সোনারগাঁয় ইমামকে খুন করে আরেক ইমাম!

বিশেষ প্রতিনিধি, প্রেসবাংলা২৪ডটকম: নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয় ইমাম দিদারুল খুনের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। হত্যাকা-ের সাথে জড়িত নিহত ইমামের বন্ধু আরেক ইমাম ওহিদুর রহমানকে (৩১) মাদারীপুরের শিবচর থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। স্বর্ণের ব্যবসায় বিনিয়োগ করা টাকা ফেরত চাওয়ায় সুপরিকল্পিতভাবে দিদারুলকে খুন করে ওহিদুর। বুধবার (২৮ আগস্ট) বিকালে আটক ওহিদুরকে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে গণমাধ্যমকর্মীদের সামনে হাজির করা হয়। ওহিদুর রহমান খুলনার নড়াইলের কলাবাড়ীয়া পশ্চিমপাড়া গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক ওরফে টুকু শেখের ছেলে। সে মাদারীপুরের শিবচরের স্থানীয় একটি মসজিদে ইমামতি করতো।সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার হারুণ অর রশীদ জানান, দিদারুল ও ওহিদুর পরস্পর বন্ধু। দু’জনেই ইমামতি করেন। দু’জন মিলে স্বর্ণের ব্যবসায় নামেন। গ্রামের বাড়ি থেকে গবাদি পশু বিক্রি করে এ ব্যবসায় তিন লাখ টাকা বিনিয়োগ করেন দিদারুল। ব্যবসার টাকা ফেরত চাওয়ায় তাকে খুন করে ওহিদুর।

 

পুলিশ জানায়, গত ২২ আগস্ট সোনারগাঁ মল্লিকপাড়া গ্রামের নারায়ণদিয়া বায়তুল জালাল জামে মসজিদের ইমাম দিদারুল ইসলামকে গলা কেটে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। নিহত দিদারুল খুলনার তেরখাদা থানার রাজাপুর এলাকার আফতাব ফরাজির ছেলে। এর আগে গত ২৬ জুলাই তিনি মল্লিপাড়া গ্রামের ওই মসজিদটিতে ইমাম হিসেবে নিয়োগ পান।

 

সংবাদ সম্মেরনে জানানো হয়-অনেকটা ক্লুলেস এ ঘটনাটি রহস্য উদঘাটনে প্রযুক্তির ব্যবহার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ওহিদুর হত্যাকা-ের কথা স্বীকার করেছে। স্বর্ণের ব্যবসা নিয়েই ইমাম দিদারুল ও তার বন্ধু ওহিদুরের মধ্যে দ্বন্দ্ব হয়। পরে দিদারুল ব্যবসা থেকে সরে আসতে এবং বিনিয়োগের উদ্দেশ্যে দেওয়া টাকা ওহিদুরের কাছে ফেরত চায়। এতেই তাকে হত্যা করতে পরিকল্পনা সাজায় ওহিদুর।

 

পরিকল্পনা মতে, হত্যাকান্ডের আগের দিনও দিদারুলের সঙ্গে দেখা করে তার সঙ্গে চা খেয়ে হত্যার পরিকল্পনা সাজিয়ে যায় ঘাতক বন্ধু। হত্যাকান্ডের দিন এশার নামাজের পর রাতের খাবার প্রস্তুত করার সময় দিদারুলকে কিছু নেশাজাতীয় দ্রব্য খাইয়ে অচেতন করা হয়। এরপর তাকে গলাকেটে হত্যা করে ওহিদুর। একটি চিরকুট লিখে ফেলে রেখে দরজায় তালা দিয়ে ঘাতক পালিয়ে যায়। হত্যাকা-টি নিষিদ্ধ সংগঠন হিজবুত তাওহীদের ঘাড়ে চাপানোর পরিকল্পনা হিসেবে ওই চিরকুটটি লিখে রেখে যায় ওহিদুর।

 

ঘটনার পরে নিহত দিদারুলের ভাই মিজানুর রহমান সোনারগাঁ থানায় একটি মামলা দায়ের করে।

 

সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান বলেন, মূল আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মামলাটির বিষয়ে এখনও তদন্ত চলছে। ওহিদুরের সাথে অন্য কেউ জড়িত কী-না তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

 

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com