ফতুল্লা প্রতিনিধি, প্রেসবাংলা২৪ডটকম: ফতুল্লার আলীগঞ্জের একটি ঘাটে জাহাজ থেকে পণ্য খালাস করার সময় বিপুল পরিমাণ সার চুরির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় দুইজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে এই সার চুরির পেছনে প্রভাবশালী একটি চক্রের সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। তাদের ছত্রছায়ায় ঘাটে পণ্য খালাসের সময় চুরির ঘটনা ঘটে আসছে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, বুড়িগঙ্গা নদীর আলীগঞ্জের ওই ঘাটটিতে একই কোম্পানির ছয়টি জাহাজের মাল খালাসের সময় সার চুরির ঘটনা ঘটেছে। মামলায় এর পরিমাণ উল্লেখ করা হয়েছে, ৩৮৪ দশমিক ৫৫ মেট্রিক টন। যার বাজারমূল্য ৭০ লাখ ৪৬ হাজার ৬শ’ টাকা উল্লেখ করা হয়েছে।
এ ঘটনায় গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ফতুল্লা মডেল থানায় সাতজনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেন ঢাকার ধানমন্ডি এলাকার নোয়াপাড়া গ্রুপের চিফ লিগ্যাল অফিসার মো. আবু সাঈদ।
মামলায় আসামি করা হয়েছে- নোয়াপাড়া কোম্পানির সুপারভাইজার মুন্না সরকার, অডিট অফিসার সবুজ হোসেন, সুকানি মো. হাবিবুর শেখ, মো. খাইরুল ভূঁইয়া, ইমরান, আমজাদ এবং ট্যালি ম্যান জনি খন্দকার। একটি প্রভাবশালী চক্রের সম্পৃক্ততায় এই সার চুরির ঘটনা ঘটেছে বলেও মামলায় উল্লেখ রয়েছে।
মামলায় বাদী উল্লেখ করেছেন, নোয়াপাড়া গ্রুপের অন্যতম সিস্টার কনসার্ন তাইবা সাইফুল্লাহ জিএল’র মাধ্যমে সৌদি আরব থেকে ১ হাজার ৬৮৩ মেট্রিক টন ডিএপি সার আমাদানি করা হয়। এই সার চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছালে সেখান থেকে এভি কিবলাতাইন-৮ এর মাধ্যমে ২০১৯ সালের ১৫ ডিসেম্বর আলীগঞ্জ মাদরাসা ঘাটে আনা হয়। গত ২৪ ডিসেম্বর জাহাজের পণ্য খালাস হয়। এ সময় খালাসকৃত সার থেকে ৯৯ মেট্রিক টন সার কম পাওয়া যায়। এই ঘটনার পর সার চুরির বিষয়টি তাদের নজরে আসে। একই বছরে এমভি বাংলার মিলন থেকে খালাসকৃত সার থেকে ৮৯ দশমিক ৬ মেট্রিক টন, কিবলাতাইন-১৫ থেকে খালাসকৃত সার হতে ৬২ দশমিক ৪ মেট্রিক টন, একই জাহাজ থেকে পুনরায় খালাসকৃত সার থেকে ৪১ দশমিক ৮৫ মেট্রিক টন, এমভি মুশফিক হাসান-১ থেকে খালাসকৃত সার হতে ৩১ দশমিক ৫ মেট্রিক টন এবং এমভি স্টিফেন থেকে খালাসকৃত সার হতে ৬০ মেট্রিক টন সার চুরি করা হয়। যার মোট পরিমাণ দাঁড়ায় ৩৮৪ দশমিক ৫৫ মেট্রিক টন। এর বাজার মূল্য ৭০ লাখ ৪৬ হাজার ৬শ' টাকা।
নোয়াপাড়া গ্রুপের চিফ লিগ্যাল অফিসার মো. আবু সাঈদ মামলায় বলেন, পুরো বিষয়টি নোয়াপাড়া গ্রুপের নজরে আসার পর প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে নিয়োজিত সুপার ভাইজার মুন্না সরকার এবং অডিট অফিসার সবুজ হোসেনকে তলব করে কর্তৃপক্ষ। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে তারা স্বীকার করে- জাহাজের মাস্টার, ড্রাইভার, সুকানীসহ অন্যান্য শ্রমিকদের যোগসাজশে এবং আলীগঞ্জ ঘাটের প্রভাবশালীদের ছত্রচ্ছায়ায় ঘাট থেকে খালাসকৃত সার চুরি করে বিভিন্ন সময় অন্যত্র বিক্রি করেছে।
এ বিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসলাম হোসেন জানান, সার চুরির ঘটনায় দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। অন্য আসামিদেরও অতি দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।