মৃত মানুষের বিদায় বেলা সম্মান পাওয়া তাঁর অধিকার : করোনা বীর খোরশেদ
সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি, প্রেসবাংলা২৪.কম: করোনায় মানুষের মৃত্যু যখন বাড়তে থাকে তখন দেখি মানুষ তার পরিবার পরিজনকে এড়িয়ে যাচ্ছে। এমনকি যারা শশ্মানঘাটে লাশ দাহ করে এবং কবরস্থানে লাশ দাফনের কাজ করে তারা পর্যন্ত পালিয়ে যাচ্ছে। তখন আমার মনে হয়েছে যে এটা মানবিক সংকট। এই মানবিক সংকট মোকাবেলা করার জন্য আমি এবং আমার স্বেচ্ছাসেবক টিম মৃত মানুষের লাশ দাফন এবং দাহ করার কাজ শুরু করি। আমি মনে করি একজন মৃত মানুষের বিদায়বেলা সম্মান পাওয়া তাঁর অধিকার।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানা প্রেস ক্লাব আয়োজিত মঙ্গলবার রাত ৮ টায় ফেইসবুক লাইভ প্রোগামে এসব কথা জানান নাসিক ১৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ। টিভি সাংবাদিক ও উপস্থাপক সৌরভ ইমামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানটিতে অতিথি হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন নাসিক ১০ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইফতেখার আলম খোকন ও নাসিক সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর
(৭, ৮,৯ নং ওয়ার্ড) আয়শা আক্তার দিনা।
লাইভ অনুষ্ঠানটিতে করোনা বীর খোরশেদ জানান, করোনা সারা পৃথিবীতে যেভাবে তান্ডব শুরু করেছিল, তার ধারাবাহিকতায় করোনা আমাদের দেশে আসতে পারে এমন মানসিক প্রস্ততি আমাদের মধ্যে ছিল। সেজন্য মানুষকে সচেতনতার বার্তা দেয়ার পাশাপাশি এখন অবধি মাঠে থেকে কাজ করে যাচ্ছি।
কাউন্সিলর ইফতেখারুল আলম খোকন বলেন, সারাবিশ্বের নেয় করোনা ভাইরাস বাংলাদেশে যখন আসি আসি ভাব তখন আমরা মানসিকভাবে তেমন প্রস্তুত ছিলাম না। আমার এই ১০ নং ওয়ার্ডে অনেক মিল কারখানা। এই মিল কারখানা চালু থাকলে কিভাবে কোন ভাইরাস থেকে রক্ষা পাবো সেটা প্রথমে আমি বুঝে উঠতে পারিনি। আমরা সর্বপ্রথম মিডিয়ার উদ্যোগে অল্প পরিসরে স্যানিটাইজার মানুষের হাতে পৌঁছে দিয়েছি। তারপর মানুষকে সচেতন করাসহ বিশেষ করে প্রতিটি মসজিদের মাইক দিয়ে মানুষকে সচেতন করার চেষ্টা করেছি। আল্লাহর অশেষ রহমতে আমার ওয়ার্ডে ২-৩ জন ছাড়া সবাই সুস্থ আছেন। আল্লার রহমতে আমার ওয়ার্ডে কোন ব্যক্তি কোন ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়নি।
সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর আয়েশা আক্তার দিনা বলেন, গত ১৭ মার্চ থেকেই ভাইরাস সংক্রমণের ঘোষণা আসে সরকারিভাবে। প্রথমেই আমি আমার ৭,৮ ও ৯ নং ওয়ার্ডের যতগুলো মাদ্রাসা ছিল সব মাদ্রাসাগুলোতে কোরআন খতম ও মসজিদে বিশেষ দোয়ার আয়োজন করি। তারপর মানুষকে সচেতন করার জন্য হ্যান্ড স্যানিটাইজার ,মাস্ক ও লিফলেট বিতরণ শুরু করি। সিটি কর্পোরেশন থেকে ফ্লোরিন মিশ্রিত পানি দেওয়া হয়েছিল। আমি মূলত এই কাজটিকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহণ করেছিলাম। রমজান মাসে রাত-দিন পরিশ্রম করে মানুষকে সচেতনতার জন্য কাজ করেছি। এরমধ্যে আমার উপর হামলা হয়েছিল। ২১ দিন ফেরারী থাকার পর আদালত থেকে জামিন নিয়ে আবার মাঠে কাজ করা শুরু করেছিলাম। আমি চ্যালেঞ্জ নিয়েই আমার কার্যক্রম আমি চালিয়ে গিয়েছিলাম। আমি আমার কার্যক্রম থেকে এক বিন্দু পরিমাণ সরে আসিনি।