজুর রহমান মিন্টু, মানবকণ্ঠের স্টাফ রিপোর্টার নাহিদ আজাদ, বিটিভির জেলা প্রতিনিধি মাহফুজুর রহমান, যুগান্তরের জেলা প্রতিনিধি রাজু আহমেদ, দৈনিক ইয়াদের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন, দৈনিক সচেতনের সম্পাদক কাজি ইসলাম মিয়া, অগ্রবানী প্রতিদিনের সম্পাদক স্বপন পোদ্দার, ভোরের কথার সম্পাদক আরিফুজ্জামান আরিফ প্রমুখ।