নিজস্ব সংবাদদাতা, প্রেসবাংলা২৪.কম: নারায়ণগঞ্জের পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী জাকির খানকে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১১।
শুক্রবার রাতে অস্ত্রসহ রাজধানীর বসুন্ধরা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে । এব্যাপারে ৩ সেপ্টেম্বর শনিবার বেলা ১২টায় সংবাদ সম্মেলন করে র্যাব এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
জাকির খান ১৯৮৯ সালে জাতীয় পার্টিতে যোগদানের মধ্য দিয়ে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। পরে এক সময়ে তিনি ছাত্রদলের রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। বিএনপির রাজনীতিতে জড়ানোর পরেই ক্রমশ খলনায়কের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন তিনি। একসময় তিনি নারায়ণগঞ্জের শীর্ষ সন্ত্রাসী হিসেবেও পরিচিতি লাভ করেন। জাকির খান দীর্ঘ প্রায় দেড় যুগেরও কাছাকাছি সময় ধরে দেশের বাইরে অবস্থান করেন।
সূত্র মতে, ১৯৮৯ সালে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের প্রয়াত সংসদ সদস্য নাসিম ওসমানের হাতে ধরে জাতীয় পার্টির ছাত্র সমাজে যোগদানের মাধ্যমেই জাকির খানের রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রবেশ করেন। তার পিতা দৌলত খান ছিলেন তৎকালীন টানবাজার পতিতালয়ের গডফাদার। ১৯৯১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর জাকির খানের সাথে নাসিম ওসমানের বিরোধ বাধলে কামালউদ্দিন মৃধার নেতৃত্বে সে ১৯৯৪ সালে বিএনপিতে যোগ দেয়। এক পর্যায়ে দেওভোগ এলাকার অপর শীর্ষ সন্ত্রাসী দয়াল মাসুদকে শহরের সোনার বাংলা মার্কেটের পেছনে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করে দুধর্ষ সন্ত্রাসী হিসেবে শহরে পরিচিত হয়ে উঠেন জাকির খান।
১৯৯৬ সালে বিএনপি সরকারের শেষ দিকে জাকির খান শহরের খাজা সুপার মার্কেটে হামলা ও ভাঙ্গচুরের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় ৭ বছরের সশ্রম কারাদন্ড প্রাপ্ত হয়ে জেলে যায়। একই বছরে আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার ৭ মাসের মাথায় কাশীপুর বাংলা বাজার এলাকায় এক ঠিকাদারের কাছে চাঁদা দাবীর অভিযোগে দায়েরকৃত মামলায় দ্বিতীয় দফায় জাকির খানের ৫ বছরের সশ্রম কারাদন্ড হয় এবং জেলে যায়। ১৯৯৯ সালে স্বল্প সময়ের জন্য জেল থেকে বের হয়ে জাকির খান জেলা ছাত্রদলের সভাপতির পদটি পেয়ে যান।
আওয়ামীলীগের শাসনামলের শেষ দিকে ২০০০ সালে শামীম ওসমান নারায়ণগঞ্জ থেকে টানবাজার ও নিমতলী পতিতালয় উচ্ছেদ করে। ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পরও প্রায় ৫ মাস জেলে থাকেন জাকির খান। ওই বছরের ৯ সেপ্টেম্বর শহরের ডিআইটিতে তাকে সংবর্ধনা দেওয়া হয় যেখানে জনতার ঢল নামে। তারপর থেকে সে নারায়ণগঞ্জ বিএনপির রাজনীতিতে প্রভাবশালী হয়ে উঠেন।
সর্বশেষ ২০০৩ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারী তৎকালীন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও বিআরটিসির তৎকালীন চেয়ারম্যান তৈমুর আলম খন্দকারের ছোট ভাই ব্যবসায়ী নেতা সাব্বির আলম খন্দকার আততায়ির গুলিতে নিহত হয়। এ ব্যাপারে জাকির খানকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন তৈমুর আলম খন্দকার। এরপর জাকির খান নারায়ণগঞ্জ ছেড়ে পাড়ি জমায় থাইল্যান্ডে। পরে ভারতে থাকারও খবর পাওয়া যায়। তবে এবার তিনি দেশে গোপনে ফিরে আসেন এবং র্যাবের হাতে গ্রেফতার হন।