কামড় নয়, আচঁড়ও কেউ সহ্য করতে পারবে না: দুদক কমিশনার
রূপগঞ্জ প্রতিনিধি, প্রেসবাংলা২৪ডটকম: দুদককে এখন আর কেউ দন্তহীন বলার সাহস করবে না। দুদক এখন অনেক শক্তিশালী। এমনকি এখন দুদকের কামড় নয় আচঁড়ও কেউ সহ্য করতে পারবেনা বলে মন্তব্য করেছেন, দূর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কমিশনার মোজাম্মেল হক খান।
বুধবার (২৩ অক্টোবর) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রূপগঞ্জ উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে দুদকের গনশুনানী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
দুদক কমিশনার আরো বলেন, দুদক একটি শক্তিশালী স্বাধীন প্রতিষ্ঠান। যারা দূর্নীতি করছেন তারা সাবধান হয়ে যান। অনেক সম্পদের মালিক হয়েছিলেন তারাও পার পাননি। সম্রাটের সহযোগীরা পার পাবেনা। অপকর্মকারীদের তালিকা আরো দীর্ঘ হবে। দূর্নীতিবাজ দুষ্ট লোকজন সমাজে ভাল মানুষের লেবাস পড়ে থাকে। যে দূর্নীতি করবে তারা একদিন না একদিন ধরা পরবেই। এখন কেউ দূর্নীতি করে রেহাই পাবেনা। দূর্নীতিবাজদের অবৈধ সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা হবে। সমাজের প্রতি জায়গায় দূর্নীতি বন্ধ করতে হবে। মানুষ পৃথিবীতে আসে ক্ষনিকের জন্য অতিরিক্ত ভোগ বিলাসের জন্য না। আমরা গনশুনানীর মাধ্যমে মানুষের দূঃখ কষ্ট লাঘব করতে এসেছি। বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে দূর্নীতি রূখতে হবে। দেশে দূষ্ট লোকের সংখ্যা খুব বেশী নয়।
আমাদের দেশের প্রতিটি জেলায় দূর্নীতি দমন কমিশন গড়ে তোলা প্রয়োজন। এ সময় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সাবেক সেনা প্রধান ও ৩ নং সেক্টর কমান্ডার মেজর জেনারেল (অবঃ) কেএম শফিউল্লাহ (বীর উত্তম) বলেন, পাকিস্থানী শোষনের বিরুদ্ধে স্বাধীনতার প্রয়োজন পড়ে। আজকাল দূর্ণীতিবাজরা শোষণ শুরু করেছে। তাই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন করতে দুদককে আরো শক্তিশালী ভুমিকা পালন করতে হবে। জেলা প্রশাসক জসিম উদ্দিন তার বক্তব্যে বলেন, সরকারী সেবা প্রার্থীদের বিধি বিনা হয়রানীতে সেবা দিয়ে আসছে প্রশাসন। তারপরও কেউ হয়রানী হলে তার কথা সরাসরি শুনে দ্রুত নিষ্পত্তি করা হচ্ছে। এ সময় তিনি আরো বলেন, রূপগঞ্জের রাতের আধারে সাধারনের জমিতে ড্রেজার দিয়ে বালি ফেলে ভরাট করে নিচ্ছে। এসব অন্যায়ের বিরুদ্ধে সাধারন মানুষকে মুখ খুলতে হবে।
জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ তার বক্তব্যে বলেন, সাধারন মানুষের কথা শুনতে জেলা পুলিশ সুপারের দপ্তর সব সময় খোলা থাকে। তাদের কথা গুরুত্বের সহিত শুনা হয়। এ সময় ভুক্তভোগীদের কেউ থানা পুলিশ বা কারো দ্বারা হয়রানী হলে সরাসরি অভিযোগ করার পরামর্শ দেন তিনি। তিনি আরো বলেন,বিগত বিএনপি জামায়াত আমলে দূর্ণীতির দায়ে এ দেশ চ্যাম্পিয়ন হতো। এখন সে অভিযোগ নেই । উপজেলা দূর্ণীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ও গ্যাজেটভুক্ত সমাজসেবক মোজাম্মেল হক ভুঁইয়া বলেন, প্রভাবমুক্ত থেকে দূর্ণীতি প্রতিরোধে নির্ভয়ে চেষ্টা করে যাচ্ছি।
জেলা প্রশাসক জসিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে গনশুনানীতে উপস্থিত ছিলেন, সাবেক সেনা প্রধান ও সাবেক সংসদ সদস্য মেজর জেনারেল (অবঃ) কেএম শফিউল্লাহ (বীর উত্তম), জেলা পুলিশ সুপার বিপিএম পিপিএম বার হারুন অর রশীদ, ঢাকা দূর্নীতি দমন কমিশনের বিভাগীয় পরিচালক আক্তার হোসেন, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহজাহান ভুইয়া, উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মমতাজ বেগম, সহকারী কমিশনার (ভুমি) তরিকুল ইসলাম, রূপগঞ্জ উপজেলা দুর্ণীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি আলহাজ্ব লায়ন মোজাম্মেল হক ভুইয়া রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসানসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গসহ আরো অনেকে।
ঢাকা জেলা দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক মোঃ কামরুজ্জামান বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরে উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি ও উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় দুর্নীতি দমন কমিশনের কর্মকর্তারা ভুলতা, মুড়াপাড়া, মঠেরঘাটসহ বিভিন্ন এলাকায় ক্যাম্প বসিয়ে বিভিন্ন দুর্ণীতির বিষয়ে অভিযোগ গ্রহন করেন। গণসচেতনা বৃদ্ধির লক্ষ্যে দুর্নীতি প্রতিরোধ করতেই এ গণশুনানির আয়োজন করা হয়। গণশুনানিতে ১১০টি অভিযোগ উত্থাপন করা হয়। এসময় অভিযোগকারী এবং অভিযুক্তদের মুখোমুখী করা হয়। কয়েকটি অভিযোগ তাৎক্ষনিক সমাধান করা হয়। এছাড়া বাকি অভিযোগ গুলো তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়।