৩৬ ঘন্টায় ক্লুলেস হত্যা মামলার আসামী গ্রেফতার
প্রেসবাংলা ২৪. কম: নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ কর্তৃক বিশেষ অভিযানে ক্লুলেস মামলার রহস্য উদ্ঘাটন ও ৩৬ ঘন্টার মধ্যে মূল আসামী গ্রেফতার করা হয়েছে।
সোমবার (২২ মে) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, গত ২১ মে ২০২৩ মিঃ, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশের একটি চৌকস টিম ডিজিটাল তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় কুড়িগ্রাম জেলাস্থ উলিপুর থানাধীন পূর্ববানা, (চিলমারীরচর) হতে অভিযান চালিয়ে কমল (৩৩) নামের ঐ আসামী গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত কমল ওরফে কুদ্দুস কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর থানার পূর্ববারা এলাকার আ: জলিলের ছেলে। তিনি সিদ্ধিরগঞ্জ মুনলাইট গার্মেন্টেসের পাশে বসবাস করতেন।
গত ১৯ মে ২০২৩ সকাল সারে ৮টায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন জালকুড়ি পশ্চিমপাড়া শিমা ডাইংয়ের পাশে ফাঁকা বালুর মাঠে একজন অজ্ঞাত মহিলার মৃত দেহ হাত ও পা বাধা অবস্থায় পাওয়া যায়। এই হত্যার ঘটনায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় ভিকটিমের পিতা আশরাফ দেওয়ান বাদী হয়ে এজহার দায়ের করেন। যার প্রেক্ষিতে সিদ্দিরগঞ্জ থানার মামলা নং- ৪৪ তাং ১৯/০৫/২৩ খ্রিঃ, ধারা-৩০২/৩৪ পেনাল কোড রুজু করা হয়। মামলাটি জেলা পুলিশ সুপার স্যারের সার্বিক তত্বাবধানে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার একটি চৌকস টিম ডিজিটাল তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে তদন্ত করে ১। ফুল মিয়া ও কাশাল হৃদয় (২৫) ও ২। মোঃ ফরহাদ মিয়া কে জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পারে অত্র মামলার ঘটনার মূল আসামী ১। মোঃ কমল ওরফে কুদ্দুস (৩৩) কে গ্রেফতার করলে ঘটনার মূল রহস্য উদ্ঘাটন করা সম্ভব হবে। পরবর্তীতে পুলিশ সুপার স্যার এর নির্দেশ ক্রমে দিক নির্দেশনায় তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে কুড়িগ্রাম জেলার উক্ত ঠিকানা হতে মোঃ কমল ও কুদ্দুস (৩৫) কে গ্রেফতার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতাকৃত আসামী জানায় যে, গত ১৯/০৫/২০১৩ খ্রির রাতে সে ও অভির উদ্দিন সহ থানার পাংখা শাহ মাজারে সাপ্তাহিক ওরশে গান শুনতে যায়। ওরশের গান শেষে রাত অনুমান ০৩.১৫ ঘটিকায় অত্র মামলার ভিকটিম নাসরিন আক্তার (৪০) এর সাথে পরিচয় হয় ও এক সাথে চা পান করে। এর পরে অভির উদ্দিনের সাথে ভিকটিমের অর্থের বিনিময়ে একান্ত সময় কাটানোর কথা হলে ভিকটিম সম্মত হয়। এর ধারাবাহিকতায় কমল ও অভির উদ্দিন ভিকটিমকে নিয়ে একটি জরাজীর্ণ পরিত্যাক্ত ঘরে প্রবেশ করে। ইতি মধ্যে ভিকটিমের মোবাইলে একটি ফোন কল আসে এবং সে মোবাইলে কথা বলতে বলতে বাহির হিয়ে যায়। তাৎক্ষনিক ঘরে দুই জন পুরুষ প্রবেশ করে ভয়ভীতি দেখিয়ে কমল ও অভির উদ্দিনের কাছ থেকে নগদ ৯,৪০০/- (নয় হাজার চারশত) টাকা নিয়ে যায়। এতে কমল ও অভির উদ্দিন ভিকটিমের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে পরে। পরবর্তীতে কমল ভিকটিমকে আরো টাকার লোভ দেখিয়ে তাদের সাথে আরো সময় কাটানের জন্য বলে। ভিকটিম রাজি হলে তাকে জালকুড়ি থানাধীণ তালতলা খালপাড় বালুর মাঠে নিয়ে যায়। ঘটনাস্থলে পৌছালে কমলের গলায় থাকা লালসালু কাপড় দিয়ে হাত বেঁধে এবং ভিকটিমের গায়ের ওড়না দিয়ে দুই পা বেঁধে লালসালু দিয়ে ভিকটিমের গলায় পেচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পরবর্তীতে কমল ও অভির উদ্দিন দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন ভাড়া বাসায় এসে উভয়ই গ্রামের বাড়িতে চলে যায়। আসামী কমলকে গ্রেফতারের পরে তার দেওয়া স্বীকারোক্তি মতে ভিকটিমের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ও ঘটনার সময় আসামীর পরিহিত সাদা লুঙ্গি ও গেঞ্জি উদ্ধার পূর্বক জব্দ করা হয়।