সাউথ আফ্রিকায় চিত্রকর্ম প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশী মেয়ের কৃতিত্ব
প্রেসবাংলা ২৪. কম: মারজান আক্তার হাসান; একজন আর্ট শিল্পী। কিন্তু পেশাদার নয়, শখের বশে চিত্রকর্ম আঁকেন। ছোটবেলা থেকেই আকাআকি করাই ছিলো তার স্বভাব। মনের মাধুরি মিশিয়ে নিজের চিত্রকর্ম দিয়ে মানুষের মন জোগাতে চেয়েছিলেন। অবশেষে সফলও হয়েছেন।
সুদুর সাউথ আফ্রিকার মাটিতে নিজের চিত্রকর্ম প্রদর্শন করে মানুষের মনে জায়গা করে নিয়েছেন চিত্রশিল্পী মারজান আক্তার হাসান। ১৯ মে দক্ষিণ আফ্রিকার কুইন্স টাউনে চ্যারিটি সাহায্যার্থে এক চিত্রপ্রদর্শনী ও বিক্রির আয়োজন করে লাভ অব আর্ট নামে একটি সংগঠন। শুধু দক্ষিণ আফ্রিকা নয়, ইউরোপ আমেরিকার কয়েকটি দেশের চিত্রশিল্পীরা নিজেদের চিত্রকর্ম নিয়ে এসেছেন এই প্রদর্শনীতে। অনেক গুনী চিত্রশিল্পীদের দামি দামি চিত্রকর্ম স্থান পেয়েছে কুইন্সটাউনের কুইন হলে। আগামী রবিবার পর্যন্ত এই প্রদর্শনীতে ৪৪ জন চিত্রশিল্পীর ২২৫টি চিত্রকর্ম প্রদর্শিত হচ্ছে যেগুলোর প্রতিটির মুল্য ৪০০ রেন্ড থেকে ৩৫ হাজার রেন্ড পর্যন্ত। প্রদর্শনীতে বিক্রিত চিত্রকর্মগুলো থেকে প্রাপ্ত অর্থের ২০% স্থানীয় একটি ওল্ড হোমে দান করা হবে।
দক্ষিণ আফ্রিকা ও অন্যান্য দেশের বিখ্যাত চিত্রশিল্পীদের চিত্রকর্মের পাশাপাশি বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত মারজান আক্তারের চিত্রকর্মও স্থান পায়। শুধু তাই নয়, মারজান আক্তার এর আটটি চিত্রকর্মের মধ্যে প্রথম দিনেই দুটি চিত্রকর্ম বিক্রি হয়ে যায়।
মারজান আক্তার এই প্রথম কোন প্রদর্শনীতে যিনি নিজের চিত্রকর্ম প্রদর্শন করেছেন। প্রথম দিনেই দুটি চিত্রকর্ম বিক্রি করতে পেরে নিজেকে স্বার্থক মনে করছেন মারজান। তিনি শাপলা টিভিকে জানান, অনেক বিখ্যাত চিত্রশিল্পীর মাঝে আমার কাজ অনেক তুচ্ছ মনে হয়েছিলো। আবার এটাও বিশ্বাস ছিলো, আমার কাজ মানুষের হৃদয় কাড়বে। আজ থেকে আমার আত্মবিশ্বাস আরো বেড়ে গেছে। আমি বিদেশীদের কাছে বাংলাদেশী পরিচয় দিতে পেরে গর্ববোধ করছি।
মারজান আক্তারের স্বামী মোহাম্মদ হাসান বলেন, চিত্রকর্ম অংকন করা অনেক কঠিন কাজ। নিজের মেধা ও কল্পনা শক্তি দিয়ে একটি জিনিসকে ফুটিয়ে তোলার মাঝেই শিল্পীদের সার্থকতা। চিত্রকর্ম অংকন করা অনেক ব্যয়বহুল হলেও আমি আমার প্রিয়তমাকে সাপোর্ট দিয়ে যাচ্ছি। আজ তার জন্য আমি নিজেকে ধন্য মনে করছি।
কুইন্সটাউন বাংলাদেশ কমিউনিটির নেতা আব্দুলমাজীদ প্রান্তিক শাপলা টিভি কে বলেন, দক্ষিণ আফ্রিকার বৃহৎ চিত্রকর্ম প্রদর্শনীতে বাংলাদেশী মেয়ে মারজান আক্তারের অংশগ্রহণ ও সফলতা নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবি রাখে। তার মেধা ও যোগ্যতার ফলে স্থানীয়দের মাঝে বাংলাদেশ কমিউনিটির সম্মান বৃদ্ধি পাবে বলে আমরা আশাবাদী।
চিত্রশিল্পী মারজান আক্তার হাসান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাইকোলজি থেকে অনার্স মাস্টার্স পাশ করেছেন। তিনি বাংলাদেশের পিজি হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন। গত ৮ বছর পুর্বে দক্ষিণ আফ্রিকায় পাড়ি জমান। দুই সন্তান ও স্বামীকে নিজে কুইন্সটাউনে বসবাস করছেন।