আমার কর্মীর গায়ে আচড় দিয়ে এক ঘন্টাও কেউ ঘুমাতে পারবেন না: শামীম ওসমান
ফতুল্লা প্রতিনিধি, প্রেসবাংলা২৪ডটকম: নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান হুশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, খেলা যদি ওই পর্যায়ে যায় তাহলে ডাক দিলে ফতুল্লার নেতাকর্মীরা প্রস্তুত আছেন। নারায়ণগঞ্জে মাটিতে কিন্তু মাটি দেখা যাবে না, শুধু মাথা দেখা যাবে। ক্ষমতার দম্ভে বলি না। শামীম ওসমানের থাকাবস্থায় তার কর্মীদের আঘাত করে নারায়ণগঞ্জ শান্ত থাকবে এটা ভাবলে বোকার স্বর্গে বাস করছেন। আমার জীবন থাকতে একটা কর্মীর গায়ে আচড় দিয়ে নারায়ণগঞ্জে এক ঘন্টাও কেউ আরামে ঘুমাতে পারবেন না। পরিষ্কার জানিয়ে দিলাম। আশা করি, আমার এই বক্তব্য হালকাভাবে নিবেন না।
শনিবার (৭ ডিসেম্বর) দুপুরে ফতুল্লায় নাসিম ওসমান মেমোরিয়াল পার্কে ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে দেয়া এক বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শামীম ওসমান বলেন, ভেবে দেখলাম, আমার কথা বলা উচিত। এই মামলা তারা খেয়েছে ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে। আজকের থেকে ২২ মাস আগে নারায়ণগঞ্জে হকারদের সাথে সংঘর্ষ হয়েছিল মেয়রের। হকারদের সাথে মেয়রের সংঘর্ষ হয় এটা আমি কোথাও শুনি নাই। হকার তো সাধারণ গরীব মানুষ। গরীব মানুষকে নিয়ে মারধর করা এটা কোন রাজনীতিকের কাজ কিনা আমি জানি না। ওই ঘটনায় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের কোন সম্পৃক্ততা ছিল না। আওয়ামী লীগের এক সময়ের তুখোর নেতা নিয়াজুল হেটে যাচ্ছিল, সে ঘটনার বিষয় জানতোও না। বিএনপি পরবর্তী সময়ে পারিবারিক চাপে রাজনীতি থেকে সরে যেতে হয়েছিল নিয়াজুলকে। এই নিয়াজুলের পরিচয় হচ্ছে, এই নিয়াজুলের বড় ভাই হচ্ছে নজরুল ইসলাম সুইট। নিয়াজুল গাড়ি নিয়ে যাচ্ছিল রাস্তায় ট্রাফিক জ্যাম দেখে আছরের নামায পড়ার উদ্দেশ্যে গাড়ি থেকে নেমে যায়। যদি হামলা করতে যেতো তাহলে একা যেতো না, সাথে ২০-২৫ জন লোক থাকার কথা। রাজনীতি করা ছেলে যখন দেখেছে গরীব মানুষকে মারা হচ্ছে তখন সে প্রতিবাদ করেছিল। পরে তার উপর হামলা করা হলো। ভিডিও ফুটেজ দেখেন। এই মামলা হাইকোর্ট থেকে ২২ মাস নিলো না। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়, আইন মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, আইজিপি, এসপি, ডিসি, ওসিকে বিবাদী করা হলো। এসব করে আমাদের নামে মামলা দেওয়া হলো।
শামীম ওসমান বলেন, নারায়ণগঞ্জ শীতলক্ষ্যা বুড়িগঙ্গার দিক দিয়ে যায়। এখানে খেলবেন না। চৌদ্দগোষ্ঠীকে নিয়ে গালি খেতে খেতে, ধৈর্য ধরতে ধরতে আর গায়ে লাগে না। নারায়ণগঞ্জ এখন একটা চারণভূমি হয়ে গেছে। ওয়ান ইলাভেন যারা এনেছিলো সেই তারা ঘনঘন নারায়ণগঞ্জে আসছে। নারায়ণগঞ্জের বদনাম হয় র্যাবের কারণে, দুর্ণীতিবাজ অফিসারদের কারণে। নারায়ণগঞ্জের মানুষ কিন্তু বদনাম করে না। বাইরে থেকে এসে বদনাম করে দিয়ে যায়।
শামীম ওসমান প্রশাসনকে উদ্দেশ্য করে বলেন, মামলা তদন্ত করেন। যদি মনে করেন আমি সংসদ সদস্য, আমাকে ধরতে সমস্যা হবে। তাহলে এই মুহূর্তে কথা দিচ্ছি, সংসদ সদস্য পদ ছেড়ে দেব। আর আমার কারণে যদি এই ঘটনা ঘটে থাকে তাহলে মূল আসামীতো আমি। সেই ঘটনার দিন আমি গিয়েছিলাম পার্টির সেক্রেটারি ওবাইদুল কাদের ভাইয়ের কথায়। তিনি বলেছিলেন, জলদি যাও, থামাও। ভাগ্য ভালো তিনি এটা বলেন নাই যে, ওবায়দুল কাদের হুমকের আসামী। বলা যায় না, কখন জানি সেটাও বলে দেয়।
শামীম ওসমান আরও, ২২ মাস পর কেনো লাফালাফি। আমি এখানে আসামী হিসাবে বক্তব্য রাখছি। যাকে গনায় ধরি না তার মামলার আসামী আমি। আমি তার নাম উচ্চারণ করতে চাই না, সামনে দেখা হবে। আসামী করা হয়েছে পোড় খাওয়া ত্যাগী নেতাদের। দল ক্ষমতায় না থাকলে নারায়ণগঞ্জের রাস্তায় চারা নাঁচতো, এমন ক্ষমতা নেতাকর্মীদের আছে।
ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম সাইফ উল্লাহ বাদলের সভাপতিত্বে সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই, প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত মো: শহীদ বাদল।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন-মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা, মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি চন্দন শীল, যুগ্ম-সম্পাদক শাহ নিজাম, সাংগঠনিক সম্পাদক জাকিরুল আলম হেলাল, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সিকদার মো: গোলাম রসুল, মুক্তিযোদ্ধা মিজানুর রহমান বাচ্চু, সাংগঠনিক সম্পাদক মীর সোহেল আলী, বন্দর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান এম এ রশিদ, সাধারণ সম্পাদক কাজিমউদ্দিন, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক ইয়াসিন মিয়া, মহানগর যুবলীগের সভাপতি শাহাদাত হোসেন ভুইয়া সাজনু, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এহসানুল হাসান নিপু, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মো: জুয়েল হোসেন, ফতুল্লা থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ফরিদ আহমেদ লিটন, সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন, ফতুল্লা থানা ছাত্রলীগ সভাপতি আবু মো: শরীফুল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক মো: মোশারফ হোসেন।