শিক্ষকদের বেতন স্কেলের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন
প্রতিবেদক, প্রেসবাংলা২৪ডটকম: ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটি ( স্বাধিনতা হলে) প্রাথমিক শিক্ষক ঐক্য পরিষদের উদ্দ্যোগে সহকারী শিক্ষকদের ১১তম ও প্রধান শিক্ষকদের ১০তম গ্রেডে বেতন স্কেলের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে ।
রোববার (৬ অক্টোবর) ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটি ( স্বাধিনতা হলে) এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে ।
সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির দাবি তুলে ধরা হলো –
প্রিয় সাংবাদিকবৃন্দ,
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে সবার প্রতি রইল আমার আন্তরিক সালাম ও শুভেচ্ছা। আপনারা জাতির দর্পনস্বরুপ। আপনাদের মাধ্যমে প্রাথমিক বিদ্যলয়ের শিক্ষকদের বেতন বৈষম্যের বিষয়টি বারবার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সহ কর্তৃপক্ষের কাছে তুলে ধরেছি। তাই আপনাদের মাধ্যমে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের যৌক্তিক দাবী অবিলম্বে বাস্তবায়নের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
প্রিয় সাংবাদিকবৃন্দ,
অমিত সম্ভাবনাময়ী আমাদের প্রিয় মাতৃভূমির স্বপ্নদ্রষ্টা বাংলাদেশের স্থপতি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে পরম শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি। আমরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ চিরকাল শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করি সেই মহানায়কের নাম যিনি ১৯৭৩ সালে একটি ঘোষণার মাধ্যমে ৩৬,১৬৫ প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয়করণের মাধ্যমে আমাদেরকে দিয়েছেন সরকারি কর্মচারির পদমর্যাদা ও আত্মমর্যাদা। তারই ধারাবাহিকতায় জাতির জনকের সুযোগ্য কন্যা, মাদার অব হিউম্যানিটি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৩ সালে ২৬,১৯৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয়করণ করেছেন।
প্রিয় সাংবাদিকবৃন্দ,
বর্তমান শিক্ষাবান্ধব সরকার শিক্ষার উন্নয়নে ব্যাপক কাজ করেছেন। সরকারি কর্মচারীদের বেতন দ্বিগুন করেছেন। তবে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন কাঠামোতে এখনও অনেক বৈষম্য রয়ে গেছে। বিশেষ করে সরকারি অন্যান্য বিভাগের কর্মচারীদের সাথে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন স্কেলের ব্যাপক ব্যবধান রয়েছে। ¯নাতক ও ¯নাতকোত্তর ডিগ্রী এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ডিপিএড কোর্স স¤পন্ন করে একজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ১১তম গ্রেডে (১২,৫০০/-) এবং একজন সহকারী শিক্ষক ১৪তম গ্রেডে (১০,৭০০/-) বেতন পান। অথচ অন্যান্য সরকারি ডিপার্টমেন্টে এর চেয়ে কম শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে প্রথমিক শিক্ষকদের তুলনায় কয়েক গ্রেড উপরের স্কেলে বেতন ভোগ করে থাকেন। যেমন স্ব্যস্থ্য বিভাগের একজন সেবিকা, কৃষি বিভাগের ব্লক সুপারভাইজার, ডিপ্লোামা প্রকৌশলী, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ক্যাটালগার, উচ্চমান সহকারী প্রথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের চেয়ে কয়েক গ্রেড উপরের স্কেলে বেতন পেয়ে থাকেন।
শুধু অন্য বিভাগের সাথে না, নিজ ডিপার্টমেন্টেও প্রথমিক শিক্ষকরা বৈষম্যের শিকার। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের সাথে সহকারী শিক্ষকদের বেতন ও পদমর্যাদাগত বৈষম্য বিরাজমান রয়েছে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৩ সালে প্রাথমিক শিক্ষাকে জাতীয়করণের পরবর্তীতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকের মাঝে বেতনের কোন ব্যবধান ছিল না। কিন্তু ২০০৬ সালে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের সাথে সহকারী শিক্ষকদের বেতন গ্রেডের পার্থক্য হয় ২ গ্রেড এবং ২০১৪ সালে ৩ গ্রেড পার্থক্য হয়। মূল বেতনের ব্যবধান হয় ১২০০ টাকা এবং ২০১৫ সালের অষ্টম জাতীয় পে-স্কেলে সে ব্যবধান দাঁড়িয়েছে ২৩০০ টাকা। অথচ ২০০৬ সালের পূর্বে প্রধান শিক্ষকদের সাথে সহকারী শিক্ষকদের মূল বেতনের পার্থক্য ছিল মাত্র ১০০/- টাকা। বর্তমানে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জাতীয় বেতন স্কেলের ১১তম গ্রেড (১২,৫০০/-) এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষকগণ জাতীয় বেতন স্কেলের ১৪ তম গ্রেড (১০,২০০/-) টাকা পান। ১৬ বছর চাকুরীর পর একজন প্রধান শিক্ষকের সাথে সহকারী শিক্ষকের বেতনে ব্যাবধান হবে ভাতা সহ প্রায় ২০,০০০ টাকা। বর্তমানে একজন প্রধান শিক্ষক যে স্কেলে চাকুরি শুরু করেন একজন সহকারী শিক্ষক ও একজন পদোন্নতিপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সেই স্কেলেরও ১ গ্রেড নিচে চাকুরি শেষ করেন, যা সহকারী শিক্ষক ও পদোন্নতিপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকদের জন্য চরম বৈষম্য। আমরা প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষক কেউই এই বৈষম্য চাই না। উল্লেখ্য যে, বর্তমান সরকারের বিগত নির্বাচনী ইশতেহারে প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন বৈষম্য নিরসণের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। আমরা এর দ্রুত বাস্তবায়ন চাই।
প্রিয় সাংবাদিকবৃন্দ,
সহকারী শিক্ষকদের ১১তম গ্রেডে বেতন স্কেল নির্ধারণ এবং প্রধান শিক্ষদের দ্বিতীয় শ্রেণীর গেজেটেড মর্যদা সহ ১০ম গ্রেডে বেতন স্কেল নির্ধারণের দাবিতে আমরা প্রাথমিক শিক্ষকরা দীর্ঘ দিন যাবৎ আন্দোলন করে আসছি। সরকারের বিভিন্ন দপ্তর থেকে বারবার দাবী বাস্তবায়নের আশ্বাস দিলেও আজও তা আলোর মুখ দেখেনি। তাই আমরা কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হচ্ছি। এরই প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের প্রায় সকল(১৪টি) প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠন ঐক্যবদ্ধ হয়ে আজকের সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বেতন বৈষম্য নিরসনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি হস্তক্ষেপ কামনা করছি। আমরা প্রাথমিক শিক্ষকরা আশা করছি, আগামী ১৩ই অক্টোবরের মধ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি হস্তক্ষেপে সহকারী শিক্ষকদের ১১তম গ্রেড এবং প্রধান শিক্ষকদের ১০ম গ্রেড বাস্তবায়ন করা হবে।
প্রিয় সাংবাদিকবৃন্দ,
আমাদের প্রত্যাশা, আপনাদের মাধ্যমে আমাদের বেতন বৈষম্য নিরসনের একদফা দাবী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সদয় দৃষ্টি গোচর হবে এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন বৈষম্য নিরসন হবে। পরিশেষে আপনাদের আবারও ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।
বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক ঐক্য পরিষদ
প্রধান কার্যালয় : এল মল্লিক কমপ্লেক্স, লেভেল-৭, ১২ পুরানা পল্টন, ঢাকা- ১০০০।
০১৫৩১-২০৩১২৫, ০১৭১২-৬১৫১০৮, ০১৭১৭-০৭৬৫৬১, ০১৭১১-২৭৭৭০৩ \২০০৭ @ তারিখঃ ০৬/১০/২০১৯খ্রি.
দাবী আদায়ে কর্মসূচি-
তারিখ বার সময় স্থান কর্মসূচি
১৪/১০/২০১৯ খ্রি. সোমবার সকাল ১০ টা থেকে ১২ টা নিজ বিদ্যালয় কর্মবিরতি
১৫/১০/২০১৯ খ্রি. মঙ্গবার সকাল ১০ টা থেকে ১ টা নিজ বিদ্যালয় কর্মবিরতি
১৬/১০/২০১৯ খ্রি. বুধবার অর্ধদিবস নিজ বিদ্যালয় কর্মবিরতি
১৭/১০/২০১৯ খ্রি. বৃহস্পতিবার পূর্নদিবস নিজ বিদ্যালয় কর্মবিরতি
এরপরেও দাবী আদায় না হলে আগামী
২৩/১০/২০১৯ খ্রি. বুধবার, ঢাকায় মহাসমাবেশের মাধ্যমে পরবর্তী লাগাতার কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
প্রেস বিজ্ঞপ্তি
কঠোর আন্দোলনে যাচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষকরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ১৪টি সংগঠনের মোর্চা বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক ঐক্য পরিষদের ব্যানারে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির স্বাধীনতা হলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের ১১তম গ্রেড ও প্রধান শিক্ষকদের ১০ম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে আজ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। প্রাথমিক শিক্ষক ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক আনিছুর রহমানের সভাপতিত্বে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ঐক্য পরিষদের সদস্য সচিব মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন, প্রধান সমন্বয়ক আতিকুর রহমান। সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন মুখপাত্র মোঃ বদরুল আলম, রবিউল হাসান ও আব্দুস সবুর। সংবাদ সম্মেলনে আরো বক্তব্য রাখেন, ঐক্য পরিষদের প্রধান উপদেষ্টা আনোয়ারুল ইসলাম তোতা, নীতি নির্ধারণী কমিটির চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ সরকার, আবুল কাশেম, কামরুল ইসলাম, গাজিউল হক, সিদ্দিকুর রহমান, রোজেল সাজু, রফিকুল ইসলাম, সিরাজুল ইসলাম ও আব্দুল হক প্রমুখ।
বার্তা প্রেরক
(মোঃ আনিসুর রহমান) (মোহাম্মাদ শামছুদ্দীন মাসুদ)
(বদরুল আলম)
আহবায়ক সদস্য সচিব
মুখপাত্র
০১৫৩১২০৩১২৫ ০১৮৪৩৫০৪৭১০