নড়াইলে হারাতে বসেছে মৃৎশিল্প!
নড়াইল প্রতিনিধি, প্রেসবাংলা২৪ডটকম: নড়াইলের মৃৎশিল্পীরা ভালোবাসা ও মমতা দিয়ে নিপুন হাতে কারু কাজের মাধ্যমে মাটি দিয়ে তৈরি করে থাকেন নানা তৈজসপত্র। তাদের জীবন জীবিকার হাতিয়ার হলো মাটি। কিন্তু কালের বিবর্তনে তাদের ভালোবাসার জীবিকা ফিকে হতে বসেছে। দিন যতই যাচ্ছে, ততই বাড়ছে আধুনিকতা। আর এই আধুনিকতা বাড়ার সাথে সাথে হারিয়ে যাচ্ছে মাটির তৈরি শিল্পপণ্যগুলো। এক সময় মাটির তৈরি তৈজসপত্রের প্রচুর ব্যবহার ছিল। সেই তৈজসপত্রের স্থান দখল করে নিয়েছে এ্যালুমিনিয়াম ও প্লাস্টিকের তৈরি তৈজসপত্র। এ সবের দাম বেশি হলেও অধিক টেকসই। তাই টাকা বেশি হলেও এ্যালুমিনিয়াম ও প্লাস্টিকের তৈরি তৈজস পত্রই কিনে থাকে সাধারণ মানুষেরা। কাঁচ, প্লাস্টিক আর মেলামাইনের ভিড়ে এখন মাটির তৈরি ঐ জিনিসপত্রগুলো প্রতিযোগীতায় টিকে থাকতে পাড়ছে না। সেই সাথে এই শিল্পের সাথে জড়িতের জীবন ধারনও কঠিন হয়ে পড়ছে। মানবতার জীবন যাপন করছে প্রতিভাবান নড়াইলের মৃৎ শিল্পীরা। ফলে কালের বিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছে ঐতিহ্যবাহী নড়াইলের মৃৎশিল্প।
সরেজমিনে ঘুরে এসব চিত্র দেখা গেছে।
শিল্পীরা মাটি দিয়ে তৈরি করছেন পুতুল, ফুলের টব, কুয়ার পাত, হাঁড়ি পাতিল সহ বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র। পরে সেগুলোকে তারা নড়াইল শহরের দোকান এবং বাসা বাড়িতে বিক্রয় করে থাকেন কিন্তু এখন এ শিল্পের ব্যবহার তেমন চোখেই পরে না। আগে নড়াইলের মিষ্টি মাটির পাত্রে বিক্রি করা হত। বর্তমানে এক মাত্র দৈ ছাড়া অন্য কোন মিষ্টান্ন বিক্রির ক্ষেত্রে মাটির পাত্র ব্যবহার করা হয় না। এখন সৌখিন জিনিসপত্র এবং কুয়ার পাতই একমাত্র ভরসা। কিন্তু সঠিক দাম নাম পাওয়ায় আর বর্তমান অবস্থায় কাজ করতে হিমশিম খাচ্ছে এ সকল কারিগররা। বর্তমানে নড়াইলের গ্রাম অঞ্চলের বিভিন্ন উৎসব, মেলায় তৈরি খেলনা পুতুল ছাড়া অন্য কোন এ শিল্পের গ্রাহক নেই বললেই চলে। অ্যালুমিনিয়াম, প্লাস্টিক ও স্টিলের জিনিসপত্রের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে না পেরে নড়াইলের মৃৎশিল্প আজ বিলুপ্তির মুখে পড়েছে। এ পেশায় জড়িত বিশেষ করে এটাই যাদের জীবিকার একমাত্র অবলম্বন তাদের জীবনযাপন একেবারেই কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।
এ প্রসঙ্গে জয়ীতা পাল বলেন, বর্তমানে এলুমিনিয়াম ও প্লাস্টিকের কারনে মাটির তৈরী জিনিস পত্র চলে না। ফলে আমাদের জীবন ধারন কষ্টকর হয়ে পড়েছে। তবুও দু’বেলা দু’মুঠো খাবার জন্য আমরা এই কাজ করে যাচ্ছি। সরকার যদি সুদ মুক্ত ঋণের ব্যবস্থা করতো তা হলে বাপ-দাদার এই ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে পারতাম। পরিবার পরিজন নিয়ে চলতে পারতাম।