পরিকল্পনা বাস্তবায়ন না হলে বিষাক্ত গ্যাস চেম্বারে পরিনত হবে ঢাকা

মিজানুর রহমান, জবিপ্রতিনিধিঃ বাতাস ছাড়া বাঁচে না জীবন কিন্তু রাজধানী ঢাকাতে এই অত্যাবশকীয় উপাদানটি এখন নিরবঘাতক । অপরিকল্পিত নগরায়ন সহ নানা কারনে বিষাক্ত হচ্ছে বাতাস বাড়ছে রোগ-বালাই।
পরিবেশ অধিদপ্তরের পর্যবেক্ষণ বলছে ঢাকার বাতাস এখন লাল ক্যাটাগরি ভুক্ত । রাজধানীর তিনটি স্থানে পরিমাপক যন্ত্র বসিয়ে ঢাকার বায়ুমানের সূচক মিলেছে ২৬৯ যা চীন (বেইজিং-২৩০) ও ভারতের ( দিল্লী-২২৮) চেয়েও শোচনীয় এ ফলাফল । তারপরও নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দূষণ বেড়ে যায় আরও চারগুন। নরওয়ের ইনস্টিটিউট অব এয়ার রিসার্চ মাধ্যমে করা জরিপে দেখা গেছে ঢাকা চারপাশে প্রায় ১০০০ ইট-ভাটা নভেম্বের থেকে শুরু হয় যা বায়ু দূষনের জন্য ৫৮ শতাংশ দায়ী এছাড়াও রোড ও সয়েল ডাস্ট ১৮ শতাংশ, যানবাহন ১০ শতাংশ, বায়োমাস পোড়ানো ৮ শতাংশ ও অন্যান্য ৬ শতাংশ বায়ু দূষনের জন্য দায়ী।
জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউট বলছে দূষিত বায়ুর কারনে ৭ লক্ষের অধিক মানুষ ভুগছে শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যায় । বৈশ্বিক বায়ু পরিস্থিতি-২০১৭’ প্রতিবেদন অনুযায়ী বায়ুদূষনে বাংলাদেশে বছরে মারা গেছে ১ লাখ ২২ হাজার ৪০০ মানুষ। ধুলাবালি মিশ্রিত বাতাসের কারণে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ছে। অন্য দিকে শিশুদের স্বাস্থ্যঝুঁকি ও নিরাপত্তাহীনতা দিন দিন বেড়েই চলছে। এই সমস্যা পুরোপুরি নির্মূল করা সম্ভব না হলেও কিছু সচেতনতা ও কার্যকর পদক্ষেপ তা অনেক কমিয়ে আনতে পারে বলে মনে করেন পরিবেশবাদীরা।
আন্তর্জাতিক পরিবেশবাদী সংগঠন গ্রিনপিস ও এয়ার ভিজ্যুয়াল গবেষণা জরিপ অনুযায়ী, ২০১৮ সালের দূষণের সূচকে বিশ্বের তিন হাজার ৯৫টি শহরের মধ্যে সবচেয়ে দূষিত ৩০টি শহরের ২২টি ভারতের, পাকিস্তানের দু’টি, চীনের পাঁচটি ও বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা রয়েছে।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, বায়ুদূষণের ফলে শুধু ফুসফুসকেন্দ্রিক রোগ বিস্তার লাভ করতে পারে এমনটি নয়। এর মাধ্যমে হৃদরোগ, স্ট্রোক ও ডিমেনশিয়া বা স্মৃতিভ্রংশের মতো মারাত্মক রোগও ছড়িয়ে পড়তে পারে। পাশাপাশি অনেক ছোটখাটো রোগবালাইসহ প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে মানসিক অবসাদ ও শিশুদের মধ্যে অ্যাজমার মতো রোগ ছড়িয়ে দিতে পারে। বায়ুদূষণের লাগাম টেনে না ধরতে পারলে শ্বাসজনিত নানা রোগ, হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক, ক্যান্সার ও জেনেটিক পরিবির্তনজনিত নানা অজানা রোগে ভুগতে হতে পারে চরমভাবে। এতে এক দিকে যেমন চিকিৎসাব্যয় বেড়ে যাবে তেমনিভাবে অসুস্থ মানুষের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার কারণে উৎপাদনশীতাও ব্যাপকভাবে কমে যেতে পারে।
তবে পরিকল্পনা যাই হোক না কেনো তা বাস্তবায়ন করা না গেলে সেদিন বেশি দূরে নয় যখন বিষাক্ত গ্যাস চেম্বারে পরিনত হবে ঢাকা হয়ে পরবে প্রাণ ধারনের অযোগ্য শহর ।
Like!! Really appreciate you sharing this blog post.Really thank you! Keep writing.