ফতুল্লা জেনারেল হাসপাতাল ও মুসলিমনগরে সেই ফার্মেসী সীলগালা

 

ফতুল্লা প্রতিনিধি, প্রেসবাংলা২৪ডটকম: ফতুল্লায় চিকিৎসকের অবহেলা দুইদিনের ব্যবধানে নবজাতক ও প্রসুতির মৃত্যুর ঘটনায় মোস্তাফিজ সেন্টারের ফতুল্লা জেনারেল হাসপাতালের সকল কার্যক্রম সাময়িক ভাবে বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. ইমতিয়াজ আহমেদ।

 

বুধবার (২৩ অক্টোবর) দুপুরে উপজেলার ফতুল্লা বাজার এলাকায় অবস্থিত ওই হাসপাতালে উপস্থিত হয়ে এই নির্দেশনা দেন তিনি। একইদিন ফতুল্লার মুসলিমনগরে জনপ্রিয় ফার্মেসী নামের একটি ফার্মেসীও সীলগালা করে দেয়া হয়। জনপ্রিয় ফার্মেসীর বিরুদ্ধে একজন প্রসূতিকে সিজার করানো পরে নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ রয়েছে।

 

এর আগে চিকিৎসকের অবহেলায় নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনায় মঙ্গলবার হাসপাতালটিতে পদির্শনে গিয়ে রোগীর সমস্ত কাগজপত্র দেখতে চান সিভিল সার্জন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিক ভাবে তা দেখাতে না পারায় ২৪ ঘণ্টার সময় বেঁধে দিয়েছিলেন ডা. মো. ইমতিয়াজ। আর ২৪ ঘণ্টা অতিবাহিত হওয়ার পরও কোনো কাগজপত্র হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দেখাতে না পারায় এবং হাসপাতালের অবব্যবস্থপনাসহ বেশ কয়েকটি অভিযোগে বুধবার দুপুরে সিভিল সার্জন হাসপাতালের সকল কার্যক্রম পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়া মঙ্গলবার রাতে চিকিৎসকের অবহেলায় সুমি আক্তার (৩২) নামের প্রসুতির মৃত্যু হয়েছে।

 

এদিকে জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. ইমতিয়াজ আহমেদের নেতৃত্বে অভিযানে অরো উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা.মো জাহিদুল ইসলাম, জেলা ড্রাগ সুপার ইকবাল হোসেন, জেলা হেলথ সুপার স্বপন দেবনাথ।

 

নারায়ণগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. ইমতিয়াজ আহমেদ সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, হাসাপাতালে পৃৃৃথক ভাবে নবজাতক ও প্রসুতির মৃত্যুর অভিযোগে হাসপাতালে অভিযান চালানো হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে নানা ধরণের অভিযোগ উঠে। এরমধ্যে এক নবজাতক চিকিৎসকের অবহেলায় মারা গেছেন এমন অভিযোগ পেয়ে সরেজমিনে হাসপাতাল পরিদর্শন করি। এবং কর্তৃপক্ষের কাছে নবজাতকসহ প্রসূতির ভর্তি সংক্রান্ত কাগজপত্র দেখতে চাইলে তারা সেটি দেখাতে পারেনি। পরে ২৪ ঘণ্টার সময় নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। কিন্তু এতেও তারা ব্যর্থ হয়।

তার পরের দিন বুধবার খবর পাই ঐ হাসাপাতালে সুমি আক্তার নামের আরেক প্রসুতির মৃত্যু হয়েছে। দুটি ঘটনার বিষয়ে হাসপাতালে অনেক অনিয়ম পাওয়া যায়।

 

ডা. ইমতিয়াজ জানান, একটি হাসপাতালে রোগী ভর্তি, চিকিৎসা সংক্রান্ত কাগজপত্র থাকবে না, এটা তো হতে পারে না। বিষয়টি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনার জন্য হয়েছে। আমরা আপাত সাময়িক ভাবে হাসপাতালটিকে বন্ধ ঘোষণা করেছি। পরবর্তীতে নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত এর সকল কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।

 

প্রসঙ্গত, ২০ অক্টোবর দুপুরের দিকে ডা. মোস্তাফিজুর রহমানের মালিকানাধিন ফতুল্লা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসকের অবহেলায় নবজাতক মারা গেছে বলে অভিযোগ উঠে। এ ঘটনায় ফতুল্লা থানায় অভিযোগ দায়ের করেও কিছু ব্যক্তির হুমকি সে অভিযোগ তুলে নিয়ে যায় নবজাতকের পিতা মাসুম। পরে এ ঘটনাটি নিয়ে বিপুল অঙ্কের টাকার বিনিময়ে নির্দিষ্ট কয়েকজন বিশেষ পেশার ব্যক্তি ধামাচাপা দেন। কিন্তু বিষয়টি গণমাধ্যমের নজরে এলে তা প্রতিবেদন আকারে প্রকাশ হলে টনক নড়ে সিভিল সার্জনের। ঐ ঘটনার দুইদিন পর মঙ্গলবার রাতে চিকিৎসকের অবহেলায় প্রসুতির মৃত্যু হয়। প্রসুতি সুমি আক্তার ফতুল্লা দাপাস্থ পাইলট স্কুল এলাকার আজিমের স্ত্রী। আর ঘটনায় স্থানীয় প্রভাবশালী ও একটি দালা চক্রের মাধ্যমে নিহতের পরিবারকে ম্যানেজ করে ঘটনাটি দামাচাপা দেয়।

 

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com