পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম প্লাজমার ব্যাবস্থা করে দিলেন

না’গঞ্জ পুলিশ সুপার প্লাজমার ব্যাবস্থা করে দিলেন করোনা রোগী নাজমিনকে

 

প্রতিবেদক, প্রেসবাংলা২৪.কম: নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম প্লাজমার ব্যাবস্থা করে দিলেন করোনায় আক্রান্ত নাজমিনকে। পুলিশের প্লাজমাই এখন আশার আলো দেখাচ্ছে করোনা আক্রান্ত নাজমিন এর পরিবারকে।

স্বামী ব্যবসায়ী আব্দুল আব্দুল নাঈম ও তিনটি সন্তান নিয়ে নাজমিন এর  সুখের সংসার । দুইটি ছেলে ও একটি মেয়ে সন্তানকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করতে নাজমিনের চেষ্টার অন্ত নেই। ইতোপূর্ব থেকেই তিনি ডায়াবেটিস, শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত। নিয়মিত চিকিৎসা নেন ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতালে।

গত ২৪ জুন হঠাৎ অসুস্থতা বোধ করেন নাজমিন। ছুটে যান হাসপাতালে। কিন্তু করোনার লক্ষণ থাকায় পরীক্ষা ছাড়া তাঁকে ভর্তি করা হয় না। অগত্যা বিভিন্ন হাসপাতালে ছুটোছুটি। তারপর একটি বেসরকারী হাসপাতালে নমুনা দেন তিনি। ২৫ তারিখ রিপোর্ট পান কোভিড১৯ পজেটিভ। এর মধ্যেই শ্বাসকষ্ট দেখা যায় প্রচণ্ডভাবে। অক্সিজেন সাপোর্ট দেয়া হয় অনবরত। কিন্তু কোনভাবেই শ্বাসকষ্ট কমছে না। অবস্থা দিন দিন আশঙ্কাজনক হতে থাকে। চিকিৎসকদের সকল চেষ্টা প্রায় ব্যর্থ হয়ে যায়।

আজ সকালে জানানো হয় এখন একমাত্র প্লাজমা থেরাপি পারে তাঁকে সুস্থ করতে। কিন্তু ও নেগেটিভ (O-) গ্রুপের রক্তের প্লাজমা কোথায় পাবেন সে চিন্তায় অস্থির। বিভিন্ন মাধ্যমে চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে শেষে খোঁজ পান নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের প্লাজমা ব্যাংকের। কিন্তু পুলিশের প্লাজমা ব্যাংক থেকে তাদেরকে সাপোর্ট দেয়া হবে কিনা তা নিয়ে ছিল সংশয়। এক পুলিশ আত্মীয়ের সাহায্য নেন তিনি। তবে তিনি আশ্বস্ত করেন এ প্লাজমা ব্যাংক থেকে সকলকে দেয়া হয় প্লাজমা।

ফোন নম্বর নিয়ে ফোন দেন নারায়ণগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার জনাব মোহাম্মদ জায়েদুল আলমকে (পিপিএম বার)। তথ্য নিয়ে জেলার প্লাজমা ব্যাংকের ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমানকে জানান, প্লাজমা ব্যাংকের তালিকা থেকে কনস্টেবল মোঃ দিদার হোসেনকে প্রেরণ করেন ঢাকার আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালে। খবর শুনে ব্যবসায়ী নাঈম যেন আকাশের চাঁদ হাতে পেলেন। তিনটি সন্তানসহ তিনি কাঁদছিলেন হাসপাতালের করিডোরে। চোখ মুছে কৃতজ্ঞতা জানান নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের প্লাজমা ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে। কনস্টেবল দিদার হোসেনের প্লাজমা দেয়া হয়েছে নাজমিনের শরীরে। ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছেন তিনি।

উল্লেখ্য, নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের প্লাজমা ব্যাংক গঠনের পর থেকে করোনা আক্রান্ত মুমূর্ষু রোগীদের প্লাজমা দেয়া হচ্ছে প্রতিনিয়ত। নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের ২০০ সদস্য ইতোমধ্যে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১৫৬ জন ইতোমধ্যে সুস্থ হয়ে প্লাজমা প্রদানের জন্য প্রস্তুত রয়েছেন।

 

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com