ছাত্রলীগের নেতারাই আসছেন যুবলীগের নেতৃত্বে!
প্রতিবেদক, প্রেসবাংলা২৪ডটকম: দীর্ঘদিন ধরে সম্মেলন নেই, শেষ কবে সম্মেলন হয়েছে নেতারাও দিন তারিখ মনে করতে পারছেন না। ফলে একধরণের নেতৃত্ব জট সৃষ্টি হয়েছে আওয়ামী লীগের অন্যতম সহযোগী সংগঠন-যুবলীগে। নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত মো: শহীদ বাদল ইতোমধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি আব্দুল কাদির জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি হবার পরে মূলত: এই দুই শীর্ষ নেতা আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিয়েই ব্যস্ত। যুবলীগের কার্যক্রমে তাদের কোন মন নেই। বিষয়টি আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারাও অবগত আছেন। এই জটিলতা ও নেতৃত্ব জট সরাতে শিগগিরই জেলা যুবলীগ ও থানা যুবলীগের সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া আগাচ্ছে। আর যুবলীগের মূল পদগুলোতের ছাত্রলীগের সাবেক নেতারাই আসছেন-এটা অনেকটাই নিশ্চিত।
জেলা যুবলীগের সভাপতি হিসেবে ইতোমধ্যে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এহসানুল হাসান নিপুর নাম জোরেশোরে উচ্চারিত হচ্ছে। শুধু নিপু নয়, যুবলীগের আগামীর নেতা হিসেবে যাদের নাম আসছে এরা প্রত্যেকেই ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান নেতা।
জেলা কমিটি ও ফতুল্লা থানা যুবলীগের কমিটি নিয়েই আলোচনা বেশি। অন্যান্য থানা গুলোতেও আলোচনা যে নেই, তা নয়।
ফতুল্লায় আগামীতে নেতৃত্বের তালিকায় নামের দীর্ঘ সারি হলেও মূলত: যুবলীগের ফতুল্লা কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফাইজুল ইসলাম, ফতুল্লার আবু মো: শরীফুল হক, বক্তাবলীর রাশেদুল হক রাসেল, ইউপি সদস্য রাসেল চৌধুরী, তক্কার মাঠের জুয়েল হোসেন, এনায়েতনগরের মোশারফ হোসেন, কাশীপুরের এম এ মান্নান, আনিসুর রহমান শ্যামল, ইউপি সদস্য শামীম আহমেদ, শরীয়ত উল্লাহ বাবু।
যুবলীগের কমিটি প্রসঙ্গে জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত মো: শহীদ বাদল প্রেসবাংলাকে বলেন, আমরাও চাই, আগামীতে যোগ্য ও মেধাবী নেতা আসুক। আমাদের দলে শুধু ছাত্রলীগে নয়, অন্যান্য অঙ্গসংগঠনগুলোতে মেধাবী যোগ্যরা আছেন। নেতৃত্বে প্রতিযোগিতাও আছে। সবমিলিয়ে আগামীতে একটি শক্তিশালী যুবলীগের কমিটি হবে-এটা সবার প্রত্যাশা।
এ প্রসঙ্গে ফতুল্লা থানা যুবলীগের সভাপতি মীর সোহেল প্রেসবাংলাকে বলেন, প্রক্রিয়াটি আগাচ্ছে, তবে ধীর গতিতে। কারণ থানা কমিটি করতে হলে আগে জেলা কমিটি ভেঙ্গে দিতে হবে। নতুন জেলা কমিটি সবগুলো থানা কমিটি ভেঙ্গেই সম্মেলন বা নতুন কমিটি হবে। তবে কাজ চলছে।
ফতুল্লা থানা যুবলীগের আগামীতে বেশির ভাগ নেতাই ছাত্রলীগ থেকে আসছে-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মেধা ও যোগ্যতা থাকলে যে কোন অঙ্গ সংগঠন থেকেই আসতে পারে। তবে কমিটিকে ছাত্রলীগের সাবেক নেতাদের প্রাধান্য থাকতে পারে।
যুবলীগের আগামী কমিটি নিয়ে সবচেয়ে আলোচনায় থাকা ফতুল্লা থানা ছাত্রলীগের আবু মো: শরীফুল হক। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আশা করা হচ্ছে খুব অল্প সময়ের মধ্যে যুবলীগের কমিটির প্রক্রিয়া শুরু হবে।
তিনি বলেন, আপনি জানেন, আমরা মূলত: নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের রাজনীতি করি। ফতুল্লায় যুবলীগের নেতা কে হবেন, তিনিই ভাল জানেন। আমরা যারা পদ-প্রত্যাশী কর্মীরা আছি, আমরা যে যার মতো কাজ করে যাচ্ছি।
ফতুল্লা থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সিনিয়র সহসভাপতি রাশেদুল হক রাসেল বলেন, পরীক্ষিত ও ত্যাগীরাই যেন নেতৃত্বে আসে। দলের নাম ভাঙ্গিয়ে নানা অপকর্মকারীদের যেন কমিটিতে জায়গা না দেয়া হয়।
ফতুল্লা থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ মান্নান কমিটি গঠণের বিষয়ে অনেকটা হতাশা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, আমি জানি না আসলে কবে কমিটি হবে। বিষয়টি উর্ধ্বতন নেতারাই ভাল বলতে পারবেন।
ফতুল্লা থানা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মোশারফ হোসেন বলেন, দলের দু:সময়ে যারা ঘাম ঝরিয়েছেন, দলের হাল ধরেছেন তারাই আগামীতে এ কমিটি মূল্যায়িত হবেন এটা আমার বিশ্বাস। কারণ সুসময়ে অনেকেই আসেন-হালুয়া-রুটি খান আবার সময় মতো কেটে পড়েন। আশাকরি দলের শীর্ষ নেতারা এ বিষয়ে সতর্ক থাকবেন। আমি মনে করি দল যাকে যোগ্য মনে করবেন তাকেই কমিটিতে আনবেন।
বক্তাবলী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা রাসেল চৌধুরী বলেন, প্রকৃত আওয়ামী পরিবারের সদস্যদের নিয়ে যেন কমিটি গঠন করা হয়। কারণ এখন হাইব্রীড ও কাউয়াদের সময়। তাদের দখলে চলে যাচ্ছে দলটি। জেলার শীর্ষ নেতারা অবশ্যই কমিটি গঠনের সময় এ বিষয়টিকে যেন গুরুত্ব দেন এবং একটি শক্তিশালী কমিটি গঠন করেন ।
ফতুল্লা থানা ছাত্রলীগের সহসভাপতি শরীয়ত উল্লাহ বাবু বলেন, দীর্ঘদিন ধরে দলের জন্য পরিশ্রম করছি। দু:সময়ে মাঠে ছিলাম। আশা করছি দল আমাকে মূল্যায়ণ করবে।