চীনা নাগরিকদের অন-অ্যারাইভাল ভিসা স্থগিত করেছে বাংলাদেশ
প্রতিবেদক, প্রেসবাংলা২৪ডটকম: করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে চীনের নাগরিকদের অন-অ্যারাইভাল ভিসা দেয়া সাময়িক বন্ধ ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ।
রোববার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এই তথ্য জানান। তিনি বলেন, বাংলাদেশে যেসব চীনা নাগরিক থাকেন তাদেরকে সাময়িক সময়ের জন্য চীনে ফেরত যেতে বিরত থাকতে বলা হবে।
এই সময়ের মধ্যে কোন চীনা নাগরিক যদি বাংলাদেশে আসতে চান, তাহলে তিনি ভিসার জন্য আবেদন জানাতে পারবেন। বাংলাদেশের ভিসার জন্য আবেদন করলে তাকে মেডিকেল রিপোর্টের মাধ্যমে সুস্থতার প্রমাণ দেখাতে হবে, বলেন ড. মোমেন। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। যাতে চীনা সরকারের কোন আপত্তি নেই।
মোমেন বলেন, “চীনা রাষ্ট্রদূতের সাথে আমাদের আলাপ হয়েছে। আমরা বলেছি বর্তমানের বিশেষ পরিস্থিতিতে যে আমরা একটা নিয়ম করছি যে মাসখানেক যেন, তাদের যেসব নাগরিক এখানে থাকেন, তারা যেন চীনে যাওয়া থেকে বিরত থাকেন।”
“আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি চীনা নাগরিকদের দেয়া অন-অ্যারাইভাল ভিসা সুবিধা আমরা আপাতত বন্ধ রাখবো। তবে তারা ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন, ভিসা পেতে হলে তাদেরকে মেডিকেল সার্টিফিকেট দেখাতে হবে যে, তার এমন কোন অসুখ বিসুখ নেই।”এই পুরো বিষয়টাই সাময়িক। এতে বাণিজ্যিক খাতে কোন চাপ সৃষ্টি হবে না বলে তিনি সাংবাদিকদের জানান।
তবে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রকল্পে চীনা নাগরিকরা কাজ করে থাকেন। সামনের কিছুদিন তাদের চীন থেকে সরাসরি কাউকে বাংলাদেশে না আনার কথাও বলা হয়েছে। গত করোনাভাইরাস উপদ্রুত চীনের উহান শহর থেকে তিনশো’র বেশী বাংলাদেশিকে একটি বিশেষ বিমানে চড়িয়ে ঢাকায় ফিরিয়ে আনা হয়েছে।
সেখান থেকে তাদের বিমানবন্দর সংলগ্ন আশকোনার হজ্ব ক্যাম্পে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয় বা আলাদা করে রাখা হয়। সেখানে তাদের ১৪দিন পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। এরমধ্যে ১০ জন অসুস্থ হওয়ায় তাদেরকে দুটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে ওই বাংলাদেশিদের কারও স্বাস্থ্য পরীক্ষায় এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি বলে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) -এর এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
সম্প্রতি চীন ভ্রমণ করেছেন এমন বিদেশীদের সীমানা অতিক্রম করার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে অস্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র। এর আগে, রাশিয়া, জাপান, পাকিস্তান এবং ইটালিসহ কয়েকটি দেশ একইধরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করে। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এধরণের পদক্ষেপ না নেয়ার জন্য পরামর্শ দিয়েছে। কান্টাস, এয়ার নিউজিল্যান্ড, এয়ার কানাডা এবং ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ এয়ারলাইনগুলি চীন থেকে তাদের ফ্লাইট কমিয়েছে বা বাতিল করে দিয়েছে। ভিয়েতনাম এয়ারলাইন্স চীন, হংকং এবং তাইওয়ানের সমস্ত ফ্লাইট স্থগিত করেছে।
ভাইরাসটি সংক্রামক হওয়ায় ফিলিপিন্সসহ অনেক দেশই এর প্রকোপ ঠেকাতে চীন থেকে আগতদের অন-অ্যারাইভাল ভিসা বন্ধ করে দেয়। সেই তালিকায় এবার যোগ হল বাংলাদেশও।