ফতুল্লার বক্তাবলীর মাদ্রাসার অধ্যক্ষের অপসারণ দাবিতে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন

প্রেসবাংলা ২৪. কম: নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার বক্তাবলী ইউনিয়নের বক্তাবলী ইসলামিয়া সিনিয়র আলিম মডেল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ওয়ালিউল্লার অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন বের করেছে শিক্ষার্থীরা। মাদ্রাসার অধ্যক্ষ অলিউল্লাহকে জামায়াত নেতা হিসাবে আখ্যায়িত করেছেন মানববন্ধন করার পিছনে যাদের ইন্ধন রয়েছে। তবে মাদ্রাসার লেখা পড়া ধ্বংস করতে রাজনৈতিক খেলায় মেতে উঠেছে একটি বিশেষ মহল।

সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারী) সকালে মাদ্রাসার সামনে এ বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এদিকে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ওয়ালিউল্লাহকে সরিয়ে কমিটির সভাপতি হওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে উঠছেন স্থানীয় ব্যবসায়ী আব্দুল বারেক। তিনি সরকারের দলের প্রভাব খাটিয়ে সভাপতি হওয়ার জন্য একটি সিন্ডিকেট করে নানা কুটকৌশল চালাচ্ছেন। ওয়ালিউল্লাহকে শায়েস্তা করতে মোটা অংকের টাকা খরচ করছে এবং কয়েকজন শিক্ষককে হাত করে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের দিয়ে মানববন্ধন করিয়েছেন বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। এছাড়াও ওয়ালিউল্লাহকে শায়েস্তা হলে মাদ্রাসার শিক্ষক রফিক অলিউল্লাহর আসনে বসতে স্বপ্ন দেখছেন। তাদের দুইজনের নীলনকশায় অধ্যক্ষ অলিউল্লাহর অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা জানায়, জেলার অন্যতম প্রাচীন ও ঐতিহাসিক এক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বক্তাবলী ইসলামিয়া সিনিয়র আলিম মডেল মাদ্রাসা। বিগত ১৯৭০ সালে প্রতিষ্ঠিত মাদ্রাসাটি একসময় জেলার শ্রেষ্ঠ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মর্যাদা লাভ করেছিলো। কিন্তু অযত্ন অবহেলা আর দায়িত্বরত অধ্যক্ষ আ.ন.ম ওয়ালীউল্লার দূর্নীতির কারনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি আজ ধ্বংসের পথে। একসময় যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আঙ্গিনা হাজারের অধিক শিক্ষার্থীর উপস্থিতিতে মুখরিত থাকতো। এখন সেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা মাত্র তিন শতাধিক। এই বেহাল অবস্থার জন্য অধ্যক্ষ ওয়ালীউল্লাহকে দায়ী করছেন বর্তমান এবং প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা। অধ্যক্ষ অলিউল্লা মাদ্রাসার নাম করে বিভিন্ন স্থান থেকে চাঁদা আদায় করে নিজের পকেট ভারী করতো।

তারা আরো বলেন, প্রতিষ্ঠানে রয়েছে একটি ছাত্রাবাস,ছাত্রাবাসটিতে এক সময় প্রচুর ছাত্র থাকতো কিন্তু ছাত্রাবাসটিতে এখন কোন ছাত্র নেই। সরেজমিনে গিয়ে দেখলে বুঝা যায়না এটা কোন ছাত্রাবাস নাকি পরিত্যক্ত গোয়ালঘর। ছাত্র না থাকার কারন হিসেবে স্থানীয়দের দাবী প্রিন্সিপাল ওয়ালীউল্লাহ ছাত্রদের দিয়ে তার ব্যাক্তিগত কাজ করানোর পাশাপাশি তাদের শারিরীক ও মানষিক ভাবে অত্যাচার করে। তাছাড়া ছাত্রাবাসে কোন ছাত্র না থাকলেও তিনি জেলা প্রসাশন সহ বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা থেকে ছাত্রাবাসের নামে অনুদান গ্রহন করেন এবং সে সকল অর্থ মাদ্রাসার ফান্ডে না দিয়ে নিজ পকেটে ভরে। মাদ্রাসার ক্লাশরুমের পরিচর্যার জন্য টাকা উঠালেও ক্লাশরুম গুলোর বেহাল অবস্থা। তাছাড়া মাদ্রাসাটি এমপিও ভুক্ত হলেও সরকারি আইনকে বৃদ্বাঙ্গুলি দেখিয়ে প্রিন্সিপাল ওয়ালীউল্লাহ এখানে চালু করেছেন স্বতন্ত্র নূরানী বিভাগ। অসংখ্য অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ রয়েছে এই প্রিন্সিপাল ওয়ালীউল্লাহর বিরুদ্ধে। তাই ওয়ালিউল্লাহর অপসারণ দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এদিকে মাদ্রাসার কমিটি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে জামেলা চলে আসছিল। অধ্যক্ষ ওয়ালিউল্লাহর সাথে স্থানীয়দের সাথে মনের বিরোধ চলে আসছিল। আর ওয়ালিউল্লাহর বিপক্ষে ছিল কিছু শিক্ষক। যার কারনে স্থানীয় কিছু লোকজন ওয়ালিউল্লাহকে শায়েস্তা করার সুযোগ পায়। এমনকি দীর্ঘদিন ধরে মাদ্রাসার কমিটি না থাকায় ওয়ালিউল্লাহ একক ভাবে ফায়দা লুটতে থাকে। এতে করে স্থানীয় কিছু লোকজন তা মেনে নিতে পারছে না। যার কারনে ওয়ালিউল্লাহর সাথে বিরোধ তৈরি হয়। চলমান বিরোধে ওয়ালিউল্লাহকে সরাতে স্থানীয় একটি শক্তি মাঠে নামে। তাকে সরিয়ে কমিটির সভাপতি হওয়ার জন্য মিশনে নামে।

এবিষয়ে প্রিন্সিপাল ওয়ালীউল্লাহ’র বক্তব্য জানতে চেয়ে তার সাথে ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলে যে সরাসরি দেখা করার জন্য। পরবর্তীতে একাধিক ফোন নাম্বার দিয়ে বহুবার তাকে কল দিলেও তার নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়।

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com