কৃতকর্মের জন্য পীরের কাছে ক্ষমা চাইলেন ফজর আলী

 

বন্দর প্রতিনিধি, প্রেসবাংলা২৪ডটকম:  নারায়ণগঞ্জের ব্যবসায়ী ফজর আলীর দায়েরকৃত অর্থ আত্মসাৎ মামলায় কুতুববাগ পীরের নামে গ্রেফতারী পরোয়ানা শিরোনামে সংবাদটি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশে মিথ্যা ও ভিত্তিহীণ দাবী করে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন ব্যবসায়ী ফজর আলী।

 

বুধবার (২৯জানুয়ারী) সন্ধ্যায় বন্দর কুতুবাগ দরবার শরিফে উপস্থিত হয়ে কুতুববাগ দরবারের পীর জাকির শাহ্’র পা ধরে তার কৃত কর্মের জন্য ক্ষমা চেয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করেন।

 

এ সময় ব্যবসায়ী ফজর আলী উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন,আমার বাবা জানের (কুতুববাগ দরবারের পীর জাকির শাহ) বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানার যে সংবাদটি গত ২৮ জানুয়ারী বিভিন্ন গনমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীণ। মামলার ব্যাপারে বাবাজানের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ হয়েছে তা আমি কিছুই জানি না। একটি কু-চক্রী মহল আমাকে ধাঁধার মধ্যে ফেলে আমাকে দিয়ে এমন ষড়যন্ত্রমুলক মামলা করিয়েছে। তখন আমার মাথা ঠিক ছিল না। আমি কি থেকে কি করেছি নিজেই জানিনা। আমি কোন সাংবাদিকের দ্বারস্থ হইনি। একটি মহল আমার বাবজানের সুনাম ক্ষুন্ন করতে গনমাধ্যমে এমন মিথ্যাচার করেছে। আমার সাথে বাবজানের (কুতুববাগ দরবারের পীর জাকির শাহ) পারিবারিক সুসম্পর্ক রয়েছে। আমি বাবজানের সঙ্গে যা করেছি সেজন্য লজ্জিত ও ক্ষমা প্রার্থী।বাবজানের সঙ্গে আমার কোন বিরোধ কিংবা পাওনা দেনাও নাই। আমি বাবাজানের খেদমতে আছি ভবিষ্যতেও থাকব। এমন মিথ্যা সংবাদের তীব্র নিন্দা জানাই এখনআমার অজানা কৃত কর্মের জন্য বাবাজান যেন আমাকে ক্ষমা করে দেন।

 

উল্লেখ্য, মামলায় উল্লেখ করা হয় যৌথ ব্যবসা করার জন্য কুতুব বাগের পীর জাকির শাহ্ ব্যবসায়ী ফজর আলীকে ২০১৩ সালের ১১ ফেব্রুয়ারী ব্যবসার উদ্দেশে ৮ কোটি টাকা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। তাই ফজর আলীর কাছ থেকে ৩০০ টাকার স্ট্যাম্পে একটি অঙ্গীকারনামা এবং ৬টি চেক গ্রহণ করেন। অঙ্গীকারনামা ও চেকের বিপরীতে বিভিন্ন সময়ে ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা প্রদান করেন পীর জাকির শাহ। পরবর্তীকালেআর টাকা দিতে পারবে না বলে জানালে ফজর আলী টাকা ফেরত দেয়। ওই সময় স্ট্যাম্প ও ৩টি চেক ফেরত দিলেও বাকি ৩টি চেক খুঁজে পাচ্ছেন না বলে জানান পীর জাকির শাহ। ওই সময়ে স্ট্যাম্পের পেছনে চেক নম্বর উল্লেখ করে হারানো ৩টি চেক বাবদ কোনো দাবি-দাওয়া নেই মর্মে লিখিত অঙ্গীকার করেন এবং পরবর্তীকালে খুঁজে পেলে ফেরত দিবেন বলে অঙ্গীকার করেন তিনি। কিন্তু কিছুদিন পর ব্যবসায়ী ফজর আলী জানতে পারেন ওই চেক হারানো যায়নি এবং এগুলো নিয়ে পীর জাকির শাহ টাকা দাবি করার ষড়যন্ত্র করছেন। এক পর্যায়ে গত বছরের ২৮ সেপ্টেম্বর নিজ বাড়িতে দাওয়াত দিয়ে পীর জাকির শাহ এবং সহযোগী ইসমাইল হোসেন বাবুকে খাওয়ানোর পর চেক ফেরতের বিষয়ে কথা বললে পীর জাকির শাহ ও সহযোগী বাবু ৫ কোটি টাকা দাবি করে। টাকা না দিলে ক্ষতি হবে বলে হুমকি দেয়।

 

এ ঘটনায় চলতি বছরের ৭ জানুয়ারী ব্যবসায়ী ফজর আলী বাদী হয়ে কুতুববাগ দরবারের পীর জাকির শাহ ও তার সহযোগী ইসমাইল হোসেন বাবুর বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (ক অঞ্চল) আদালতে প্রতারণার মামলা দায়ের করেন। রোববার ২৬জানুয়ারী আদালত জাকির শাহ পীরের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করেন। সংবাদ সম্মেলনে নারায়ণগঞ্জের প্রিন্ট মিডিয়া ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

 

 

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com