বক্তাবলীতে আ’লীগের ‘মনগড়া’ কমিটি নিয়ে অসন্তোষ

 

ফতুল্লা প্রতিনিধি, প্রেসবাংলা২৪ডটকম: ফতুল্লার বক্তাবলীতে আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন নিয়ে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। সদস্য সংগ্রহ ও নবায়নের নামে গোপনে ও মনগড়া এসব কমিটি গঠনকে স্বৈরাচারী ও দলের গঠনতন্ত্র বিরোধী কর্মকা- বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের নেতারা।

 

তাদের দাবি, কাউকে কিছু না জানিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের কোন অংশগ্রহণবিহীন এসব কমিটি এক ধরণের স্বেচ্ছাচারিতা ও দলের আদর্শের সাথে বেঈমানী। আওয়ামী লীগের মতো একটি গণতান্ত্রিক ও জনমুখি দলের ভেতরে এ ধরণের চোরাগুপ্তা কমিটি দলটিকে ক্ষতিগ্রস্থ করবে।

 

তাদের দাবি, সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ণ করার পরে এসব সদস্যদের মতামত অথবা ভোটের মাধ্যমে নতুন নেতা নির্বাচিত হবার কথা। কিন্তু ইউনিয়নের সবক’টি ওয়ার্ডেই ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের মনমতো কমিটি গঠন করা হচ্ছে। নেতাকর্মীদের অংশগ্রহণ বা ভোট তো দূরে থাক কারো মতামতও নেয়া হয়নি। এমনকি বক্তাবলীতে সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কর্মসূচিতে কমিটি ঘোষণা করা হবে-এটা আগে থেকে কেউ জানতোও না।

 

এ বিষয়ে বক্তাবলী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা সুরুজ মিয়া বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করে আসছি। আগামী সম্মেলনে আমি ৬নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রার্থী ছিলাম। সবাই আমাকে সমর্থনও দিয়েছিলো। কিন্তু সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কর্মসূচির দিন ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করা হয়। এতে আমরা বিস্মিত হয়ে পড়ি। ওইদিনই আমি তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ করি।

 

তিনি আরও বলেন, ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমাকে আশ^স্ত করেছেন কয়েকদিনের মধ্যে এটা সমাধান করবেন। কিন্তু এখন পরিস্থিতি অন্যদিকে মোড় নিচ্ছে।

 

একই অভিযোগ এ ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী আক্তারুজ্জামান শামীমের। তিনি বলেন, আমিও মৌখিকভাবে অভিযোগ জানিয়েছি। যদি এর কোন ব্যবস্থা নেয়া না হয় আমরা প্রয়োজনে জেলার নেতাদের জানাব।

 

৪নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রার্থী মো: আক্তার হোসেন বলেন, আমি এই ওয়ার্ডের সভাপতি প্রাথী। কিন্তু আমাদের না জানিয়ে সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কর্মসূচিতে কমিটি ঘোষণা করা হয়। আমি তাৎক্ষনিক ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের কাছে আপত্তি জানাই। ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমাকে আশ্বস্ত করেছেন বিষয়টি তিনি সুরাহা করে দিবেন।

 

৪নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী জুলহাস মিয়াও একইভাবে ক্ষুব্ধ। তিনি বলেন, সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কর্মসূচিতে কীভাবে কমিটি গঠন করা হয়! যদি সম্মেলন করার পরিবেশ না থাকে তবে অন্তত প্রত্যেক ওয়ার্ডের নেতাদের মতামতও নেয়া যেত। কিন্তু মন থেকে একটি কমিটি চাপিয়ে দিলেই ত হলো না।

 

 

 

তবে এ বিষয়ে বক্তাবলী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম জানান, বেশ কিছু ওয়ার্ডে সমস্যা হয়েছে, কমিটিতে তাদের আপত্তি রয়েছে। এসব ওয়ার্ডে পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেয়া হবে। সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ণ অনুষ্ঠানে কমিটি ঘোষণা করা কতটা সাংগঠনিক ও গঠতন্ত্রাতিক -এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কেউ আপত্তি না করলে কমিটি করা যেতে পারে।

 

এ বিষয়ে ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম শওকত আলী বলেন, বক্তাবলীর কোন ওয়ার্ডে আমি কমিটি গঠন করেছি-এমন প্রমাণ দিতে পারলে আমি নিজের পদ থেকে পদত্যাগ করবো। আমি কোন ওয়ার্ডে কাকে রাখতে হবে কাকে বাদ দিতে হবে তা-ও বলি নাই। ওয়ার্ডের নেতারাই এটা ঠিক করেছে।

 

 

কিন্তু সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কর্মসূচি কমিটি গঠন গঠনতন্ত্রবিরোধী বিক্ষুব্ধদের দাবি-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কমিটি গঠন করা হয় নাই। শুধুমাত্র ওয়ার্ডের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করা হয়েছে।

 

 

শওকত আলী আরো বলেন, ৪ ও ৬নং ওয়ার্ড নয়, ৮ ও ৯নং ওয়ার্ডেও সমস্যা আছে। কারো কারো আপত্তি আছে। এসব জায়গায় সাংগঠনিক প্রক্রিয়া-ই কমিটি গঠন করা হবে।

 

 

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com