ছাত্রলীগের সাংবাদিক পেটানোর ঘটানায় নিন্দা ও প্রতিবাদ প্রেসবাংলা’র
প্রতিবেদক, প্রেসবাংলা২৪ডটকম: সরকারি তোলারাম কলেজের ভেতরে আবারও প্রেস নারায়ণগঞ্জের সাংবাদিক সৌরভ হোসেন সিয়ামকে পিটিয়েছে ছাত্রলীগের ক্যাডাররা। এ হামলার নিন্দা জানিয়েছেন প্রেসবাংলার সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল ইমরান ও প্রধান সম্পাদক মোহাম্মদ নেয়ামতউল্লাহ ।
শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দুপুর সোয়া ১২টার দিকে কলেজের বিজ্ঞান ভবনের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের ভেতরে এই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বিকেলে নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন নির্যাতনের শিকার সৌরভ। সে প্রথম আলো বন্ধুসভা নারায়ণগঞ্জের তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক।
প্রেসবাংলা পরিবার এ হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন । প্রেসবাংলার সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল ইমরান বলেন, এ ধরণের হামলা সুষ্ঠ ও ন্যায়নিষ্ঠ সাংবাদিকতাকে বাধাগ্রস্থ করবে । এ ধরনের হামলা কোন ভাবেই কাম্য নয় । যারা এই হামলা করেছে তাদের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি সেই সাথে আহত সাংবাদিক এর সুস্থতা কামনা করছি ।
ঐ ঘটনায় নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রলীগের প্রচার সম্পাদক পিয়াস প্রধান, সহ সম্পাদক শেখ হাবিবুর রহমান তামিম, উপ সাংস্কৃতিক সম্পাদক মেহেদী হাসান প্রিন্স, শাহরিয়ার পরশ ওরফে হৃদয়, স্বার্থক আহমেদ তোফাসহ অজ্ঞাত আরও ১০-১২ জনকে আসামি করে ফতুল্লা মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে৷ গত বছরের ২৩ এপ্রিল মহানগর ছাত্রলীগের ক্যাডাররা সাংবাদিক সৌরভকে তোলারাম কলেজের ছাত্র-ছাত্রী সংসদের ভেতরে আটকে ক্রিকেট ব্যাট দিয়ে পিটিয়ে আহত করেছিল। পরে অধ্যক্ষের রুমে নিয়ে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়৷ এ ঘটনায় ফতুল্লা মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরিও করা হয়েছিল। এদিকে শনিবারের মারধরের ঘটনার প্রেক্ষিতে সংবাদ সম্মেলনে সৌরভ বলেন, আমি তোলারাম কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ও নারায়ণগঞ্জের অনলাইন পোর্টল প্রেস নারায়ণগঞ্জ এ চিফ রিপোর্টার হিসেবে কর্মরত আছি।
শনিবার বেলা ১১টার দিকে কলেজে তৃতীয় বর্ষের ফরম ফিলাপ করতে চর্তুথ তলায় যাই। দুপুর ১২টার দিকে ছাত্রলীগের ক্যাডাররা ডিপার্টমেন্টের ভেতরে আসে এবং আমাকে অনুসরণ করতে থাকে৷ গত বছরের মারধরের ঘটনায় বিষয়টি সন্দেহ হওয়ায় আমি কলেজের এক শিক্ষককে জানিয়ে ভেতরেই বসে থাকি। দুপুর সোয়া ১২টার দিকে মহানগর ছাত্রলীগের প্রচার সম্পাদক পিয়াস প্রধান, সহ-সম্পাদক তামিম, মেহেদী প্রিন্স একই কমিটির উপ সাংস্কৃতিক সম্পাদকের নেতৃত্বে শাহরিয়ার পরশ, তোফাসহ ছাত্রলীগের ১০/১২ জন ক্যাডার ডিপার্টমেন্টের ভেতরেই আমাকে এলোপাথারি কিল-ঘুষি-লাথি মারতে থাকে। মারতে মারতে তারা বলে, এই কলেজেই পড়ো আবার সাংবাদিকতা করো। সততা দেখাও? নারায়ণগঞ্জের সব সাংবাদিকরে খাইয়া দিমু। একথা বলতে বলতে তারা মারতে মারতে আমাকে ডিপার্টমেন্টের বাথরুমের দিকে টেনে নিয়ে যেতে চাইলে আমি চিৎকার করতে থাকি। এক পর্যায়ে ওরা মারধর করে চলে যাওয়ার আগে আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে বলে, আজকে বাঁইচা গেলি। তোর পুলিশ বাবাদের গিয়ে এই কথা বললে একেবারে জানে মাইরা ফেলমু। পরে এক শিক্ষকের সহায়তায় আমি সেখান থেকে বের হয়ে আসি। সৌরভ বলেন, কোন কারন ছাড়াই তারা আমাকে মারধর করেছে। আমি আমার জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। এতে কলেজের শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। নারায়ণগঞ্জে সাংবাদিকতার পথ রুদ্ধ হচ্ছে।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে সরকারি তোলারাম কলেজের অধ্যক্ষ বেলা রাণী সিংহ বলেন, বিষয়টি আমি পুলিশের কাছে থেকে শুনেছি। এর আগেও নাকি এই ছেলেকে মারধর করা হয়েছিল। এর কারণ কি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷