প্রেসবাংলা ২৪. কম: নারায়ণগঞ্জের স্থানীয় কয়েকটি পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদে শুক্রবার (৩ মার্চ) সংবাদ সম্মেলন করেছেন, নারায়ণগঞ্জ কমার্স কলেজে প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ ও জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী প্রফেসর ড. শিরিন বেগম।
এদিন দুপুরে নগরীর চাষাড়ার কমার্স কলেজের সভা কক্ষে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে প্রফেসর ড. শিরিন বেগম জানান, আমি মহান মুক্তিযুদ্ধে একজন সহযোদ্ধা ছিলাম এর পূর্বে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের মনোনীত সামসুন্নাহার হলের সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করি। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় মহিলা গেরিলা কমান্ডার ও তৎকালীন (পূর্ব পাকিস্তান) ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ফোরকান বেগম এর নেতৃত্বে ও অধীনে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করি। তৎমর্মে ফরিদপুর, নারায়ণগঞ্জ সহ অন্যান্য এলাকার মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারদের সাথে মুক্তিযুদ্ধে আমি অংশগ্রহণ করেছি, স্বীকৃতিস্বরূপ তৎমর্মে অসংখ্য প্রমাণপত্র আমার নিকট রয়েছে।
এছাড়াও তিনি জানান, সরকার কর্তৃক ঘোষিত মুক্তিযোদ্ধা তালিকাভুক্ত হওয়ার ঘোষণা অনুযায়ী আমি ২০১৪ সালে তালিকাভুক্ত হওয়ার জন্য আবেদন করি। পরবর্তীতে উক্ত আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলা, জেলা ও কেন্দ্রীয় মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটির সম্মুখে ব্যক্তিগতভাবে উপস্থিত হয়ে সাক্ষাৎকার দেই। উক্ত সাক্ষাৎকারে আমার মুক্তিযোদ্ধা সংক্রান্ত কাগজপত্র করা হয় এবং যাদের সাথে মুক্তিযুদ্ধের সময় একসাথে কাজ করেছি সে সমস্ত মহিলা গেরিলা কমান্ডার সহ অন্যান্য কমান্ডারদের ব্যক্তিগত উপস্থিতিতে যাচাই বাছাই ও সাক্ষাৎকার নিয়ে উপজেলা, জেলা ও কেন্দ্রীয় জামুকা কর্তৃপক্ষ সন্তুষ্ট হয়ে এবং সকলপ্রকার মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করার তালিকায় অন্যান্যদের সাথে আমাকেও চূড়ান্ত তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করা হয়। সে প্রেক্ষিতে অন্যান্যদের সাথে আমার নামও তালিকা ভুক্ত হয়। যা আমি জানতে পেরেছি। আমি মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সরকারি কোন সুযোগ সুবিধা, ভাতা সহ অন্যান্য কোন সুবিধা পাইনি। উল্লেখ্য যে, মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় থেকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আমাকে কোনপ্রকার সনদ প্রদান করা হয় নাই। কাজেই সনদ বাতিল এবং সরকারি ভাতা আত্মসাৎ করার প্রশ্নই আসে না। আমি সরকারি তোলারাম কলেজ নারায়ণগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজ ও গাজীপুর সরকারি মহিলা কলেজে দীর্ঘদিন অধ্যক্ষ পদে অত্যন্ত সুনামের সাথে অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেছি। আমার সততা ও কর্মনিষ্ঠার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সুপারিশক্রমে আমাকে অধ্যক্ষ পদে সরকারি তোলারাম কলেজে ২ বছর চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগ প্রদান করেন। কিছু কুচক্রী মহল আমার সততা, নিষ্ঠা, রাজনৈতিক ও সামাজিক অবস্থান ক্ষুন্ন করার স্বার্থে সাংবাদিকদের ভুল দিয়ে এই কথিত সংবাদ করিয়েছে। আমি একজন মহিলা বিধায় আমার বিরুদ্ধে উক্ত কুচক্রী মহলটি আমাকে নানাভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য অপচেষ্টায় লিপ্ত আছে।
এছাড়াও প্রফেসর ড. শিরিন বেগম আরও বলেন, আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা এটা আমাকে সনদ দেয়া হোক বা না হোক আমি বঙ্গবন্ধুর ডাকে দেশের স্বাধীনতার স্বার্থে স-শরীরে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছি। উল্লেখ্য যে, মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গেজেটে আমাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ না দিয়ে বাতিল করায় আমি আমার অধিকার আদায়ের জন্য উক্ত বাতিল আদেশের বিরুদ্ধে মহামান্য হাইকোর্টে রিট করি এবং মহামান্য হাইকোর্ট আমার মুক্তিযোদ্ধা বাতিলের আদেশটি স্থগিত করে বিষয়টি আমলে নিয়েছেন। পরিশেষে ভবিষ্যতে আমার মানসম্মান খ্যাত রাজনৈতিক, সামাজিক অবস্থানে হিংসাবিদ্বেষ ও ঈর্ষান্বিত হয়ে উল্লিখিত কাজ করেছে। আমি নারায়ণগঞ্জের একমাত্র পিএইচডি করা মহিলা। দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স, মাস্টার্স কৃতীত্বের সাথে পাশ করি। আমি নারায়ণগঞ্জের শিক্ষামাতা হিসাবে উপাধী পেয়েছি। বর্তমানে আমি নারায়ণগঞ্জ কমার্স কলেজে প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি।