ছাত্ররা হতে পারে সমৃদ্ধির ধারক বাহক
ইকবাল হোসেন, প্রেসবাংলা২৪ডটকম: শিরোনাম শুনে ঘটকা লাগতে পারে। আশা করি যতই নিচে যাবেন, ততই গভীরে যাবেন; রতœ পাবেন।
যদি ‘সেই’ ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ গঠন হয়-এদেশ সিঙ্গাপুর হতে ৯ মাসের বেশী লাগবে না, যুদ্ধ করে স্বাধীন হতে লাগলো মাত্র ৯ মাস! তাহলে অর্থনৈতিক উন্নতির জন্য ৯ মাসের বেশী লাগার কথা না।
তাহলে কোন ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ? ছাত্র দু’টি অক্ষর দিয়ে তৈরী শব্দ হলেও এখন এই ছাত্র লিখতে হয় শত শত অক্ষর দিয়ে। উদাহরণ দিব? দেই?
ছাত্রলীগ, ছাত্রদল, ছাত্রশিবির….
বড় বড় দল, বড় বড় নেতারা ব্যক্তি স্বার্থে, দলের স্বার্থে, চেয়ারের স্বার্থে তাদেরকে ব্যবহার করছে, ব্যবহার হচ্ছে। সারাদেশে ১০/১৫ জন ছাত্রনেতা হয়তোবা খুব সমৃদ্ধশালী হয়। তাদেরকে খন্ড খন্ড আন্দোলনের মাধ্যমে এক একটি দল দলের গদি মজবুত করার জন্য শত শত টুকরায় পরিণত। এর খেসারত দিচ্ছে দেশের ১৬ কোটি জনগণ।
ছাত্র রাজনীতি হওয়া চাই এমন-তারা সারাজীবন থাকবে সরকারের গঠনমূলক সমালোচনায়, তারা দেশের জন্য প্রণীত আইন, ক্ষতিকর সামাজিক-অর্থনৈতিক ও অনৈতিক কাজের বিরোধিতা করবেন। করবেন ভালো কাজের সহযোগিতাও।
দেশ দ্রুত সমৃদ্ধির পথে নিয়ে যেতে শক্ত দু’টি বিরোধী দল থাকা চাই। একটি বিরোধী দল থাকবে সংসদে, অন্যটি থাকবে রাজপথে। দেশের দলহীন ও কোন কোন দলের সাথে সম্পৃক্ততাবিহীন মেধাবীদের নিয়ে গড়ে তোলা ‘সেই’ ছাত্রসংগঠন কাজ হবে যেখানে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, অনৈতিক কার্যকলাপ হবে সেখানেই গণতন্ত্র পন্থায় আন্দোলন গড়ে তোলা। সে আন্দোলনে যেনো জনগণের জানমালের ক্ষতি সাধন না হয়। তখন সরকারের উচিত হবে তাদের প্রাধান্য দেয়া ছাত্রদের সাথে আলোচনায় বসে ‘পন্থা’ বের করা। পৃথিবীতে একটিই ভাষা-বাংলা ভাষা; এই ভাষার জন্য হাজার হাজার ছাত্র প্রাণ দিয়ে পৃথিবীর বুকে বাংলা ভাষা রক্ষা করেছেন। এই বাংলা ভাষা অর্থাৎ মাতৃভাষা রক্ষা হয়েছে কারণ একটি তখন ‘ছাত্র’ লিখা হতো দুই অক্ষরে, বাংলা ভাষার কারণে পালিত হয় সারা দুনিয়া ব্যাপি আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস। ভাষার জন্য এতো মেধাবী ছাত্র পৃথিবীর কোনো দেশে প্রাণ বিসর্জন দিয়েছেন আমার জানা নাই। ৬ দফা আন্দোলন সেখানেও ছাত্র সংগ্রাম ঐক্য পরিষদ, ৬৯’র গণঅভ্যূত্থানে সেখানেও ছাত্রদের অবদান। স্বাধীনতা সংগ্রাম, মুক্তিযুদ্ধ, অতঃপর ৩০ লক্ষ শহীদের বিনিময়, ২ লক্ষ মা বোনের ইজ্জত জলাঞ্জলি অতঃপর দেশ স্বাধীন। এখানেও ছাত্রদের বিশেষ ভূমিকা। রক্তাক্ত, তলাবিহীন, অর্থনৈতিক, দেশকে মেধাবী শূন্য করতে পাক বাহিনী হত্যা করে। উদ্দেশ্য একটিই জাতিকে মেধাবী শূন্য করা। তারা জানত মেধাবীদের শেষ করলে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবে না। পাকিস্তানিরা জানতো দেশের জন্য ছাত্ররা কতোটা ফ্যাক্টর।
আজ দেশ স্বাধীন প্রায় ৫০ বছর ছাত্র রাজনীতি কি? কি প্রয়োজন, তাদের, কি করবো তাদের দিয়ে, কিভাবে ঢেলে সাজানো যায় দেশের জন্য, অর্থনৈতিক উন্নতির জন্য, পৃথিবীতে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবার জন্য, ১৬ কোটি মানুষের সুখ শান্তির জন্য আজ তাদের ভুলে গেছি, ভুলিয়ে দিচ্ছি। দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে পুর্নগঠনের জন্যও ছাত্রদের সুশৃঙ্খল বিশাল অবদান। আসা যাক ছাত্রদের বর্তমান পরিস্থিতি। আওয়ামীলীগ দলীয়ভাবে সমস্যায় পড়লে ডাকেন ছাত্রলীগকে, বিএনপি সমস্যা হলে ডাকে ছাত্রদলকে, জাতীয় পার্টির ছাত্র সমাজকে, জামায়াততো পুরোটাই নির্ভরশীল ছাত্রশিবিরের উপর। এমন অনেক ছোট ছোট ছাত্র সংগঠন আছে। আমি মনে করি বিগত দিনের ক্লান্তিকাল আর আসবে না, ইনশাআল্লাহ। এখনো সময় আছে তাদেরকে একত্রিত করে দেশের কাজে, দেশের মানুষের কাজে, ১৬ কোটি মানুষের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পথে কাজে লাগানো।
ছাত্র সংগ্রাম ঐক্য পরিষদের মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নতির জন্য শুধু সিঙ্গাপুর কেনো ইউরোপের মতো সমৃদ্ধিশালী দেশ হতে ৯ মাস অনেক সময়। এই কলাম লিখার অপরাধে অভিযুক্ত, অথবা গুম, খুন হওয়াটা অস্বাভাবিক কিছু না। তবুও লিখলাম আমি একজন সাধারণ, নগন্য ১৬ কোটি মানুষের মধ্যে অতি দরিদ্র, জ্ঞানহীন মেধাশূন্য।
লেখক: সংবাদকর্মী।