বিজিবি’র পাল্টা গুলিতে ভারতীয় মেজর নিহত (ভিডিওসহ)
প্রতিবেদক, প্রেসবাংলা২৪ডটকম: রাজশাহীর পদ্মা নদীতে ইলিশ শিকারের সময় ভারতীয় এক জেলেকে আটক করা হয়েছে। এই জেলে আটককে কেন্দ্র করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে।
ভারত বাংলাদেশ সীমান্তে বর্ডার গার্ডস বাংলাদেশ-বিজিবি’র চালানো গুলিতে এক ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীর মেজর বিজয় ভান সিং নিহত হয়েছেন বলে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম থেকে জানা গেছে। এনডিটিভির বরাতে জানা গেছে, নিহত বিএসএফ সদস্য হেড কনস্টেবল ছিলেন। বয়স হয়েছিল ৫০। তাঁর বাড়ি উত্তরপ্রদেশের ফিরোজাবাদ।
এ ঘটনায় এক বিএসএফ সদস্য নিহত এবং অন্য এক সদস্য হাতে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে দাবি করে স্থানীয়রা জানান, বিএসএফ হতাহতদের নিয়ে ভারতীয় সীমান্তের অভ্যন্তরে চলে গেছে। তবে বিজিবি ভারতীয় জেলে চাই মন্ডল ও তার নৌকা আটক করেছে।
এ বিষয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল মিডিয়াকে বলেন, বিজিবির তথ্য অনুযায়ী ভারতীয় জেলে বাংলাদেশের ৫০০ গজ ভিতরে ডুকে মাছ ধরছিল । এসময় বিজিবি জেলেদের পরিচয় জানতে পারে তাদের মধ্যে একজন বিএসএফ সদস্য তখন বিজিবি তাকে বলে যেহেতু আপনি আমাদের সিমান্তে ঢুকে গিয়েছেন আমরা ফ্লাগ মিটিংয়ের মাধ্যমে আপনাকে হেন্ডওভার করব। এই অবস্থায় তারা স্পীড বোর্ডের মাধ্যমে যখন তারা পালাচ্ছিল এবং ফায়ার করছিল তখন আমাদের বিজিবি কাউন্টার ফায়ার ওপেন করে । এবং সেই কাউন্টার ফায়ারে বিএসএফ এর একজন সৈনিক প্রান হারিয়েছে এবং আরেকজন আহত হয়েছে । এই ঘটনাটি হটাৎ করেই হয়েছে অনাকাঙ্খিত ভাবেই হয়েছে । আমাদের সাথে ভারতের সাথে ভালো একটা সম্পর্ক রয়েছে। এধরনে ঘটনা ঘটলে ফ্লাগ মিটিং এর মাধ্যমে সমস্যা সমাধান হয় কিন্তু তারা পালানোর চেষ্টা করেছে তখনি এ ঘটনাটি ঘটে । এ মূহুর্তে আমাদের বিজিবি এবং ভারতের বিএসএফ এর মধ্যে আলোচনা চলছে যাতে যা ঘটছে তার অবসান হয় ।
এদিকে বিজিবি রাজশাহীর ১ ব্যাটালিয়নের অতিরিক্ত পরিচালক মেজর আসিফ বুলবুল সাংবাদিকদের কাছে বিজিবি-বিএসএফ গুলি বিনিময়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে আটক জেলের নাম প্রকাশ করেননি এবং বিএসএফ সদস্য হতাহতের বিষয়ে কিছুই বলেননি। এছাড়া কত রাউন্ড গুলি বিনিময় হয়েছে তাও বলেননি তিনি।
এ বিষয়ে মেজর আসিফ বুলবুল সাংবাদিকদের বলেন, ‘একজন ভারতীয় জেলে বিজিবি’র হাতে আটক রয়েছেন। শুনেছি গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটেছে। বিকালে দুই বাহিনীর কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক ডাকা হয়েছে। পতাকা বৈঠকের পরই বিস্তারিত বলা যাবে।’
চারঘাট উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আরিফুল ইসলাম বলেন, প্রজনন মৌসুমের জন্য পদ্মায় ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এ অবস্থায় জেলেরা যেন পদ্মায় ইলিশ শিকার করতে না পারে, সে জন্য বিজিবি সদস্যদের নিয়ে তারা বৃহস্পতিবার সকালে অভিযানে যান। এসময় তারা দেখেন, পদ্মা-বড়ালের মোহনায় বাংলাদেশ সীমানার অভ্যন্তরে একটি নৌকায় করে তিনজন ইলিশ শিকার করছে।
তিনি আরও বলেন, তারা কাছাকাছি গিয়ে বুঝতে পারেন, ওই জেলেরা ভারতীয়। এসময় তারা ওই জেলেদের আটকের চেষ্টা করেন। এ সময় দুইজন জেলে নৌকা থেকে লাফিয়ে পড়ে সাঁতরে পালিয়ে যান। ফলে তারা নৌকাসহ একজনকে আটক করতে সক্ষম হন। এ সময় পালিয়ে যাওয়া জেলেরা গিয়ে বিএসএফকে বিষয়টি অবহিত করে। খবর পেয়ে বিএসএফ সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসেই গালাগালি শুরু করেন। বিজিবি সদস্যরা প্রতিবাদ করলে বিএসএফ সদস্যরা গুলিবর্ষণ করে। তখন আত্মরক্ষার্থে বিজিবির পক্ষ থেকেও পাল্টা গুলিবর্ষণ করা হয়। একপর্যায়ে বিএসএফ সদস্যরা পিছু হটতে বাধ্য হন। পরে তারা একজন ভারতীয় জেলে এবং তার নৌকা আটক করে বিজিবির চারঘাট করিডর সীমান্ত ফাঁড়িতে নিয়ে আসেন।