বিশ্বকাপ ইংল্যান্ডের, জয় ক্রিকেটের!
ক্রিড়া প্রতিবেদক, প্রেসবাংলা২৪ডটকম: বিশ্বকাপ ইংল্যান্ডের জয় ক্রিকেটের। অবিশ্বাস্য! অসাধারণ!! ব্যাখা করার উর্ধ্বে চলে গেছে আজকের ফাইনাল ম্যাচ। ঐতিহাসিক লর্ডসে ইংল্যান্ড-নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার যে ফাইনাল ম্যাচ দেখেছে বিশ্ব, তা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। টানটান উত্তেজনামূলক লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত বাউন্ডারি ব্যবধানে জিতে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে ক্রিকেটের জনক ইংল্যান্ড।
ক্রিকেটের ইতিহাসে এমন ম্যাচ আর কখনোই দেখেনি বিশ্ব। আর দেখবেও কিনা, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। এমন একটা ম্যাচেও না হেরেও জিততে না পারার আক্ষেপটা পোড়াবে নিউজিল্যান্ডকে। অর্থাৎ বিশ্বকাপটা ইংল্যান্ড জিতেছে; কিন্তু হারেনি নিউজিল্যান্ডও।
জমজমাট এই ম্যাচে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন। হেনরি নিকোলসের ৫৫ রান ও টম ল্যাথামের ৪৭ রানের উপর ভর করে ২৪১ রানের পুঁজি দাঁড় করায় কিউইরা।
জবাব দিতে নেমে ১০০ রানের মধ্যেই চার উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে ইংল্যান্ড। কিন্তু জস বাটলার ও বেন স্টোকসের ১১০ রানের জুটিতে জয়ের পথে এগোতে থাকে তারা। তবে ম্যাচের অন্তিম মুহূর্তে ঝটপট কয়েকটি উইকেট তুলে নিয়ে ম্যাচে ফিরে আসে নিউজিল্যান্ড।
এক পর্যায়ে শেষ ওভারে জয়ের জন্য ১৫ রান দরকার পড়ে ইংলিশদের; কিন্তু ট্রেন্ট বোল্টের সেই ওভারে ১৪ রানের বেশি নিতে পারেনি তারা। ফলে টাই হয় ম্যাচ এবং বিশ্বকাপের ইতিহাসে প্রথমবারের খেলা গড়ায় সুপার ওভারে।
সেই সুপার ওভারে আগে ব্যাট করতে নেমে জস বাটলার ও বেন স্টোকসের কল্যাণে ১৫ রান তোলে ইংল্যান্ড। যেখানে তাদের বাউন্ডারি ছিল দুটি। তাই প্রথমবারের মত বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন হতে কিউইদের দরকার ছিল এক ওভারে মাত্র ১৬ রান।
কিন্তু কিউইদের সেই আশা পূরণ করতে পারলেন না মার্টিন গাপটিল ও জিমি নিশাম। শেষ বলে প্রয়োজন থাকা ২ রান নিতে গিয়ে এক রান নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে তাদের। অপর প্রান্তে রান আউট হয়ে যান গাপটিল।
নির্ধারিত ওভারে ম্যাচের ফলাফল টাই। সুপার ওভারেও টাই। তাহলে জিতলো কে? এমন আন্দাজটা অনেক আগেই করে ফেলেছেন, যখন বাটলার গাপটিলের রানআউট করে ভোঁ দৌড় দিলেন। হ্যাঁ, বিশ্বকাপ ইংল্যান্ডই জিতেছে আর সেটা হলো বাউন্ডারির ব্যবধানে। কারণ, পুরো ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের (১৪ চার, ২ ছক্কা) থেকে ৮ টি বাউন্ডারি বেশি মেরেছে ইংলিশরা (২২ চার, ২ ছক্কা)।
ঠিক ফুটবলে টাইব্রেকারের মত। অফিসিয়ালি ফুটবলে টাইব্রেকারের ম্যাচগুলোকে ড্র ধরা হয়। কিন্তু নকআউট যেহেতু, জয়-পরাজয় নির্ধারণে টাইব্রেকার। এখানেও সুপার ওভারেও যখন ম্যাচের নিষ্পত্তি হলো না, তখন চ্যাম্পিয়ন বেছে নিতে আইসিসির একেবারে অন্তিম নিয়ম, বাউন্ডারির ব্যবধান- সেটাই প্রয়োগ করতে হয়েছে। সুতরাং, ম্যাচ না হেরেও বিশ্বকাপ জেতা হলো না নিউজিল্যান্ডের।
ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপ জয়টা ইতিহাসের পাতায় লেখা থাকলেও, সেখানে এটাও লেখা থাকবে যে- এই ম্যাচে হারেনি কেউ। অর্থাৎ টাই। যদিও বিশ্বকাপ জিতেছে ইংল্যান্ড কিন্তু ম্যাচ হারেনি নিউজিল্যান্ড।