নারায়ণগঞ্জে সংখ্যালঘু নেই: শামীম ওসমান

প্রেসবাংলা ২৪. কম: নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান বলেছেন, নারায়ণগঞ্জে সংখ্যালঘু নাই নারায়ণগঞ্জে সব সমান। ধর্ম যার যার। আমার ধর্ম আমি কি করি, এটার জবাব আমি আল্লাহর কাছে দিবো। আপনি কি করছেন এটার জবাব আপনি আপনার ভগবানের কাছে দিবেন। আমি আমার আল্লাহকে চোখে দেখি নাই। আপনারাও আপনাদের ভগবান দেখেন নাই। আমি নামাজ পড়ি আপনারা পূজা করেন। আপনার বিশ্বাস আপনার জায়গায় আমার বিশ্বাস আমার জায়গায়। হিসেব করার মালিক আল্লাহ।
সব ধর্মেই কিছু কথা লেখা আছে। আল্লাহ এবং তার প্রেরিত রাসূলের পরে মা বাবার স্থান। সেই প্রকৃত ধার্মিক সেই প্রকৃত ভালো মানুষ যে তার মা-বাবার মনে শান্তি দেয়। যে শান্তি দিতে পারে তাকে কোথাও আটকাতে পারে না। একটা সুন্দর বাংলাদেশ গড়ার জন্য আগে নিজের পরিবারকে গড়ে তুলতে হবে। কে কি বলবে এটা বিষয় না। বিষয় হলো আপনি সত্য না মিথ্যা। সত্যের জয় হবেই।
শুক্রবার (২৩ জুন) বিকেলে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। নারায়ণগঞ্জ শহরের শিল্পকলা একাডেমিতে এই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
তিনি আরও বলেন, নারায়ণগঞ্জ বাংলাদেশ থেকে একটু আলাদা। আমার মনে হয় নারায়ণগঞ্জ সারা পৃথিবী থেকেই আলাদা। হে আমাদের দোষ ত্রুটিও আছে। আমি যা বলি সত্য বলি। মাসদাইরে যান যেখানে আমাদের শেষ ঠিকানা এক জায়গায়। বাংলাদেশের কোথাও এমনটা নেই। আমাদের মুরুব্বিরা মিলে এটা করেছেন। বাংলাদেশে দুইটি পার্টি হচ্ছে একটি হচ্ছে আওয়ামী লীগ আরেকটি হচ্ছে আওয়ামী লীগ বিরোধী। আওয়ামী লীগ জনগণের প্রতি বিশ্বাস করে। আমরা শেখ হাসিনার কাছে এই চাই সেই চাই। আমরা কি দিয়েছি। আমরা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে নৃশংসভাবে হত্যা করেছি। এখন আমাদের দলের অনেকেই বড় বড় কথা বলেন। আমি আমার দলকেও পারফেক্ট বলি না। আমি যা বলি সত্য বলি
সম্মেলনের মধ্যদিয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের নতুন সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সাংবাদিক শংকর কুমার দে ও সাধারণ সম্পাদক শিখণ সরকার শিপন নির্বাচিত হয়েছেন। এছাড়াও মহানগরে সভাপতি বিষ্ণুপদ সাহা ও সাধারণ সম্পাদক সুশীল দাস নির্বাচিত হন।
সকাল সাড়ে নয়টায় জাতীয় সংগীতের সাথে সাথে জাতীয় ও সংগঠনের পতাকা উত্তোলন ও শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করা হয়। পরে নারায়ণগঞ্জ জেলা মহানগর পূজা পরিষদ দিবসের সম্মেলন উপলক্ষে নগরীতে হাজারো হিন্দু সম্প্রদায়ের নারী – পুরুষ রকমারি শাড়ি, লুঙ্গি ও মাথায় লাল রঙের ক্যাপ পরিধান করে এবং ব্যানার ফেস্টুনে সু-সজ্জিত হয়ে অংশগ্রহণে ঢাক ঢোল বাজনা বাজিয়ে ঘোড়ার নিয়ে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে পুরাতন কোর্টস্থ জেলা শিল্পকলা একাডেমী সামনে এসে সমাপ্ত হয়।
এদিকে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের দ্বি- বার্ষিক সম্মেলনকে কেন্দ্র করে নগরীতে উৎসব মুখর পরিবেশে অবিরাজ করেছে । সকাল থেকেই নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের আওতাধীন বিভিন্ন থানা, উপজেলা ও ওয়ার্ড সংগঠনটির নেতাকর্মীরা ব্যানার- ফেস্টুনে সু-সজ্জিত হয়ে মিছিলে মিছিলে সমবেত হয়ে সম্মেলন সাফল্য মন্ডিত করে তোলেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র গীতা পাঠ করা হয় । পরে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের প্রয়াত সকল নেতাকর্মীদের আত্মার শান্তি কামনা করে শোক প্রস্তাত পাঠ করেন নারায়ণগঞ্জ জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সদস্য সচিব শিখণ সরকার শিপন। পরে অতিথিদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়। এসময়ে অতিথিদেরকে সম্মাননা ক্রেষ্ট প্রদান করা হয়।
নারায়ণগঞ্জ জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা সাংবাদিক শংকর কুমার দে’র সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব শিখণ সরকার শিপনের সঞ্চালনায় সম্মেলনে উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি শ্রী জে এল ভৌমিক, প্রধান বক্তা বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. চন্দ্রনাথ পোদ্দার, বিশেষ অতিথি বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি শ্রী ডি এন চ্যাটার্জী, সম্মানিত অতিথি নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এড. খোকন সাহা।
এছাড়াও আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এড. কিশোর রঞ্জন মন্ডল, সাংগঠনিক সম্পাদক শ্রী দীপক পাল দীপু, বারদী শ্রী শ্রী লোকনাথ কর্মচারী আশ্রমের আহবায়ক ও সাবেক সচিব শ্রী অশোক মাধক রায়, এফবিসিসিআই এর পরিচালক প্রবীর কুমার সাহা, পানাম গ্রুপের ব্যবস্থার পরিচালক সিআইপি অমল পোদ্দার, সরকারি তোলারাম কলেজের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক জীবন কৃষ্ণ মোদক, নারায়ণগঞ্জ হিন্দু কল্যাণ ট্রাস্টের সাবেক ট্রাস্টি পরিতোষ কান্তি সাহা, বাংলাদেশ ইয়ার্ন মার্চেন্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি লিটন সাহা, মহতীর্থ লাঙ্গলবন্দ স্নান উৎসব উদযাপন পরিষদের সভাপতি সরোজ কুমার সাহা, সাধারণ সম্পাদক সুজিত কুমার সাহা, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য অধ্যাপক রজত কুমার সুর রাজু, সহ- মহিলা বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ড. সঞ্চিতা গুহ চৈতী, সহ- সমাজ কল্যাণ সম্পাদক শ্রী বিপুল ঘোষ শংকর, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক তমাল সাহা।